আওয়ামী লীগ এখনো ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখছে না

Awami League

জুমবাংলা ডেস্ক : ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো আশা এখনও দেখছে না আওয়ামী লীগ। এখন পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শই দিয়ে যাচ্ছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

Awami League

তবে জানুয়ারির পর দলের নেতাকর্মীদের রাজনীতিমুখী হওয়ার নির্দেশ আসতে পারে বলে জানা গেছে। একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখনও পরিস্থিতি দলের নেতাকর্মীদের অনুকুলে আসার মতো হয়নি। মারাত্মক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নেতাকর্মীদের চলতে হচ্ছে।

ওই নেতারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চলছে। সারা দেশে নেতাকর্মীদের ওপর নজিরবিহীন অত্যাচার-নির্যাতন, দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না। স্বাভাবিক জীবন তো দূরের কথা, প্রকাশ্যে চলাফেরা করতেও পারছেন না। প্রকাশ্যে গেলেই গ্রেপ্তার হয়ে যাচ্ছে, আবার কাউকে কাউকে গ্রেপ্তারের ভয় দেখানো হচ্ছে। মামলা না থাকলেও গ্রেপ্তারের ভয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী।

তারা আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হয়েছে। আবার যাদের নামে মামলা নেই তাদের গ্রেপ্তার করে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে গণগ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে আক্রমণ করছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের এক পর্যায়ে সৃষ্ট অভ্যুত্থানে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। পদত্যাগের পর পরই দ্রুত দেশে ছেড়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি। বর্তমানে শেখ হাসিনা সেখানেই অবস্থান করছেন। ওই দিনই সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও দ্রুত আত্মগোপনে চলে যান। এর মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকেই বিভিন্ন সময় দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমান।

নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ এবং এখন পর্যন্ত একই অবস্থায় রয়েছে দলটি। সরকার পতনের পর দলের সভাপতি শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ের অনেক নেতা, সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। শেখ হাসিনার নামে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ’ মামলা হয়েছে। শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের কারো কারো নামে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। যেসব নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে তাদের অর্ধিকাংশের একাধিক, কারো কারো নামে চারটি-পাঁচটি করেও মামলা হয়েছে। এখনও অনেকের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে দলটির নেতারা জানান।

এই পরিস্থিতিতে মাঠের রাজনীতিতে আসা বা রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা এখনও তৈরি হয়নি বলে দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন। দ্রুতই পরিস্থিতি তাদের জন্য স্বাভাবিক হয়ে আসবে এমন কোনো সম্ভাবনাও তারা দেখছেন না। ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শ ছাড়া এই মুহূর্তে কর্মীদের কোনো আশা দিতে পারছেন না। তবে দলের নীতিনির্ধারকরা নেতাকর্মীদের আস্তে আস্তে রাজনীতিমুখী করার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে করণীয় কী হবে সেটি ভাবা হচ্ছে। জানুয়ারির পর এ ব্যাপারে কিছু দিক নির্দেশনা আসতে পারে বলে দলটির নেতাদের কেউ কেউ জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মধ্যম পর্যায়ের এক নেতা বলেন, নেতাকর্মীরা এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। হামলা হচ্ছে, হামলা হচ্ছে। গ্রেপ্তার করে মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অমানুষিক নির্যাতন চলছে। নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা চলছে।

Honor X5B Plus: দুর্দান্ত ফিচারের সঙ্গে AI ক্যামেরার সেরা স্মার্টফোন

অপর এক নেতা বলেন, দল থেকে এখনও নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো আশা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নেতাকর্মীদের কীভাবে রাজনীতিমুখী করা যায়, সেই চিন্তাভাবনা চলছে। জানুয়ারির পর এ ব্যাপারে নির্দেশনা আসতে পারে। সূত্র : বাংলা নিউজ ২৪