আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরান, সৌদি আরব, ইসরায়েল প্রত্যেকেরই অপরের সম্পর্কে রয়েছে গভীর সন্দেহ এবং তিক্ততা। এর মধ্যে ইরান আর সৌদি আরব হচ্ছে শিয়া আর সুন্নি মুসলিমদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং তারা সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ফিলিস্তিনে তাদের মিত্রদের দিয়ে পেছন থেকে প্রক্সি যুদ্ধ চালাচ্ছে।
দুটি দেশই আবার ইসরায়েলের সমালোচক, এবং কারোরই ইসরায়েলের সাথে কোন আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু ইরানের যে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি – তাকে হুমকি বলে মনে করে ইসরায়েল আর সৌদি আরব। ইসরায়েল এবং সৌদি আরব আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র – যে যুক্তরাষ্ট্র আবার ইরানের প্রধান শত্রু।
মূলত এবার সৌদি আরবের তেলক্ষেত্রে হামলার পর অস্থির হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি। হুতি বিদ্রোহীরা এর দায় নিলেও ইরানকে দায়ী মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব। এ নিয়ে চলছে হুমকি-পাল্টা হুমকি। এমতাবস্থায় চলুন দেখে নেওয়া যাক সামরিক শক্তিমত্তা কার অবস্থান কোথায়-
সৌদি আরব
ব্যয়ের দিক থেকে সৌদি আরবের অবস্থান গোটা বিশ্বে তৃতীয় আর উপসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে। সামরিক খাতে সৌদি ২০১৮ সালে ৬ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার খরচ করেছে। বিশ্বের সামরিক যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বড় ক্রেতাও তারা। বর্তমানে সৌদির মোট সামরিক সদস্য ২ লাখ ৩০ হাজার। দেশটির রয়েছে ৮৪৮টি যুদ্ধবিমান, ২৫৪টি হেলিকপ্টার, ১০৬২টি ট্যাংক ও ৫৫টি যুদ্ধ জাহাজ। তবে দেশটির কোনো সাবমেরিন নেই।
ইরান
সামরিক খাতে গত বছর ইরানের ব্যয় ছিল ১ হাজার ৩২০ কোটি ডলার, যা ২০১৭ সালের তুলনায় সাড়ে নয় ভাগ কম। অবরোধ আর অর্থনৈতিক মন্দায় গত এক দশকে দেশটির অস্ত্র আমদানির পরিমাণও কমেছে। ২০০৯-১৮ সালের মধ্যে তা্দের আমদানিকৃত অস্ত্রের পরিমাণ সৌদি আরবের মাত্র সাড়ে তিনভাগ। বর্তমানে দেশটির সামরিক সদস্য আট লাখ ৭৩ হাজার৷ এছাড়া ইরান ৫০৯টি যুদ্ধ বিমান, ১৫৬টি হেলিকপ্টার, ১৬৩৪টি ট্যাংক, ৩৯৮টি নৌযান ও ৩৪টি সাবমেরিনের মালিক।
ইসরায়েল
ইসরায়েল ২০১৮ সালে সামরিক খাতে এক হাজার ৫৯৫ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। দেশটি নিজেই সামরিক অস্ত্র তৈরি করে, তাই তেমন একটা আমদানি করতে হয় না। গত বছর সর্বসাকুল্যে ১০৩ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র আর জার্মানির কাছ থেকে৷ দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৬ লাখ ১৫ হাজার। তাদের বহরে আছে ৫৯৫টি যুদ্ধবিমান, ১৪৬টি হেলিকপ্টার, ২৭৬০টি ট্যাংক, ৬টি সাবমেরিন।
তুরস্ক
২০১৮ সালে তুরস্কের সামরিক ব্যয়ের পরিমাণ ছিলো ১ হাজার ৮৯৭ কোটি ডলার। এর মধ্যে ১১১ কোটি ডলার খরচ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, স্পেন, ইতালিসহ ৬টি দেশের কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয়ে। তুরস্কের সামরিক বাহিনীর সদস্য ৭ লাখ ৩৫ হাজার৷ যুদ্ধবিমান আছে ১০৬৭টি। আছে ৪৯২টি হেলিকপ্টার, ৩২০০ ট্যাংক, ১৯৪টি যুদ্ধজাহাজ, ১২টি সাবমেরিন।
কাতার
কাতারের সবশেষ সামরিক ব্যয়ের হিসাবটি ২০১০ সালের। সে বছর তাদের বাজেট ছিল ২১৭ কোটি ডলারের। দেশটির সামরিক সদস্য সংখ্যা ১২ হাজার। আছে ১০০টি এয়ারক্রাফট, ৪২টি হেলিকপ্টার, ৯৫টি ট্যাংক, ৮০টি যুদ্ধজাহাজ।
ইরাক
গেল বছর সামরিক বাহিনীর পেছনে প্রায় ৬৩২ কোটি ডলার খরচ করেছে ইরাক। এর মধ্যে ১৫৬ কোটি ডলার ব্যয় করেছে অস্ত্র ক্রয়ে। তাদের আছে ১ লাখ ৬৫ হাজার সৈন্য, ৩২৭টি যুদ্ধবিমান, ১৭৯টি হেলিকপ্টার, ৩০৯টি ট্যাংক ও ৬০টি যুদ্ধজাহাজ।
যুক্তরাষ্ট্র
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাজেট ছিল ৬৪ হাজার ৮৮০ কোটি ডলারের। প্রায় সাড়ে ২১ লাখ সামরিক সদস্যের বিশাল বাহিনী তাদের। ১৩,৩৯৮টি যুদ্ধবিমান, ৫৭৬০টি হেলিকপ্টার, ৬২৮৭টি ট্যাংক, ৪১৫টি যুদ্ধজাহাজ, ৬৮টি সাবমেরিন আছে এই পরাশক্তির বহরে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।