লাইফস্টাইল ডেস্ক : শিশুর মধ্যে বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা দেখা যায়। এদিক-ওদিক অনবরত মাথা ঘোরানো, শরীর নাচানো, বৃদ্ধাঙুল চোষা, নখ খুঁটানো, দাঁতে দাঁত ঘষা, দম বন্ধ করে থাকা অথবা হাঁ করে বাতাস গেলা, এই ধরনের অনেক অভ্যাসজনিত সমস্যা শিশুর মধ্যে দেখা যায়।
আঙুল চোষা অনেক শিশুর ক্ষেত্রেই একটি সাধারণ অভ্যাস। বিশেষজ্ঞদের মতে, কখনও কখনও আঙুল চোষা শিশুর জন্য কোনো সমস্যা নয়। যদি শিশু বিক্ষুব্ধ বা উত্তেজিত হয় তাহলে এটা তাকে শান্ত করে। আর যদি একঘেয়েমিজনিত হয়, তাহলে এটা তাকে উদ্দীপ্ত করে।
শিশুর বয়স যদি পাঁচ বছরের কম হয়, তাহলে ভালো উপায় হলো এটাকে উপেক্ষা করা। শিশু যদি শুধু মাঝেমধ্যে আঙুল চোষে এবং এটা তার দাঁত ও আঙুলের জন্য ক্ষতিকর না হয়, তাহলে কিছুই করার দরকার নেই। কিন্তু পাঁচ বছরের পরও যদি শিশু প্রবলভাবে আঙুল চুষতে থাকে, তাহলে দাঁত এবড়োখেবড়ো হওয়াসহ আরও নানা সমস্যার মুখে পড়তে পারে।
শিশুর আঙুল চোষার অভ্যাস ছাড়াবেন যেভাবে
খিদে পেলে অনেক বাচ্চা কাঁদে না, বরং আঙুল চোষে। তারা বুঝতে পারে না যে শুধু স্তনে দুধ থাকে। তারা ভাবে যে চুষলেই দুধ পাবে, তাই তারা দুধ খাবার জন্য আঙুল চোষার চেষ্টা করে। মাঝে মাঝে এটা তাদের মায়েদের বোঝানোর উপায় যে তারা ক্ষুধার্ত। এ রকম পরিস্থিতিতে তাকে বুকের দুধ খাওয়ান। দেখুন দুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে আঙুল চোষা বন্ধ করছে কি না।
ঘুমানোর চেষ্টা করার সময় আপনার শিশুর নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করার প্রয়োজন হতে পারে। কখনও কখনও শিশু এত ক্লান্ত থাকে যে তার ঘুমাতে অসুবিধা হয়। সেই সময় আঙুল চুষে সে নিজেকে আরাম দেয়ার চেষ্টা করে। ঘুমানোর সময় এ ধরনের শিশুর পাশে মায়ের থাকা প্রয়োজন। নিরাপদ বোধ করলে এই শিশু আঙুল চোষা ছেড়ে দেবে।
অলস বসে থাকা শিশু আঙুল চুষতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিশুর হাতে খেলনা দিন। হাতের কাছে খেলনা থাকলে শিশু সেটাই আগে নিতে চাইবে এবং মুখ থেকে আঙুল বের করে ফেলবে।
যদি একটু বড় বয়সেও সন্তান আঙুল চোষার অভ্যাস ছাড়তে না পারে, তাহলে তাকে এর ফলে সে কী কী সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে, সেই বিষয়ে বুঝিয়ে বলুন। নিজে বুঝতে শিখলে হয়তো নিজেই এই অভ্যাস থেকে সে বেরিয়ে আসবে।
একটু বড় বয়সে শিশু আঙুল চুষলে সেই সময় তাকে ছবি আঁকা বা অন্য কোনো হাতের কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। অলস বসে থাকলেই তার মধ্যে আঙুল চোষার ইচ্ছা বাড়বে।
আঙুল চোষার অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায়
আপনি শিশুর মুখে নিপল বা মিষ্টি বড়ি রাখতে পারেন যাতে সে সেগুলোতে ব্যস্ত থাকে এবং তার আঙুল চুষতে না পারে। আঙুল চোষার অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে, আপনি থাম্ব গার্ড বা কিছু প্রতিরক্ষামূলক আবরণ রাখতে পারেন বুড়ো আঙুলে। করলার রস তাদের বুড়ো আঙুলে লাগাতে পারেন, এমনভাবে করলার তেতো স্বাদ শিশুর বুড়ো আঙুল চোষার অভ্যাসের অবসান ঘটাতে পারে।
জীবাণু সম্পর্কে বলুন
আপনার সন্তানকে তাদের হাতে থাকা জীবাণু সম্পর্কে শেখান এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করুন যে আঙুল চোষা সক্রিয় ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে এবং রোগের সূত্রপাত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কিছু শিশু ভয়ে আঙুল চোষার অভ্যাস ছেড়ে দিতে পারে।
দেখুন তারা কখন করে
শিশুরা ঘুমানোর সময় বা টেলিভিশন দেখার সময় তাদের বুড়ো আঙুল চুষে নেয়। এই ক্ষেত্রে, আপনার সন্তানের আঙুল চোষা সময় দেখুন, টিভি দেখার সময় যদি এটি চালু থাকে তবে কয়েক মিনিটের জন্য এটি বন্ধ করুন।
প্রশংসা করুন
যখনই আপনার সন্তানের মুখে আঙুল না থাকে তার প্রশংসা করুন বা পুরস্কৃত করুন। এতে করে শিশুরা এই অভ্যাস ত্যাগ করতে পারে।
বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখুন
শিশুরা প্রায়শই তাদের বুড়ো আঙুল চুষে খায় তখনই। তাই বাচ্চাদের ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। তাদের শারীরিক কার্যকলাপে নিযুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। এতে শিশুরা আঙুল চোষার অভ্যাস ছেড়ে দিতে শুরু করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।