ভারতের গুজরাটে প্রেমের জন্য চড়া মূল্য দিতে হলো এক তরুণীকে। প্রেমিককে পাঠানো আতঙ্ক-ভরা শেষ মেসেজের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মিললো ওই তরুণীর মরদেহ। প্রথমে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হলেও পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করেছে পরিবারের লোকেরা। অভিযোগের তীর তরুণীর বাবা ও চাচার দিকে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
পুলিশ সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নিহত তরুণীর নাম চন্দ্রিকা চৌধুরী (১৮)। তার প্রেমিক হরিশ চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক মানতে নারাজ ছিলেন তার পরিবারের লোকজন। তারা চাইছিলেন চন্দ্রিকার বিয়ে অন্যত্র দিতে। কিন্তু চন্দ্রিকা সেই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। তাকে পরিবারের লোকজন মেরে ফেলতে পারে, একথা আগেই প্রেমিককে জানিয়েছিলেন তিনি।
সবশেষ গত ২৪ জুন গভীর রাতে ইনস্টাগ্রামে হরিশকে চন্দ্রিকা বলেন, ‘আমাকে নিয়ে যাও, নয়তো বাড়ির লোক জোর করে বিয়ে দেবে। বিয়েতে রাজি না হলে মেরে ফেলবে। বাঁচাও আমাকে।’ এর কয়েক ঘণ্টা পরই বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তার মরদেহ। প্রথমে আত্মহত্যার খবর ছড়ালেও, পরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন হরিশ।
বানাসকাঁঠার সহকারী পুলিশ সুপার সুমন নালা জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, চন্দ্রিকার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। মৃত্যুর পর ডাক্তার দেখানো হয়নি, তড়িঘড়ি দাহ করে দেওয়া হয়। পরিবারের ঘনিষ্ঠ কাউকে খবরও দেওয়া হয়নি। চন্দ্রিকার মৃত্যুর খবর জানতে পারেননি এমনকি তার ভাইও। এতেই পুলিশের সন্দেহ গাঢ় হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার কয়েক দিন আগে হরিশের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিলেন চন্দ্রিকা। তবে, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করে এবং চন্দ্রিকাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু ২৪ জুন রাতে চন্দ্রিকা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় তাকে খুন করার ছক কষেছিলেন বাবা সেধাভাই প্যাটেল ও চাচা শিবাভাই প্যাটেল।
পুলিশের দাবি, তিন ধাপে খুনের পরিকল্পনা কার্যকর করা হয়েছে। প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেওয়া হয় চন্দ্রিকাকে, পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় এবং সবশেষে দেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার খবর ছড়ানো হয়। রাতে যারা মরদেহ দেখেছিলেন, তারা ভেবেছিলেন আত্মহত্যা। কিন্তু সকালে পরিবার দাবি করে, এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু।
প্রযুক্তিগত তথ্য, পরিস্থিতিগত প্রমাণ এবং বয়ান বিশ্লেষণ করে পুলিশ নিশ্চিত হয়, এটি একটি ‘পরিকল্পিত ও সাজানো খুন’। এ ঘটনায় থানায় খুনের মামলা দায়ের হয়। চন্দ্রিকার চাচাসহ দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, তার বাবা এখনও পলাতক।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।