সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ আজ ফ্যাসিবাদের কবলে পড়েছে। যারা আজ বাংলাদেশকে শাসন করছে, তাদের সঙ্গে জনগণের কোন সম্পৃক্ততা নেই, এরা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প তৈরি করে মেগা দুর্নীতি করে চলছে। আওয়ামী লীগ এখন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান নয়। তারা চরম ভাবে ব্যাংকক্রাপ্ট (ব্যাংক দুর্নীতি) হয়ে গেছে, তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাই সম্পূর্ণভাবে দুর্নীতিবাজ আমলাদের ওপরে, দুর্নীতিবাজ রাজকর্মচারীদের সঙ্গে আতাত করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বেনজির আর আজিজের জন্ম দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে রসাতলে যাচ্ছে। যে কারণে তাদের পাতানো নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের গিলন্ড এলাকার মুন্নু সিটিতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি ঢাকা বিভাগ আয়োজিত “গণতন্ত্র উত্তরণ, মত প্রকাশ, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ও খাল খনন কর্মসূচি: জিয়াউর রহমানের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার’২৪ এ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা, বহুদলীয় গণতান্ত্রিক নীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মানুষকে কথা বলার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, সংবাদপত্রকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন এবং এটাই ছিলো জিয়াউর রহমানের ক্যারিশমা। জিয়াউর রহমানের রাজনীতি এই দেশের মানুষের রাজনীতি, বিএনপি’র রাজনীতি এই দেশের মানুষের রাজনীতি। যে কারণে এই দেশের মানুষ বিএনপির রাজনীতি ভুলবে না, জিয়াউর রহমানকে ভুলবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়াউর রহমান খুবই অল্পসময়ের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনা করেছিলেন। দেশের চরম ক্রান্তিকাল ও কঠিন দুঃসময়ে তিনি দুইবার আর্বিভূত হয়েছিলেন। যখন দেশের মানুষ রাজনৈতিক ঘোষণার জন্য অপেক্ষায় ছিল, যেই ঘোষণার মধ্যদিয়ে তাদের লক্ষ্য স্বাধীনতা পাবে, কিন্তু দেশর মানুষ সেই ঘোষণা পায়নি। তাদের(আওয়ামী লীগ) সেইদিন ঘোষণা দেওয়া কথা থাকলেও দিতে পারেনি। তারা(আওয়ামী লীগ) সেইদিন পালিয়ে গিয়েছিল, অথবা পাকিস্তানী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্থন করেছিল। ২৬মার্চ রাতে জিয়াউর রহমানের সেই ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা আমি নিজ কানে শুনেছি। তিনি ওই সময় দেশের মানুষের স্বাধীনতার জন্য ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা কোন বিতর্কে যেতে চাই না। এই দেশের মানুষ জানে জিয়াউর রহমানই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষাণা করেছিলেন। এটা ধ্রুবসত্য। তিনিই বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। দেশের ধ্বংস হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে জিয়াউর রহমান টেনে তুলেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে বড় বড় মেগা প্রকল্পের অর্থায়ন করছে চায়না। এসব প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ অর্থ চয়না বাংলাদেশ সরকারকে দেয় এবং সরকার সেই প্রকল্পের কাজ করার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। আওয়ামী লীগ সরকারের মদদপুষ্ট একজন অথবা দুইজন ব্যক্তি ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ আনার জন্য শতকরা ৫ ভাগ কমিশন পায় এবং কাজ বন্টন করার পরে আবারও শতাকরা ৫ ভাগ কমিশন পাচ্ছে। চীন থেকে যে টাকা আনা হচ্ছে সেই টাকার কমিশন ভাগ বছাচ্ছে। আজকে প্রতিটি ক্ষেত্রে কমিশন ছাড়া তারা কোন কাজ করে না। সরকারের অন্যতম আর্থিক প্রতিষ্ঠান নগদ, এই নগদে লেনদেন করলে প্রতি এক টাকায় ৫ পয়সা কমিশন পায়, এই কমিশন কোথায় যায়। এই কমিশন বিশেষ কোন ব্যক্তির কাছে যায়, দেশের বাহিরে যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘সামনে আমাদের কঠিন সময় অপেক্ষা করছে। এই ফ্যাসিবাদ সরকার সমস্ত রাষ্ট্রতন্ত্র দখল করে রেখেছে। দেশের অর্থনীতকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। অবশ্য এটা আওয়ামী লীগের চরিত্র। যখনই আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতায় আসে এতো বেশি দুর্নীতি আর লুটপাট করে যে তখন অর্থনীতি আর টিকে থাকতে পারে না। গতকাল সোমবার একটা ফোরামে নোয়াবের একটা সেমিনারে দেশের সুনামধন্য অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা (আওয়ামী লীগ) তা স্বীকার করতে চায় না, সবসময় বলে অর্থনীতি ভালো আছে। মেগা প্রকল্প দিয়ে মেগা দুর্নীতির ব্যবস্থা করছে আওয়ামী লীগ।
এসময় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক ড. তাজমেরী ইসলাম, অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি আফরোজা খান রিতা, সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবিরসহ ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।