ফিফা বিশ্বকাপ ২০২৬-এর ড্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মহারণের আগে বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হয়েছে এক গল্প— যেখানে দাবি করা হচ্ছে, বিখ্যাত বুলগেরীয় ভবিষ্যদ্বক্তা বাবা ভাঙ্গা নাকি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে ২০২৫ সালে পৃথিবী প্রথমবারের মতো ভিনগ্রহের জীবের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে, এবং তা ঘটবে এক “বড় ক্রীড়া ইভেন্ট”-এর সময়। এই দাবি ঘিরে অনেকে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপকেই ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে বিতর্ক
ব্রিটেনের কিছু সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, আকাশে একটি “নতুন আলো” বা অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তু দেখা যেতে পারে, যা কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ করবেন। তবে বিশেষজ্ঞরা জানান, বাবা ভাঙ্গা কখনও নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কোনও লিখিত নথি রেখে যাননি; তাঁর নামে প্রচলিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর বেশিরভাগই অনুসারীদের মুখে-মুখে ছড়ানো বা মৃত্যুর পর তৈরি হওয়া গল্প। ফলে কোনটি সত্যি তিনি বলেছিলেন, আর কোনটি পরবর্তী কিংবদন্তি— তা নির্দিষ্ট করা যায় না। গবেষকেরা মনে করেন, ভিনগ্রহী যোগাযোগের তথাকথিত ভবিষ্যদ্বাণীও এই ‘মিডিয়া মিথ’-এর ধারাই।
বিশ্বকাপের আসল উত্তেজনা
এসব বিতর্কের মাঝেও বিশ্বকাপ ২০২৬ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো ৪৮টি দল অংশ নিচ্ছে। মোট ১০৪টি ম্যাচ হবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ১৬টি শহরে। গ্রুপ লড়াই থেকে শুরু করে প্রতিটি ম্যাচ— সবকিছু নিয়েই সমর্থকদের আগ্রহ বাড়ছে।
ফিফার অবস্থান
ফিফা পরিষ্কার জানিয়েছে— বিশ্বকাপ কোনও অদ্ভুত বা অস্বাভাবিক ঘটনার মঞ্চ নয়। বরং এটি হবে ফুটবলের নতুন অধ্যায় রচনার মুহূর্ত। তাই বাবা ভাঙ্গা-কে ঘিরে যতই আলোচনা হোক, ফুটবল দুনিয়া সেসব গুজব থেকে দূরে থেকেই খেলায় মন দিচ্ছে।
সব মিলিয়ে, আলোচনা যতই হোক, বিশ্বকাপ ২০২৬ মূলত ফুটবল উৎসবই হয়ে উঠবে— ভিনগ্রহীর আগমন নয়। বাবা ভাঙ্গা-কে কেন্দ্র করে ছড়ানো দাবিগুলো বিশেষজ্ঞদের মতে ভিত্তিহীন, এবং সমর্থকরা অপেক্ষা করছেন শুধুই খেলার আনন্দ ও উন্মাদনার জন্য।
জেনে রাখুন-
১. বাবা ভাঙ্গার নামে যে ভবিষ্যদ্বাণী প্রচলিত, সেগুলো কতটা নির্ভরযোগ্য?
বাবা ভাঙ্গা নিজের কোনও লিখিত নথি রেখে যাননি। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীগুলো মূলত অনুসারীদের মুখে-মুখে ছড়ানো বা পরবর্তীকালে তৈরি হওয়া গল্প। ফলে এসব তথ্য যাচাই করা কঠিন। অনেক ভবিষ্যদ্বাণীই ঘটনার পর বানানো বলে গবেষকেরা মনে করেন।
২. বাবা ভাঙ্গা কি সত্যিই ভিনগ্রহীদের যোগাযোগের কথা বলেছিলেন?
এ দাবি প্রমাণ করার মতো কোনও নির্ভরযোগ্য উৎস নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাবা ভাঙ্গা-র নামে প্রচলিত এমন মন্তব্য অবিশ্বস্ত। অধিকাংশই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সংবাদমাধ্যমের ‘মিডিয়া মিথ’ হিসেবে তৈরি হয়েছে।
৩. কেন বিশ্বকাপ ২০২৬-কে বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে?
কারণ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে যে ভিনগ্রহী যোগাযোগ একটি “বড় ক্রীড়া ইভেন্ট”-এর সময় ঘটবে। বিশ্বকাপ ২০২৬ সবচেয়ে বড় বিশ্বমঞ্চ হওয়ায় অনেকে সেটিকে সংযুক্ত করছেন। তবে এ সংযোগের কোনও প্রমাণ নেই।
৪. ফিফা কি বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে কিছু বলেছে?
ফিফা এমন দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি। সংস্থাটি জানিয়েছে, বিশ্বকাপ মূলত ফুটবলের উৎসব, কোনও অদ্ভুত ঘটনার মঞ্চ নয়। তাই বাবা ভাঙ্গা–সংক্রান্ত আলোচনার সঙ্গে টুর্নামেন্টের কোনও যোগ নেই।
৫. কেন বাবা ভাঙ্গা নিয়ে এত আলোচনা হয়?
কারণ তাঁর নামে প্রচলিত বহু ভবিষ্যদ্বাণী জনপ্রিয় এবং অনেকেই সেগুলোকে রহস্যময় হিসেবে দেখেন। যদিও এগুলোর বেশিরভাগই যাচাইহীন, তবুও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের কারণে বাবা ভাঙ্গা প্রায়শই আলোচনায় থাকেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



