বিনোদন ডেস্ক : শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘১৯৭১ : সেই সব দিন’ সিনেমাটি। মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত এই ছবিটি শুধু রণাঙ্গনের চিত্রই নয়, এর বাইরের অদেখা একাত্তরের দুর্দশা ও বর্বরতাকেও দেখিয়েছে। সিনেমাটি ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচনা তৈরি করেছে। সিনেমায় যে আবেগ তৈরি হয়েছে, তাতে চোখে অজান্তেই পানি চলে আসছে দর্শকদের।
এমন বেশ কিছু ঘটনা দেখা গেল, শোনা গেল। দর্শকরা সিনেমাটি দেখছেন, মুগ্ধ হচ্ছেন। প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন নানা মাধ্যমে। একটি প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, সিনেমাটি ঢাকায় দেখতে এসেছেন এক তরুণ কুমিল্লা থেকে। আরেক ভিডিওতে দেখা যায়, পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি বলছেন, ‘আমি হার্টফেইল করে যাচ্ছিলাম। আমি জাস্ট স্পিচলেস।’
ছবিটি দেখেছেন মডেল আনিলা হক হৃদি। ছবি দেখতে দেখতে শেষ মুহূর্তে অঝোরে ঝরেছে চোখের পানি। এই ভিডিও ধারণ করেছেন সোনিয়া হোসেন। যিনি সিনেমার ‘ইয়ে শাম’ গানে পারফরম করেছেন। সামিনা ইসলামের বাবা সাইফুল ইসলাম সিনেমা দেখার পুরোটা সময় চোখ ভিজিয়েছেন। সে অভিজ্ঞতা সামিনা ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, “একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ‘১৯৭১ : সেই সব দিন’ চলচ্চিত্রটি দেখছেন। পুরোটা সময় ধরে তিনি কাঁদছেন, হাসছেন।
আমি ইচ্ছে করে রুমাল, টিস্যু দিইনি। কখনো কখনো অনুভূতি বয়ে যেতে দিতে হয়। তিনি কেঁদে কেঁদে তার গাল, তারপর দাড়ি ভিজিয়েছেন, এখন গলা ভিজিয়ে তার বুকের কাছের পাঞ্জাবি ভেজাচ্ছেন। আমিও ঘোলা চোখ নিয়ে পুরোটা সময় জুড়ে তার মুখ দেখে যাচ্ছি। সব কাজ ফেলে তার মুখ দেখব বলে বসে রয়েছে। কী চমৎকার লাগছে আব্বুর মুখ দেখতে, আহা! বীরের মুখ।”
সিরাজগঞ্জের রুটস সিনেক্লাবে সিনেমা দেখছেন মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম। পুরোটা সময় আবেগে ভেসেছেন। ভিজিয়েছেন চোখ।
জান্নাতুন নুর দিশা নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দেখতে দেখতে বারবার চোখ ভিজেছে আমার, আমার বাম পাশে ছিল একজন কিশোরী, ডানে একজন বৃদ্ধা। দুজনেই কাঁদছিল বুঝতে পারছিলাম। সিনেমায় রঞ্জু (সজল) যখন মিলিটারি ক্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে প্রবল সাহসিকতায় বেরিয়ে আসছিল, সে দৃশ্য অনেক দিন চোখে লেগে থাকবে। সিনেমায় শব্দের নৈপুণ্য আর সিনেমাটোগ্রাফিও যথেষ্ট ভালো।’
দিশা বলেন, ‘এই সিনেমার আরেকটি বিষয় খুব সুন্দর। প্রেমকে খুব নির্মল আর হৃদয়গ্রাহী করে গল্পে গাঁথা হয়েছে। আর শুধু কি প্রেম? বরং গল্পের সমস্তটাই আবেগিক অনুভবে দর্শককে যুক্ত করেছে ভীষণভাবে। এখানেই ডিরেক্টর হৃদি হকের সফলতা! শেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দিনটি যখন দেখাল সিনেমায়, স্মৃতিসৌধের সাথে লাল-সবুজ পতাকা তখন স্ক্রিনে, বাঙালি হওয়ার গৌরবে ভরে আছে আমার মন। তখন চোখে আমার জল।’
আসাদুজ্জামান সবুজ বলছেন, “মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলা ও নির্মাণ করাও একখান সিনেমা। সে এক কঠিন পথ, তার জন্য দরকার প্রেম, সবার একাত্মবোধ ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ ছবিতে তা ছিল। লাল-সবুজের মানচিত্র যত দিন থাকবে ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ তত দিন থাকবে। পুরো সময় জুড়ে বেশ উপভোগ করেছি।”
চিত্রনাট্যকার রুম্মান রশিদও ছবি দেখে কেঁদেছেন। সানগ্লাস দিয়ে চোখ ঢেকেছেন। বলছিলেন, ‘আমি হৃদয় দিয়ে এই সিনেমা অনুভব করেছি। আমার চোখে পানি। আমি সেই পানি দেখাতে চাচ্ছি না।’
শহীদ রায়হান বলছেন, “বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় ৭০ ভাগ মানুষের জন্ম মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে, তাই ১৯৭১ সালে এ দেশের মানুষ কী অবস্থার মধ্যে জীবন কাটিয়েছেন, বেঁচে ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তা অনুধাবন করতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে হলে এসে সিনেমাটি দেখুন। মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতা আমাদের জাতির জন্য কত মূল্যবান, কতটা গর্বের সেটা যে কেউ বুঝতে পারবেন অনায়াসে। আসুন সবাই মিলে নতুন প্রজন্মকে উজ্জীবিত করি, উৎসাহিত করি ‘১৯৭১ : সেই সব দিন’ চলচ্চিত্র দেখতে।”
সিফাত ফারহানা লিখেছেন, ‘একদম ছোটবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। মনপ্রাণ ভরে এই ছবিটা দেখলাম। সব কিছুই মনে হয়েছিল পারফেক্ট। কখন সময় কেটে গেছে একটুও বুঝতে পারিনি। সবাই খুব মনোযোগ দিয়ে ছবিটি দেখছিল। তারপর আমার মনে হচ্ছিল, যদি আরো বেশি হতো, আরো অনেকক্ষণ হতো, আরো ভালো হতো।’
সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে প্রয়াত নন্দিত অভিনেতা ও নাট্যকার ড. ইনামুল হকের গল্প অবলম্বনে। এটি পরিচালনা করেছেন তারই বড় মেয়ে অভিনেত্রী ও নির্মাতা হৃদি হক।
শ্যুটিংয়ের সময় করণ জোহর আমার গোপন জায়গায় হাত দিত : আনুশকা শর্মা
এতে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস, অভিনেতা সজল, তারিন, লিটু আনাম, হৃদি হক, সানজিদা প্রীতি, মামুনুর রশীদ, আবুল হায়াত, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, সাজু খাদেমসহ অনেকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।