আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচারপ্রত্যাশী মানুষের সময়, শ্রম এবং অর্থ বাঁচাতে সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লিগ্যাল এইডের কাজ চলমান থাকবে এবং এ কাজের জন্য অনুদানের ওপর নির্ভর করবে না সরকার।
আজ সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর : রোল অব ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিস ইন ইমপ্লিমেন্টিং নিউ লেজিসলেশন্স’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের অর্থের সংকুলান আছে। তবে সেটিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারলে অনেক কিছুই করা যাবে। এক টাকা পরিমাণ অর্থ অনুদান না পেলেও আমরা বসে থাকব না, যতদিন মেয়াদ অবশিষ্ট আছে আমরা কাজ করে যাব এবং এমন ব্যবস্থা করে যাব, যেন আমরা চলে গেলেও মানুষ এর উপকার পান।’
তিনি বলেন, ‘সত্যিকারার্থে মানুষকে সেবা না দিতে পারলে আইন বা সরকারের প্রচেষ্টার কোনো মূল্য থাকবে না। আমাদের যে অর্থ আছে, ক্ষমতা আছে, সেটার যথাযথ ব্যবহারে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। আইনগত সংস্কারের পাশাপাশি আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচারাল ব্যবস্থারও প্রয়োজন এবং সেটার সামর্থ্য আমাদের আছে। আর যে ছয় মাস আমরা আছি, এর মধ্যে প্রত্যেকটি জেলায় লিগ্যাল এইডের জন্য আমরা ব্যবস্থা করে যাব।’
লিগ্যাল এইড-কে সহজলভ্য করতে পারলে প্রচুর সময় ও অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘লিগ্যাল এইডকে সহজলভ্য করে তুলতে পারলে খুব সহজে, অতি অল্প খরচে কত শত মানুষের সমস্যার সমাধান করতে পারব ভেবে দেখবেন। লিগ্যাল এইড সেবা পেয়েছেন এমন ৯০ ভাগ মানুষ এর রায়ের ক্ষেত্রে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তারা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান পাচ্ছেন আদালতের তুলনায় ১০ ভাগের একভাগ সময়ে।’
আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের লিগ্যাল এইডকে সহজলভ্য করার আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘এসব ধারণা থেকে লিগ্যাল এইডকে বাধ্যতামূলক করা যায় কি না সে ভাবনা আমরা ভাবতে শুরু করি।’
২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে দুই লাখ মামলা লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের এ কাজে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা না থাকলেও আপনারা ভবিষ্যতে এ মহৎ কাজ চালিয়ে যাবেন।’
আজকের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. মাইকেল মিলার এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
সবশেষে সমাপনী বক্তব্যে দেন আইন ও বিচার বিভাগ সচিব শেখ আবু তাহের।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিচার বিভাগের বিচারকগণ, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ও আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ ও বিভিন্ন দেশ হতে আগত অতিথিরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।