জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলা নববর্ষ বাঙালির জীবনে শুধু একটি দিন নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। প্রতিবছর ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ) নতুন বছরকে বরণ করতে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। তবে অনেকেই জানেন না এই দিনটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে এমন কিছু অজানা ও চমকপ্রদ তথ্য, যা ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি ও রাজনীতি—সবখানেই ছড়িয়ে আছে।
Table of Contents
নববর্ষের সূচনা মূলত কর ব্যবস্থার জন্য
বাংলা সনের সূচনা হয় সম্রাট আকবরের সময়। তিনি ফসলি খাজনা আদায়ের সুবিধার্থে হিজরি ও বাংলা সনের মিশ্রণে নতুন একটি বর্ষপঞ্জি চালু করেন, যার নাম ছিল “ফসলি সন”। এই সন পরবর্তীতে রূপ নেয় বাংলা ক্যালেন্ডারে। মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের কাছ থেকে সময়মতো খাজনা আদায় নিশ্চিত করা।
১ বৈশাখ আগে পালন হতো ১২ এপ্রিল
অনেকেই জানেন না যে, ১৯৬৬ সালের আগে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি ছিল ১২ এপ্রিল। ১৯৬৬ সালে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে একটি কমিটি বাংলা সন সংস্কার করে ১ বৈশাখকে ১৪ এপ্রিল নির্ধারণ করে।
মঙ্গল শোভাযাত্রার মূল ধারণা এসেছিল সামরিক শাসনের প্রতিবাদ থেকে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে ১৯৮৯ সালে প্রথম “মঙ্গল শোভাযাত্রা” আয়োজন করা হয়। তখন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে একধরনের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদের রূপ নেয় এই শোভাযাত্রা। এটি ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায়।
বাংলা সন গণনার পেছনে জ্যোতির্বিজ্ঞানের অবদান
বাংলা পঞ্জিকা মূলত সৌর ক্যালেন্ডারভিত্তিক, যা হিজরি বা খ্রিষ্টীয় ক্যালেন্ডার থেকে আলাদা। এটি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়েছিল তৎকালীন ভারতের বিখ্যাত জ্যোতির্বিদদের হিসাব। আকবরের সময়ের রাজ জ্যোতির্বিদ আমীর ফতেহউল্লাহ সিরাজী ছিলেন এই বর্ষপঞ্জি প্রণয়নের মূল ব্যক্তিত্ব।
নববর্ষে হালখাতার উৎসব ব্যবসায়ীদের আদি সংস্কৃতি
বাংলা নববর্ষে হালখাতা বা নতুন খাতা খোলা একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়োজন, যা মূলত ব্যবসায়ীদের মধ্যকার লেনদেনের খাতার সমাপ্তি ও নতুন বছরের সূচনার প্রতীক। এই প্রথাটি মুঘল আমলে শুরু হয় এবং আজও বাংলাদেশের গ্রাম-গঞ্জ থেকে শহর—সব জায়গায় বহাল রয়েছে।
নববর্ষ পালনে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার প্রতিফলন
বাংলা নববর্ষ এখন এমন এক উৎসব হয়ে উঠেছে, যা ধর্ম, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সবাই উদযাপন করে। এটি বাঙালির জাতীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে কাজ করে এবং জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।