লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাবার মৃত্যুর আগেই যদি কেউ প্রতারণার মাধ্যমে তার সম্পত্তির দলিল করে নেয়, তখন উত্তরাধিকার হিসেবে আপনি কী করতে পারেন—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পি. এম. সিরাজুল ইসলাম সিরাজ প্রামাণিক।
তিনি বলেন, অনেক সময় বাবাকে ভয় দেখিয়ে, ভুল বুঝিয়ে কিংবা তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে জমির দলিল রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে মানসিক ভারসাম্যহীনতা বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা অবস্থায়ও দলিল নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
কীভাবে বুঝবেন প্রতারণা হয়েছে?
যদি দেখা যায় আপনার বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ ছিলেন, এবং টিপসই বা স্বাক্ষর নেওয়ার সক্ষমতা না থাকা সত্ত্বেও দলিল সম্পাদিত হয়েছে;
অথবা, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন;
তাহলে এটি প্রতারণার প্রমাণ হতে পারে।
প্রতিকার পাওয়ার উপায় কী?
এই অবস্থায় আপনি নিচের দুটি উপায়ে আইনি প্রতিকার নিতে পারেন:
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ অনুযায়ী দলিল বাতিলের মামলা করা।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন অনুযায়ী ফৌজদারি আদালতে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা।
কী কী প্রমাণ লাগবে?
আপনার মামলাটি শক্তিশালী করতে নিম্নলিখিত প্রমাণ উপস্থাপন করা দরকার:
বাবার পূর্বের দলিলের স্বাক্ষরের কপি
চাকরির নথিপত্রে থাকা স্বাক্ষরের নমুনা
ব্যাংক, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজে করা স্বাক্ষর
চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র (যদি তিনি অসুস্থ ছিলেন)
প্রতিবেশী বা প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য
এইসব তথ্য ও প্রমাণাদি আদালতে উপস্থাপন করে আপনি প্রতারণামূলক দলিল বাতিলের আদেশ আদায় করতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা
যদি আদালতে প্রমাণ হয় যে—
আপনার বাবা সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন,
তিনি স্বেচ্ছায় দলিলে স্বাক্ষর করেছেন,
এবং দলিলটি যথাযথভাবে রেজিস্ট্রি হয়েছে—
তাহলে সেটিকে প্রতারণা বলা যাবে না। সেক্ষেত্রে দলিল বৈধ বিবেচিত হবে এবং আপনি আইনি প্রতিকার পাবেন না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।