জুমবাংলা ডেস্ক : অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না পাওয়ায় আপাতত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বন্ধ। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শূন্যপদে আট হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের সবধরনের প্রক্রিয়া শুরু হলেও শেষ মুহূর্তে এসে ঝুলে গেল সব আয়োজন। পরীক্ষা আয়োজনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল কাজে লাগানো সংক্রান্ত বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় চলতি বছরে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের সব উদ্যোগও শেষ হয়ে গেল।
এ দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষা সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না মেলায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়েই এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের পরীক্ষা আয়োজন করার কথা ছিল। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি চেয়ে চিঠিও পাঠানো হয়। তবে সর্বশেষ খবর হচ্ছে এই অনুমোদন পাওয়া যায়নি। ফলে প্রথম ধাপের এই পরীক্ষা কবে আয়োজন করা যাবে তা এখন আর বলা যাচ্ছে না।
সূত্র আরো জানায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পরই কেবল পরীক্ষা আয়োজনের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তি করতে হবে। এই চুক্তি প্রক্রিয়া শেষ করতেও সময় লাগবে। কাজেই সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের যে পরীক্ষা আয়োজন করার কথা ছিল তা আপাতত আর সম্ভব হচ্ছে বলে মনে হয় না। বিষয়টি এখন একটু কঠিন হয়ে গেল। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের জন্য অনেকদিন আগেই অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে নানা কারণ দেখিয়ে সেই চিঠির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে না। এই অবস্থায় সেপ্টেম্বরে পরীক্ষা আয়োজন করা কঠিন হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রাথমিকের সচিব ফরিদ আহাম্মদ অর্থ সচিবের সাথে দেখা করার চেষ্টা করছেন। সর্বশেষ গতকাল দেখা হলেও অনুমোদন মেলেনি।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ এই প্রতিবেদককে বলেন, আগেই সিদ্ধান্ত ছিল বিভাগওয়ারি পরীক্ষা আয়োজন করব। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই প্রথম ধাপে তিনটি বিভাগের পরীক্ষা আগামী মাসে (সেপ্টেম্বরে) আয়োজন করতে প্রস্তুতি নিয়েছি। এই পরীক্ষা আয়োজন করতে কারিগরি সহযোগিতার জন্য আমরা বুয়েটের সাথে কথা বলেছি। এ ছাড়া অন্যান্য কাজে সহযোগিতা করতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে নিয়োজিত করতে হবে। এই কাজে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন না দেয়ায় এখন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরো সময় লাগবে। তিনি আরো জানান, যদিও অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের নিজেদেরই পরীক্ষা নিতে বলেছিল। তবে আমরা জানিয়েছি, বুয়েট কারিগরি দিকটা দেখবে। আমরা বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আবার পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠাব।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ ধাপে আবেদনের শেষ সময় ছিল ২৪ মার্চ। প্রথম ধাপে আবেদন জমা পড়ে তিন লাখ ৬০ হাজার ৭০০টি। দ্বিতীয় ধাপে ২৩ মার্চ ময়মনসিংহ, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদনের শেষ সময় ছিল ১৪ এপ্রিল। দ্বিতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়ে চার লাখ ৩৯ হাজার ৪৩৮টি। এরপর ১৮ জুন তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এ ধাপে আবেদন শেষ হয় গত ৮ জুলাই। তৃতীয় ধাপে আবেদন জমা পড়েছে তিন লাখ ৪০ হাজারের কিছু বেশি।
সাড়ে সাত হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের অনুমোদন নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। একই সাথে জানানো হয়- শূন্যপদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনে বেশিসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। প্রাথমিক অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ সংগৃহীত তথ্যানুযায়ী সারা দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের আট হাজার ৬৮টি পদ শূন্য রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।