জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় ঢাকা বারের আইনজীবীদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজিরার সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সৃষ্টি হয়। হাজতে নেওয়ার পথে পুলিশের এক সদস্যের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে কামরুল ইসলাম বলেন, “এই তুমি সামনে যাও, তুমি বেশি লাফাচ্ছ।”

সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে তাকে আদালতে আনা হয়। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিহিত অবস্থায় লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। পুলিশের ঘন নিরাপত্তায় তাকে আদালতের অষ্টম তলায় নেওয়া হয়।
শুনানির সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, কামরুল ইসলাম এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত এবং তিনি ইন্ধনদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। তাই তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন। অন্যদিকে, আসামি পক্ষের আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী ও নসিম চৌধুরী জানান, এই মামলা ২০২৪ সালের ৪ আগস্টের পুরোনো মামলা এবং তখন থেকেই কামরুল ইসলাম কারাগারে ছিলেন।
বিচারকের উদ্দেশে কামরুল ইসলাম বলেন, “আমি তো আগেই গ্রেপ্তার হয়ে আছি, আবার কেন গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে?” তবে শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল ইসলাম তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।
হাজতখানায় নেওয়ার সময় কামরুল ইসলামকে ধীরে হাঁটতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে পাশে থাকা পুলিশ সদস্য বারবার বাঁশিতে ফুঁ দিলে তিনি বিরক্ত হয়ে বলেন, “তুমি সামনে যাও, তুমি বেশি লাফাচ্ছ।” এরপর পুলিশ সদস্যটি সরে যান, এবং পুলিশের সহায়তায় তিনি লাঠিতে ভর দিয়ে হাজতে প্রবেশ করেন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
কামরুল ইসলামের আইনজীবী আফতাব মাহমুদ চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত মোট ৩০টি মামলায় তার মক্কেলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায় একদল ব্যক্তি। তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগান দেয়। হামলায় আইনজীবী মোহাম্মদ আলীসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে ৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামীপন্থী ১৪৪ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৮ নভেম্বর রাতে রাজধানীর উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টর থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



