জুম-বাংলা ডেস্ক : ডিবি কার্যালয়ে আর কোনো আয়নাঘর, ভাতের হোটেল থাকবে না বলে জানিয়েছেন ডিএমপির পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক। ডিবিপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর ‘মিট দ্য প্রেসে’ এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ডিবিপ্রধান বলেন, ডিবি অফিসের নাম শুনলে আর কেউ আতঙ্কিত হবে না।
ডিবিকে শুধু অপরাধীরাই ভয় পাবে। যত দিন ডিবিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করব ন্যায়-নীতি, পেশাদারি ও সততার সঙ্গে ভুক্তভোগী এবং অসহায়দের ভরসাস্থল করা হবে ডিবি অফিসকে।
সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারসহ অনেক পুলিশ কর্মকর্তারা আসামি হয়েছেন। তাঁরা এখনো পলাতক।
এসব কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত তাঁদের আমরা আইনের আওতায় আনব। যাঁরা পলাতক তাঁদের খুঁজে বের করা হবে।’
ঢালাও মামলা ও ভুয়া মামলায় গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এজাহারভুক্ত যাঁরা আসামি আমরা তদন্ত করে শুধু তাঁদেরই গ্রেপ্তার করছি।’ এমপি আনার হত্যা মামলাসহ আলোচিত হত্যা মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রেজাউল করিম মল্লিক জানান, আলোচিত সব মামলার তদন্ত শেষ করা হবে।
পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আরো বলেন, ডিবি অফিসে কোনো ধরনের অন্যায় অবিচারকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ডিবি কার্যালয়ে চৌকস দক্ষ এই পেশাদার কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিবিকে পুনর্গঠন ও হারানো ভাবমূর্তি ফেরাতে ও উজ্জ্বল করতে যা যা করা দরকার তা করা হচ্ছে।
ডিবিপ্রধান বলেন, প্রচলিত অপরাধের পাশাপাশি কিশোর অপরাধ, অনলাইন জুয়া, সাইবার ক্রাইম, ইকোনমিক ক্রাইম, সোশ্যাল মিডিয়া বুলিং, গুজবসহ নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জকে ডিবি সাহসিকতা ও পেশাদারির সঙ্গে মোকাবেলা করে চলেছে।
তিনি বলেন, ডিবিতে কর্মরত পুলিশ সদস্যরা রাত-দিন নিরলস পরিশ্রম করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণের পাশাপাশি ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা অফিসে আর কোনো আয়নাঘর থাকবে না। ডিবির কলঙ্কিত অধ্যায় শেষ করে সেটিকে পবিত্র করা হচ্ছে; যেখানে মানুষ ন্যায়বিচার পাবে। এখানে কোনো নায়ক-নায়িকা বা সেলিব্রেটিদের সময় কাটানোর জায়গা হবে না। থাকবে না কোনো ভাতের হোটেল। আসামি যেই-ই হোক না কেন, সে ন্যায়বিচার পাবে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরও নির্যাতন করা হবে না। ডিবি অফিসের নাম শুনলে আর কেউ আতঙ্কিত হবে না, আমাদের শুধু অপরাধীরাই ভয় পাবে।’
পুলিশ-সাংবাদিক সহযোদ্ধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারলে দেশে অন্যায়-অবিচার-দুর্নীতি অনেকাংশেই কমে যাবে। ডিবিকে জনগণের আস্থার জায়গা হিসেবে তৈরিতে আমি সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি।’
মিট দ্য প্রেসে তিনি সবাইকে আইন ও বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের সবার প্রিয় শহর ঢাকা। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজে কেউ অংশ নেবেন না। ডিবি সব সময় আপনাদের পাশে আছে। একই সঙ্গে আমরা আপনাদেরও সহযোগিতা কামনা করি। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ পেশাদারি দিয়ে আপনাদের নিরাপত্তা ও ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।’
রাজধানীবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘৮ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পূজা উপলক্ষে সবাইকে শারদীয় অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারা দেশের মতো ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায়ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা শহরের প্রতিটি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা ও পূজার উৎসবে পুলিশের পাশাপাশি ডিবির টিম সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। যাতে উৎসবে মেতে উঠতে পারে নগরবাসী। আপনাদের (নগরবাসী) প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ, কোনো ধরনের অপরাধমূলক কাজে কেউ যেন অংশগ্রহণ না করেন। সবাই আইন ও বিধি মেনে চলবেন। ডিবি পুলিশ সব সময় আপনাদের পাশে আছে। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন।’
এই অনুষ্ঠানে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভুঁইয়া, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ বিপিএম, উপপুলিশ কমিশনাররাসহ গোয়েন্দা বিভাগের অন্য কর্মকর্তারা এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।