জুমবাংলা ডেস্ক : জ্বালানি আর ডলার সংকটের এই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে পেট্রোল-অকটেনের স্থানীয় উৎপাদন বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে উপজাত হিসেবে পাওয়া কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাত করে, স্থানীয়ভাবে তৈরি হচ্ছে চার প্রকারের জ্বালানি তেল। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে উৎপাদিত এই তেল জাতীয়ভাবে ৮ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে। তবে পরিকল্পনাহীনতায় এই সম্ভাবনার পুরোটুকু কাজে লাগানো হয়নি জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, গ্যাসক্ষেত্রগুলোর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন, সংকট উত্তরণের পথ দেখাতে পারে।
পূণ্যভূমি সিলেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে জ্বালানি খাতের নানা সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। কোথাও প্রাকৃতিক গ্যাস, আবার কোথাও এই মাটির নিচে রয়েছে জ্বালানি তেলের মজুত।
ভূ-অভ্যন্তরে তেলের মজুতের পাশাপাশি এই সিলেট থেকেই পেট্রোল-অকটেন-ডিজেল-কেরোসিনের মতো জ্বালানি তেল প্রস্তুত হচ্ছে। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে কখনও মূল্য আবার কখনও দুষ্প্রাপ্যতার দোহাই দিয়ে এই তেলের জন্যই মাঝে মধ্যে হাহাকার শুরু হয় দেশে।
এই ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্টে তেল উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্রে প্রাপ্ত কনডেনসেট বা উপজাত। খনি থেকে গ্যাস উত্তোলনের সময় উপজাত হিসেবে উঠে আসা এই কনডেনসেটের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীনে রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রের এই প্রসেস প্ল্যান্টটিতে কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাতকরণে যুক্ত হয়েছে ক্যাটালাইটিক রিফর্মিং ইউনিট বা সিআরইউ। এতে উৎপাদন বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি।
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সাধারণ অকটেন এর গ্রেড ৮৭, ৮৮-৯০ মাত্রা হলো মধ্যমমানের আর ৯১-৯৪ হলো প্রিমিয়াম বা উৎকৃষ্ট মানের জ্বালানি তেল। যা এখানেই প্রস্তুত করছে দেশীয় জনবল।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দেশে বার্ষিক অকটেন-পেট্রোলের চাহিদার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ উৎপাদন হচ্ছে রশিদপুর থেকে। এখানে মিলছে ৮০ হাজার ৪৩৭ টন অকটেন আর ৭৫ হাজার ৯৬৮ টন পেট্রোল।
সরকারের আশা, এমন প্রকল্পগুলো থেকে সাফল্য পেতে মান ধরে রাখার পাশাপাশি নীতিগতভাবেও আরও যুগপোযোগী হবার সময় এসেছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি সংকট হ্রাসে দেশীয় কোম্পানিগুলো রাতদিন কাজ করছে। প্রকল্পগুলো থেকে সাফল্য পেতে মান ধরে রাখার পাশাপাশি নীতিগতভাবে কাজ করা হবে।
তবে বিশ্লেষকদের দাবি, গ্যাসের উৎপাদন বাড়লে সামগ্রিকভাবে কনডেনসেট উৎপাদনও বাড়তো। সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা নিলে সংকটে বড় ভরসা হতে পারে এই প্রসেস প্ল্যান্টগুলো।
জ্বালানি বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. বদরূল ইমাম বলেন, রশিদপুর ও কৈশালটিলার মতো গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়ানো গেলে দ্রুততম সময়ে দেশের জ্বালানি সংকট কেটে যাবে।
এদিকে, চাহিদা কমায় আর আমদানি করা হচ্ছে না কেরোসিন। এই পণ্যটির দেশীয় চাহিদার পুরোটুকুই এখন যোগান দিচ্ছে এমন ফ্র্যাকশনেশন প্ল্যান্টগুলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।