সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাওয়ার পথে বাংলাদেশি দুই নাগরিককে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে আলবেনিয়ার অভিবাসী ক্যাম্পে পাঠায় ইতালি। সেখানে তাদের আশ্রয়ের বিষয় পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে তা বাতিল করা হয়। তবে আশ্রয় আবেদন বাতিলের বিরুদ্ধে ইতালির আদালতে মামলা করেন ওই দুই বাংলাদেশি। এরপর তাদের মামলাটি পাঠানো হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতে।
ইতালির জর্জিয়া মেলোনি সরকার বাংলাদেশকে ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলাটি করা হয়েছিল। ইউরোপীয় বিচার আদালত ইতালীয় আদালতের পক্ষে আজ সেই আবেদনেরই রায় দিয়েছেন।
তবে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী ইতালীয় সরকার এই রায়ের কঠোর সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, ইইউ আদালত জাতীয় সার্বভৌমত্বের উপর হস্তক্ষেপ করছে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ অভিবাসন রোধে দেশের সক্ষমতা দুর্বল করে দিচ্ছে।
এক বিবৃতিতে সরকার জানায়, আদালত সরকার পরিচালিত গভীর তদন্তের চেয়ে বিচারকদের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, কোনো দেশকে ‘নিরাপদ’ বলে ঘোষণা করা যাবে না যদি সেই নিরাপত্তা সব ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না হয়। এই রায়টি ইতালির ২০২৩ সালের আলোচিত চুক্তির জন্য এক বড় ধাক্কা।
এই ঘোষণা অনুযায়ী, কোনো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে আবেদন প্রক্রিয়ার সময় আটক বা দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
রায়ে বলা হয়েছে, এই ধরনের ‘নিরাপদ দেশ’ ঘোষণার জন্য অবশ্যই বিচারিক পর্যালোচনার সুযোগ থাকতে হবে এবং এটি সুস্পষ্ট, গ্রহণযোগ্য প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে হতে হবে। কোনো দেশকে ‘নিরাপদ’ বলা যাবে না যদি সেই দেশ নির্দিষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ না হয়।
২০২৪ সালের অক্টোবরে, ইতালির ‘নিরাপদ দেশ’-এর তালিকায় বাংলাদেশ, মিসরসহ আরও কিছু দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এই তালিকাটি সমালোচিত হয় কারণ এতে অনেক ব্যক্তির জন্য এখনো থাকা সম্ভাব্য হুমকিকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
তবে আদালতের এই রায় সত্ত্বেও ইতালি এখনও আলবেনিয়ায় অভিবাসী স্থানান্তর চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তারা এই কেন্দ্রগুলোর ব্যবহার পুনঃনির্ধারণ করেছে— এখন শুধু তাদেরকেই পাঠানো হচ্ছে যাদের আশ্রয় আবেদন ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান হয়েছে।
রায়টি ইতালীয় বিচারকদের জন্য একটি বিজয় হিসেবে দেখা হলেও সরকারের সামগ্রিক অভিবাসন নীতিতে এর তাৎক্ষণিক প্রভাব সীমিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।