জুমবাংলা ডেস্ক : জাহাজ থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই দৌড়ে গিয়ে চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আতিক উল্লাহকে জড়িয়ে ধরে তার দুই মেয়ে ইয়াশরা ও উনাইজা। দীর্ঘ দুইমাস অপেক্ষার পর ফিরেছে তাদের বাবা। তাই বাবাকে গ্রহণ করতে আগেই চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে উপস্থিত হয় দুই বোন।
বাবাকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি তারা। এ সময় আতিক উল্লাহ খানের বড় মেয়ে ইয়াশরা বলতে থাকে, ‘বাবার জন্য পুরো ঘর খালি ছিল। ঈদটাও ভালোভাবে কাটাতে পারিনি। ঘুমোতে পারিনি। কখন বাবা আসবে, বাবাকে দেখতে পাব; মায়ের কাছে সবসময় এসবই জিজ্ঞেস করতাম। আজ ঠিকই বাবার কাছে। বাবার পাশে। সামনে পরীক্ষা আছে, সেগুলো শেষ করে বাবাকে নিয়ে বেড়াবো আর ঘুরবো।’
ক্যাপ্টেন আতিক উল্লাহ খান বলেন, ‘বিভৎস দিন থেকে আলোর দিনে ফিরেছি। দুঃসহ সেই স্মৃতির কথা আর মনে করতে চাই না। ট্রমা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। সবাই দোয়া করবেন। দুই সন্তানকে কাছে পেলাম। বাসায় আরেক সন্তান কান্না করছে। তার কাছে ফিরতে হবে।’
মঙ্গলবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি কনটেইনার টার্মিনালে নোঙর করে লাইটারেজ জাহাজ এমভি জাহান মণি-৩। তিনটি টাগবোটের সহায়তায় জাহাজটি এনসিটি-১ জেটিতে ভেড়ানো হয়। এরপর জেটির সঙ্গে যুক্ত করা হয় ভ্রাম্যমাণ সিঁড়ি। সোয়া ৪টার দিকে জাহাজ থেকে একে একে নামেন নাবিকরা। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
এর আগে, বেলা ১২টার দিকে নতুন নাবিকদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর শেষে জাহাজটিতে কুতুবদিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দর জেটির উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে কুতুবদিয়ায় বঙ্গোপসাগরে নোঙর করে এমভি আবদুল্লাহ। একইদিন লাইটারেজ জাহাজ এমভি জাহান মণি-৩ নতুন ২৩ নাবিক দল নিয়ে কুতুবদিয়ার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছাড়ে।
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর তারা জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যায়। ৩১ দিন জিম্মি থাকার পর ১৪ এপ্রিল ভোররাতে জাহাজটি জলদস্যু মুক্ত হয়। এ সময় ৬৫ জন জলদস্যু জাহাজ থেকে বোটে নেমে যায়।
মুক্তির পর জাহাজটি দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেয়। ২১ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আল হারমিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে জাহাজটি। জাহাজটিতে থাকা ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা সেখানে খালাস করা হয়। পরবর্তীতে আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে ৫৬ হাজার মেট্রিক টন চুনা পাথর লোড করা হয়। এসব পণ্য নিয়ে দেশের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।