জুমবাংলা ডেস্ক : বগুড়া শহরে অবৈধ অটোরিকশা-ইজিবাইকের দাপটে থামছে না যানজট। এসব যানবাহনের সংখ্যা দিন দিনে বেড়ে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশের। পুরো জেলাজুড়ে প্রায় ১০ লাখ ইজিবাইক, মোটা চাকার অটোরিকশা ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহনের দৌরাত্বে ভয়াবহ যানজট কিছুতেই কমছে না শহরে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
দশ মিনিটের রাস্তা পৌঁছাতে সময় লেগে যাচ্ছে একঘণ্টা। এছাড়া শহরে যানজট, ফুটপাত দখলমুক্ত ও আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ৫টি স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চলছে তল্লাশি।
জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের জেলা শহরের মধ্যে বগুড়া সবচেয়ে জনবহুল নগরী। একই সাথে বাণিজ্যিক শহর বলে প্রতিদিন এ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসা, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা কাজে মানুষ বগুড়ায় আসেন। যার ফলে শহরে মানুষের সমাগম বেড়ে যায়। একদিকে যেমন মানুষের সমাগম অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা। শহরের চলাচলরত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক এর চালকরা ট্রাফিক আইন মানছে না। ইচ্ছামত যত্রতত্র রিক্সা স্ট্যাান্ড বসিয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে। অবৈধ অটোরিকশার জটে অতিষ্টি সাধারণ জনগণ। এদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। দিনভর শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, ঝাউতলা, বড়গোলা, টিনপট্ট্রি, দত্তবাড়ি, কাঠালতলা, ফতেহ আলী মোড়, শেরপুর সড়ক, ইয়াকুবিয়া মোড়, গোহাইল সড়ক, জলেশ্বরীতলা, কালিবাড়ি, পিটিআইলেন, এক নম্বর রেলঘুমটি, চকযাদু সড়ক, বাদুড়তলা ক্রসলেনসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।
যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত কয়েক দিন আগে নতুন নিয়মে শহরের বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলতে দেখা যায়। এতে শহরের সাতমাথা এলাকায় যান চলাচলে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরলেও আবারো ফিরে আসে যানজটের সেই পুরোনো চেহারা। ট্রাফিক পুলিশের নতুন নিয়ম অমান্য করে বহু যানবাহন সাতমাথায় প্রবেশ করে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি করছে। যে কারণে যানজটে ভয়াবহ রুপ নিয়েছে বগুড়া।
এদিকে গত দু’দিনে ট্রাফিক আইন লংঘনের অভিযোগে ৫৪টি মোটরসাইকেলসহ ৭০টি যানবাহনের চালকের বিরুদ্ধে মামলা করে ২ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সেই সাথে ফুটপাত থেকে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সন্ত্রাসী-কিশোর গ্যাং, বেপরোয়া মোটরসাইকেল ঠেকাতে ও যান চলাচলে শৃংখলা ফেরাতে ১ ডিসেম্বর থেকে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করেছে। শহরের সাতমাথা, বনানী, মাটিডালি, তিনমাথা ও চারমাথা এই ৫টি স্থানে রাস্তায় চেকপোস্ট স্থাপন করে চলছে যানবাহন তল্লাশি। এ ছাড়া সন্দেহভাজনদেরও দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে।
বগুড়া ট্রাফিক বিভাগের ইনচার্জ (টিআই) মো: সালেকুজ্জামান খান জানান, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ট্রাফিক পুলিশ যানজট ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখতে কাজ করছে। শহরের সাতমাথা, স্টেশন সড়ক, চাঁদনী বাজার, থানা মোড়সহ শহরের বিভিন্ন স্থানে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হচ্ছে।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার জানান, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের যানজট নিরসনে কাজ করা হচ্ছে। যানজটের মূল কারণ হচ্ছে অধিক পরিমান অবৈধ ইজিবাইক ও অটোরিক্সা বেড়ে যাওয়া। এছাড়াও শহরের রাস্তার ধারণ ক্ষমতার অধিক যানবাহন চলাচলের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ যানবাহন চলে এই শহরে। সে তুলনায় রাস্তা নেই। উপজেলাগুলো থেকেও নতুন নতুন যানবাহন এসে শহরে ঢুকে পড়ছে। যার ফলে যানবাহন নিয়ন্ত্রন করতে গিয়ে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।