বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গবেষণা প্রকল্পের জন্য বিশেষভাবে লালনপালন করা উন্নত জাতের ১৪টি ভেড়া চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফটকসংলগ্ন খামার থেকে ভেড়াগুলো চুরি হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চুরির সময় খামারটিতে কোনো প্রহরী দায়িত্বে ছিলেন না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত দুজন কর্মী ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার পর চলে যাওয়ায় রাতে খামারটি সম্পূর্ণ ফাঁকা ছিল।
পরদিন সকালে নিরাপত্তাকর্মীরা গিয়ে দেখেন, খামারের দরজার তালা ভাঙা এবং ভেড়াগুলো নেই। চুরির সঠিক সময় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হবে।
চুরি হওয়া ভেড়াগুলো ছিল ‘দরপার’ ও ‘গাড়ল’ প্রজাতির, যা চর ও হাওর অঞ্চলে সুপরিচিত। গবেষণা প্রকল্পটির সঙ্গে যুক্ত সার্জারি ও অবস্টেট্রিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারি জানান, এই ভেড়াগুলো নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি গোল্ড মেডেল পেয়েছিলেন। প্রতিটি ভেড়ার ওজন ছিল প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি এবং বর্তমান বাজারমূল্য ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।
অধ্যাপক বারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বহু পরিশ্রমে এই নিউক্লিয়ার স্লট তৈরি করেছি। এই ভেড়াগুলো নিয়ে তিনটি প্রজনন প্রকল্প এবং দুটি গবেষণা প্রকল্প চলমান ছিল। চুরির পর এখন মাত্র ২-৩টি ভেড়া আছে।’
তিনি জানান, এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো ভ্রূণ স্থানান্তরের মাধ্যমে ভেড়ার বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হতো। তাঁর মতে, এই চুরির ঘটনা শুধু তাঁর ব্যক্তিগত গবেষণা নয়; বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গবেষণারও ক্ষতি করেছে।
বাকৃবির শিক্ষার্থীরা এই ঘটনায় গবেষণা কার্যক্রমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই চুরির ঘটনার দ্রুত তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।