বিনোদন ডেস্ক : ঠিক দুই বছর আগের ঘটনা। বলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ তার নতুন সিনেমার জন্য বাংলাদেশি একজন অভিনেত্রী খুঁজছিলেন। প্রথমে বিদ্যা সিনহা মিম, এরপর মেহজাবীন চৌধুরীর কাছে আসে প্রস্তাব। গল্প শুনে তারা দুজনেই লোভনীয় কাজটি ফিরিয়ে দেন। অতঃপর ছবির কাস্টিং টিম যোগাযোগ করে আজমেরী হক বাঁধনের সঙ্গে। তিনি চরিত্রের গভীরতা মেপে যুক্ত হন।
দুই বছর পর গেলো ৫ অক্টোবর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘খুফিয়া’ সেই সিনেমা। আর এরই মাধ্যমে বলিউড অভিষেক হলো বাঁধনের। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশি দর্শক বাড়তি আগ্রহ নিয়ে ছবিটি দেখছে। কারণ একদিকে বাঁধনের প্রথম বলিউড প্রজেক্ট, আবার মিম-মেহজাবীনের ফিরিয়ে দেওয়ার রহস্য। দেখার পর কেউ ‘খুফিয়া’ ও বাঁধনের ভূয়সী প্রশংসা করছেন, তো কারও মুখে তীব্র কটাক্ষ-নিন্দা।
কিন্তু ছবিটি নিয়ে ভারতীয় মিডিয়াগুলো কী বলছে? তাদের রিভিউ কেমন? সেটা জানার আগে ইন্টারন্যাশনাল মুভি ডেটাবেজে (আইএমডিবি) একটু চোখ বুলানো যাক। এই প্ল্যাটফর্মে ছবিটির রেটিং ১০-এর মধ্যে ৬ দশমিক ১। দুই হাজার দর্শকের ভোটে আসা এই রেটিংকে বড়জোর অ্যাভারেজ বলা যেতে পারে।
মুক্তির পরই ‘খুফিয়া’র রিভিউ প্রকাশ করে হিন্দুস্তান টাইমস। সেখানে বলা হয়, ‘টাবুর মতো অভিনেত্রী থাকার পরও বিশাল ভরদ্বাজের গুপ্তচরবৃত্তির এই সিনেমা দর্শকের মনোযোগ ধরে রাখতে ব্যর্থ।’
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সাবেক কর্মকর্তা অমর ভূষণের লেখা বই ‘এস্কেপ টু নোহোয়্যার’ থেকে ‘খুফিয়া’ বানানো হয়েছে। কিন্তু বইয়ের সঙ্গে সিনেমার যুতসই সমন্বয় হয়নি বলে দাবি গণমাধ্যমটির।
তবে ছবিতে টাবুর দুর্দান্ত অভিনয়ের প্রশংসা করা হয়েছে। পাশাপাশি এই রিভিউতে বাংলাদেশি অভিনেত্রী বাঁধনের বন্দনাও রয়েছে। যিনি হিনা রহমান চরিত্রে কাজ করেছেন। তার সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশি তথ্যদাতার ভূমিকায় বাঁধন দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন। তাকে দেখা দর্শকের জন্য বাড়তি পাওয়া, যদিও তার আবেদনময়ী চরিত্রটি সন্ত্রাসবাদের প্রেক্ষাপট থেকে অনেকটা দূরে।’
বলা প্রয়োজন, ছবিতে টাবুর সঙ্গে সমকামী ভূমিকায় দেখা গেছে বাঁধনকে। তাদের মধ্যকার তথ্য আদান-প্রদানের সম্পর্ক বিছানা অব্দি গড়ায়। টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডিএনএ ইন্ডিয়ার মতো গণমাধ্যমেও ‘খুফিয়া’র কথা উঠে এসেছে। তবে সেগুলোতে টাবুর বন্দনাই করা হয়েছে। ব্যক্তিগত জটিলতা, যৌন চিন্তা থেকে বিচক্ষণ গুপ্তচরের কাজ; সবেতেই নিজের মান রেখেছেন তিনি।
ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ আরও দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন আলি ফজল ও ওয়ামিকা গাব্বি। এর মধ্যে ওয়ামিকা বোল্ড অবতারে যেমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তেমনি সিরিয়াস মুহূর্তে অভিনয় দক্ষতা দিয়েও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন।
গুপ্তচরবৃত্তি, রাজনীতির প্রেক্ষাপট হলেও ‘খুফিয়া’ সিনেমায় ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও চরিত্রের গভীরতা দেখাতে চেয়েছেন নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ। যেটা তার নির্মাণের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘প্রতিটি মানুষের ভেতরেই একটা অন্ধকার দিক আছে। আমি মানুষের চিন্তার তল অব্দি তুলে আনতে চাই।’
এনডিটিভির রিভিউতে ‘খুফিয়া’কে ৫-এর মধ্যে সাড়ে ৩ রেটিং দেওয়া হয়েছে। এতে বাঁধনের চরিত্রটি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘ভারতের স্পাই এজেন্সির জন্য কাজ করা বাংলাদেশি এজেন্ট হিনা রহমানকে ছবির তিন প্রধান নারী চরিত্রের মধ্যে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। তবে সেও অন্য দুজনের মতো মুগ্ধকর এবং রহস্যময়ী। তার উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি ছবিটিকে একটি প্রেম ও প্রতিশোধের গল্পে পরিণত করে।’
ভরা মঞ্চে দুর্দান্ত কায়দায় ড্যান্স দিয়ে ঝড় তুললো মুসকান বেবি
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ খ্যাত বাঁধনের প্রশংসায় বলা হয়েছে, ‘একটি নির্ভীক ও কমনীয় এজেন্টকে অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং সুক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি; যা দেখার মতো।’ উল্লেখ্য, পরিচালনার পাশাপাশি ‘খুফিয়া’ প্রযোজনা ও এর সংগীত পরিচালনাও করেছেন বিশাল ভরদ্বাজ। ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন আশিষ বিদ্যার্থী, অতুল কুলকার্নি, নবীনিন্দ্রা বহেল, শরাফ ফিগার প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।