আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাধারণত নতুন কিছু কিনলে পুরোনো হওয়ার পর তা আবার বিক্রি করতে গেলে দাম পাওয়া যায় অনেক কম। তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে বিষয়টি একেবারে আলাদা! সেখানে পুরাতন গাড়ি বিক্রি করা যায় কেনা দামের চেয়ে ৬৫ শতাংশ বেশি দামে।
পাকিস্তানে যাদের পুরোনো গাড়ি আছে, তারা খুব সহজেই কেনা দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে গাড়িগুলো পুনরায় বিক্রি করতে পারেন। সেখানে ৫ বছর আগে ২০ লাখ রুপিতে কেনা ‘টয়োটা করলা’ গাড়ি বর্তমান ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ বাজারে ৩২ লাখ রুপিতে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হওয়ার কারণ কী?
জানা গেছে, পাকিস্তান সরকারের আমদানিবিমুখ নীতি, মুদ্রার দরপতন এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে পাকিস্তানে গাড়ির মূল্য বেড়েছে , যা ব্যবহৃত গাড়ির বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। কিছু মধ্যস্বত্বভোগী প্রচুর পরিমাণে নতুন মোটরগাড়ি কিনে একসময় সেগুলো উচ্চদামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
পাকিস্তান এশিয়ার দ্রুততম মুদ্রাস্ফীতির দেশগুলোর একটি। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২২ বছরে পাকিস্তানি রুপির দাম কমেছে প্রায় ৩০০ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশি টাকার চেয়েও কম মূল্য পাকিস্তানি রুপির। বাংলাদেশি ১ টাকা সমান পাকিস্তানি ২.১৮ রুপি!
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, ২০১৯ সালে ‘ফাউন্ডেশন সিকিউরিটিজ প্রাইভেট’-এর বিক্রয় বিভাগের প্রধান মুহম্মদ রামীজ ‘সুজুকি মোটর করপোরেশন’-এর আউটলেট থেকে একটি ব্র্যান্ড নিউ ‘হ্যাচব্যাক’ গাড়ি কেনেন। ৩ বছর ধরে প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার চালানোর পর সম্প্রতি রামীজ গাড়িটি কেনা দামের ৬৫ শতাংশের বেশি দামে বিক্রি করেছেন।
বর্তমানে করাচিতে ইউপি মোড় বাজারে প্রতি রোববার ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ গাড়ির কেনাবেচা হয়। দুই হাজার গাড়ি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গ্রাউন্ড ফ্লোরে গাড়ি রাখার টিকিট নিতে বিক্রেতাদের ৩০০ রুপি গুনতে হয়। এ ছাড়া কোনো কোনো ব্যবসায়ী আশপাশের রাস্তায়ও এ দরদামের কাজ চালিয়ে যান। পাঁচ বছর ধরে পাকিস্তানি ক্রেতারা ৯০ শতাংশ যানবাহন ক্রয়ে ‘অতিরিক্ত মূল্য’ পরিশোধ করেছেন। যার মোট মূল্য প্রায় ১৭০ বিলিয়ন রুপি।
দঙ্গলের ছোট্ট ববিতা আজ পুরুষের ক্রাশ, টেক্কা দিচ্ছেন অভিনেত্রীদেরও
এদিকে ২০০৪ সাল থেকে দেশটিতে মাত্র ২ লাখ ২০ হাজারের মতো গাড়ি বিক্রি হয়েছে। জনগণের জীবনযাত্রার মান না বাড়ায় দেশটির বাজারও সীমিত। এসব কারণে এখানে বড় কারখানা স্থাপন করা অনেকটাই অলাভজনক। বিকল্প হিসেবে দেশের কিছু কোম্পানি যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে সেগুলো স্থানীয়ভাবে এসেম্বল করে গাড়ি তৈরি করে। আর ক্রেতাদের গাড়ি ডেলিভারি পেতে সময় লেগে যায় এক বছরের মতো। তাই যেসব ক্রেতা সময় নষ্ট করতে চান না, তাদের আগ্রহ থাকে সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির প্রতি। তবে গাড়ির দামের অদ্ভুত এই প্রবণতা সাধারণত যেসব দেশে মুদ্রার মান নিয়মিত কমতে থাকে, সেসব দেশেই বেশি দেখা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।