জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আমরা এখন ১৪৩২ সালে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই সন কি আসলেই সঠিক? বাংলা সন গণনা নিয়ে রয়েছে বহু বিতর্ক, গবেষণা এবং সংশোধনের ইতিহাস, যা সাধারণ মানুষের কাছে এখনও অনেকটাই অজানা।
Table of Contents
বাংলা সনের উৎপত্তি: ফসলি সন থেকে বঙ্গাব্দ
বাংলা সনের সূচনা সম্রাট আকবরের সময়, মূলত কৃষিভিত্তিক রাজস্ব আদায়ের জন্য। ফসলি সনের সঙ্গে হিজরি ও সৌর সনের সমন্বয়ে তৈরি হয় বঙ্গাব্দ। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, এই হিসাব পুরোপুরি সুনির্দিষ্ট ছিল না এবং তখনও “শূন্য বছর” গণনায় ব্যবহৃত হয়নি।
বাংলা বর্ষপঞ্জির সংশোধন ও বিতর্ক
১৯৬৬ সালে মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে বর্ষপঞ্জি সংস্কার কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে একাডেমি সংস্করণ চালু হয়, যা বর্তমানে ব্যবহারিত। তবে এই সংস্করণে ১ বৈশাখ সর্বদা ১৪ এপ্রিল ধরে নেওয়া হয়, যেটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের সঙ্গে শতভাগ মেলে না।
বাংলা ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ফারাক
বাংলা সনের বছর ৩৬৫ দিন ধরা হলেও লিপ ইয়ারের বিষয়টি ঠিকভাবে সংযুক্ত করা হয়নি। এর ফলে প্রতি বছর ১ বা ২ দিনের একটি সূক্ষ্ম গড়মিল হয়, যা দীর্ঘ সময় ধরে বড় ফারাকে রূপ নিতে পারে। কিছু গবেষক বলেন, বাস্তবে আমরা ১৪৩১ বা ১৪৩৩ সালে হতে পারতাম।
কেন আজও এই বিষয়ে গবেষণা জরুরি?
- নতুন প্রজন্ম যেন বাংলা ক্যালেন্ডারের উৎস ও গণনা পদ্ধতি জানে।
- একটি ঐতিহ্যবাহী বর্ষপঞ্জিকে বিজ্ঞানসম্মত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকিয়ে রাখা যায়।
- জাতীয় উৎসব ও ছুটির নির্ভুল সময় নির্ধারণে সুবিধা হয়।
ভুল হলেও গুরুত্ব অম্লান
হ্যাঁ, বাংলা সনের গণনায় কিছু ভুল বা বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু এর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব প্রশ্নাতীত। এটি আমাদের শিকড়, পরিচয় এবং উৎসবের কেন্দ্র।
১৪৩২ সাল হয়তো গণনাগত দিক থেকে ভুল হতে পারে, কিন্তু বাঙালির হৃদয়ে এটি চিরস্মরণীয় এক সাংস্কৃতিক পরিক্রমা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।