জুমবাংলা ডেস্ক : মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় তাদের দেশে বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য চালু করা পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করার জন্য যে সেবা চালু করেছে তা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৫ আগস্ট) মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আগামী ১৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সাময়িক বন্ধ থাকবে অনলাইনে আবেদনের সুবিধা। তবে ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবেদনের জন্য নতুন সুবিধা চালুর কথা জানানো হয় বিবৃতিতে।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া তাদের শ্রম চাহিদা পূরণের জন্য স্থানীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশসহ বিদেশি কর্মীদের উপর নির্ভর করে থাকে। কিন্তু গত ৩ বছর মহামারির কারণে নতুন করে বিদেশি কর্মী নিয়োগ স্থগিত থাকায় দেশটিতে চরম শ্রমিক সংকট তৈরি হয়।
এই শ্রমিক সংকট নিরসনে ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে মালয়েশিয়া। এ বছরের ২ জুন ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেও বাংলাদেশ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি দুই দেশ।
বিদেশি কর্মী নিয়োগ দিতে মালয়েশিয়া সরকার অনলাইনে আবেদন করার পোর্টাল চালু করলেও তা আগামি ১৫ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে বিপাকে পড়তে পারে বাংলাদেশসহ বিদেশি বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা।
এদিকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য এখন পর্যন্ত ১১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সবশেষ ৩১ জুলাই একটি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য নিয়োগের অনুমতি দেয়া হয়। ২৪ জুলাই ৪টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের অনুমতি দেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এরপর ২৫ জুলাই আরও ৩টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়। এছাড়াও ২৮ জুলাই আরও ৩টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নিয়োগের অনুমতি দেয়া হয়।
বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগে কারিগরি সহযোগিতার জন্য মালয়েশিয়ার একটি বিশেষজ্ঞ টিম ঢাকায় এসেছিল। দেশটিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগে সহায়তার জন্য নিজস্ব কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতি ‘ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (এফডব্লিউসিএমএস) তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।
গেল ৪ জুলাই প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে দেখা করে এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি ঢাকায় কীভাবে ব্যবহৃত হবে, এই বিষয়টি তুলে ধরেন এফডব্লিউসিএমএস বিশেষজ্ঞরা। পরে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইটির কর্মকর্তাদেরও এই পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
জানা গেছে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বিএমইটিতে এফডব্লিউসিএমএস এর সংযোগ স্থাপন করা হবে।মালয়েশিয়ার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক এই বিশেষজ্ঞ টিমটি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো- বিএমইটিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কর্মী নিয়োগের অনলাইন পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করেন সে সময়। এরপর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে কাজ করে দলটি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়ার এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি সংযুক্ত করতে হবে জানিয়ে সম্প্রতি মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে চিঠি দেয়া হয়।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠাতে ৮০ হাজার টাকার কাছাকাছি খরচ পড়বে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
৮০ হাজার টাকার কম নির্ধারণ হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এই খরচের কাছাকাছি পড়বে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মী যাওয়ার খরচ তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।