আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যাতে ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের পরিবর্তে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট যে নতুন মসজিদ স্থাপনার নির্দেশ দিয়েছেন, সেটি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য ‘তাজমহলের চেয়েও বেশি সুন্দর’ হবে বলে অঙ্গীকার করছেন নির্মাতারা।
ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন নামে একটি ট্রাস্ট এই মসজিদ নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছে। তারা জানিয়েছে, এটি হবে ভারতের প্রথম মসজিদ, যেটিতে পাঁচটি মিনার থাকবে। দেশের সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর মধ্যে এটি হবে একটি।
মূলত মোঘল আমলের পর ভারতে এত বড় আকারের আর কোনও মসজিদ নির্মিত হয়নি, এমনও দাবি করছেন ওই কমিটির নেতৃস্থানীয়রা।
মসজিদ স্থাপনা কমিটির দায়িত্ব পাওয়া আরাফত শেইখ বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, বিশ্বের বৃহত্তম কোরআন– যেটির উচ্চতা হবে প্রায় ২১ ফুট আর চওড়া ৩৬ ফুট– সেটিও এই মসজিদে রাখার পরিকল্পনা আছে আমাদের।
সৌদিতে পবিত্র নগরী মক্কায় কাবার বর্তমান ইমাম শায়খ ড. আবদুর রহমান আল-সুদাইস ভারতে এসে এই নতুন মসজিদ স্থাপনের শিলান্যাস করবেন বলেও জানা গেছে। ইতোমধ্যেই উদ্যোক্তরা মক্কার ইমামের কাছ থেকে সম্মতি পেয়ে গেছেন বলে জানাচ্ছেন তারা। এখন শুধু শিলান্যাসের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষা।
আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরে ‘রামলালা’র বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান, যাকে কেন্দ্র করে ভারতজুড়ে সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। অযোধ্যায় মসজিদ স্থাপনা কমিটি চাইছে এই উপলক্ষটি কাজে লাগিয়ে নতুন মসজিদটি সম্পর্কেও ভারতীয়রা জানুন এবং মসজিদ স্থাপনার জন্য ভারতের সব ধর্মের মানুষই অর্থ সাহায্য করুন।
আরাফত শেইখ আরও বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে অযোধ্যা নগরীকে পুরো ঢেলে সাজানো হয়েছে। নতুন রাস্তা, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন সব তৈরি হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য হলো যে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী বা পর্যটক অযোধ্যায় রামমন্দির দর্শন করতে আসবেন। তারা যেন অযোধ্যার মসজিদটিও ঘুরে যান।
সম্পূর্ণ নতুন করে মসজিদটির স্থাপত্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। নতুন নকশা করার দায়িত্ব পেয়েছেন পুনের আর্কিটেক্ট ইমরান শেইখ। আগামী মাসের মধ্যেই নকশা তৈরি হয়ে যাবে। তারপর ২০২৪ সালে রমজান মাসের পর পুরোদমে শুরু হয়ে যাবে মসজিদ তৈরির কাজ।
তবে এই মসজিদ তৈরির জন্য উত্তর প্রদেশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে রাজ্য সরকার যেখানে জমি বরাদ্দ করেছে, সেটা মূল অযোধ্যা নগরীর কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ধান্নিপুর গ্রামে।
শহরের রাস্তাঘাট যেহেতু এখন একেবারে ঝাঁ-চকচকে হয়ে উঠেছে, তাই এই সামান্য দূরত্ব যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না বলে মনে করছে ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশন।
নতুন কমিটি মসজিদটির নামকরণেও পরিবর্তন এনেছে। আগে ঠিক হয়েছিল এর নাম হবে ‘মসজিদ-ই-অযোধ্যা’। কিন্তু এখন স্থির করা হয়েছে ইসলামের নবীর নামানুসারে এই নতুন মসজিদের নাম হবে ‘মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ মসজিদ’।
অভিনব স্থাপত্য, সুবিশাল আকার, চমকপ্রদ ওয়াটার অ্যান্ড লাইট শোর মাধ্যমে এই মসজিদকে শুধু ভারতীয় মুসলিমদের জন্যই নয়, দেশ-বিদেশের সব ধর্মের মানুষের জন্যই একটি দারুণ আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।