জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের জনস্বাস্থ্য ও রাজস্ব কাঠামোয় বড় পরিবর্তন আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ইঙ্গিত দেয়।
Table of Contents
নতুন বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ার মূল কারণ হলো তামাক বীজ আমদানিতে নতুন করে ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি আরোপ এবং কাঁচামাল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি।
নতুন বাজেটে সিগারেটের দাম বাড়ছে কেন?
প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বর্তমান ব্যবস্থায় তামাক বীজ আমদানিতে কোনো কাস্টমস ডিউটি আরোপ করা হয়নি, ফলে এটি চাষে উৎসাহ সৃষ্টি করছিল। তবে নতুন বাজেটে এই এইচএস কোড আলাদা করে ২৫% শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এছাড়া, সিগারেট উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কাঁচামাল যেমন পেপার, অ্যাসিটেট টো এবং অ্যাসিটেট ফিল্টার রডের আমদানির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারীদের জন্য সম্পূরক শুল্ক ১০০% থেকে ৩৫০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ মূলত তামাক শিল্পে শুল্ক ফাঁকি রোধ এবং অধিক রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
সিগারেট উৎপাদন ও বাজারে প্রভাব
এই নতুন শুল্ক কাঠামোর ফলে সিগারেট উৎপাদনের খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। সিগারেট উৎপাদকদের জন্য কাঁচামাল আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা এ ব্যয় ভোক্তাদের ওপর চাপিয়ে দেবে, যার ফলে বাজারে সিগারেটের দাম বৃদ্ধি অবধারিত।
ফলে, নিম্নআয়ের মানুষের জন্য সিগারেট কেনা কঠিন হবে, যা ধূমপান কমাতে সহায়ক হতে পারে। তামাক নিয়ন্ত্রণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী উচ্চ কর আরোপের মাধ্যমে ধূমপান নিরুৎসাহিত করার কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
উল্লেখযোগ্য যে, একটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়লে তার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো বার্তা হতে পারে।
রাজস্ব আয়ে প্রভাব ও সরকারের লক্ষ্য
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,৯৯,০০০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য। এই রাজস্ব ঘাটতি ২,২৬,০০০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%। সরকার এই ঘাটতি পূরণে ব্যাংক ঋণ, বৈদেশিক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রে নির্ভর করবে।
তামাকজাত পণ্যে শুল্ক বৃদ্ধি সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে, এই উদ্যোগ জনস্বাস্থ্য রক্ষার কৌশলেরও একটি অংশ। অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভবিষ্যৎ প্রভাব ও বিতর্ক
এই পদক্ষেপ নিয়ে নানা মত-পথ রয়েছে। কিছু উৎপাদক প্রতিষ্ঠান মনে করছে এতে শিল্প খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, কর্মসংস্থান কমবে। অন্যদিকে, জনস্বাস্থ্য সংস্থাগুলো একে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলছে।
এছাড়াও, বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত পুরনো নীতির সঙ্গে নতুন শুল্ক কাঠামোর মিল রয়েছে, যা ধূমপান কমানোর কৌশলে উপকারী হতে পারে।
FAQs
- নতুন বাজেটে সিগারেটের দাম কত বাড়বে?
সুনির্দিষ্ট দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি, তবে কাঁচামাল শুল্ক বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। - এই শুল্ক বৃদ্ধি কাদের ওপর প্রভাব ফেলবে?
উৎপাদক, আমদানিকারক এবং শেষ পর্যন্ত সাধারণ ভোক্তাদের ওপর এর প্রভাব পড়বে। - সিগারেটের দাম বাড়লে ধূমপান কমবে কি?
হ্যাঁ, গবেষণায় দেখা গেছে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়লে ধূমপান কমে। - এই সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তি কী?
জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও রাজস্ব আয়ে বৃদ্ধিই এর মূল লক্ষ্য। - তামাক চাষে কী প্রভাব পড়বে?
তামাক বীজে শুল্ক আরোপের ফলে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।