জুমবাংলা ডেস্ক : ‘সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো ছেলের। কোনো দিন একবেলা আবার কোনো দিন দুইবেলা খেয়ে থাকতে হতো তাদের। কোনোভাবেই এই বাজারে সংসার চালাতে পারছিল না। সংসারে তীব্র অভাবের কারণে ছেলে আত্মহত্যা করেছে।’ অভাবের তাড়নায় জামালপুর সদর উপজেলায় মো. আলী আকবর (৩৭) নামে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছেন।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পৌর শহরের রামনগর এলাকায় নিজ বাড়ির বারান্দা থেকে তার ঝুলন্ত লাশটি উদ্ধার করা হয়। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার দেওয়া দুই কক্ষের একটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। নিহত আকবরের বাবা বাদল মিয়া ছেলের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে উপর্যুক্ত কথাগুলো বলেছেন।
একই কথা বলেছেন নিহত আলী আকবরের ছেলে মনোহর আলী। তিনি বলেন, ‘সরকারি ঘরের মধ্যেই সবাই থাকতাম। খাবারের জন্য খুব কষ্ট হতো। বাবা ঠিকমতো খাবার দিতে পারতেন না। কোনো দিন একবেলা, অনেক সময় না খেয়েও থাকতে হয়েছে। এসব কারণেই বাবা আত্মহত্যা করেছেন।’
নিহতের পরিবার জানায়, দারিদ্র্য, মামলাসংক্রান্ত জটিলতা ও সংসারে অভাব-অনটনের কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন। জামালপুর সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তদন্ত চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগে রিকশা চালালেও গত চার-পাঁচ বছর ধরে আলী আকবর শ্রমিকের কাজ করতেন। স্ত্রী ও ছয় সন্তান নিয়ে তিনি রামনগরে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে থাকতেন। সন্তানরা সবাই বয়সে ছোট। আজ সকালে ঘরের বারান্দায় একটি ধরনার সঙ্গে তার লাশ ঝুলতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে সবাই মিলে লাশ মাটিতে নামান।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান ও সদর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য দুপুর ১২টার দিকে জামালপুরের জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটুস লরেন্স চিরান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘ওই পরিবারটি কিছুটা সংকটের মধ্যে ছিল। অনেক বড় একটি পরিবার ছিল। তাদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘরও আমরা দিয়েছি। তাদের সব সময় খাদ্য সহযোগিতা দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এ কারণে তারা আমাদের সংস্পর্শে ছিল না। আজকেই তাদের খাদ্য সহযোগিতা করা হবে। নিহতের লাশ দাফনের সব খরচ উপজেলা প্রশাসন দেবে।’
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম খান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিবারে কিছুটা অভাব-অনটন রয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।