জুমবাংলা ডেস্ক : ভারতীয় অংশে ‘স্লুইস গেট’ গেট বন্ধ থাকায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা একটি মাঠের কয়েক হাজার বিঘা জমির ধানের চারা সাত দিন ধরে পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। ধানের চারাগুলো ডুবে থাকায় অনেকটা ক্ষতির মুখে পড়েছে এলাকার কয়েকশ কৃষক। ইতোমধ্যে স্লুইচ গেটটি খুলতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনীকে চিঠি দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ভাইগড় ক্যাম্পের সদস্যরা। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি খুব দ্রুত সমস্যাটি সমাধান হয়ে যাবে।
জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে উত্তরের জেলা দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর মাঠ, হাকিমপুর মাঠ, শৈলান মাঠ এবং পলিখিঁয়ারমামুদপুর মাঠের বেশ কয়েক হাজার বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে যায়। পানিগুলো পলিখিঁয়ারমামুদপুর মাঠ দিয়ে ভারতীয় অংশে প্রবেশ করে। কিন্তু বৃষ্টির শুরুর দিকে ভারতীয় সিরামপুর এলাকায় ‘স্লুইস গেট’টি বন্ধ থাকায় মাঠের পানি নামতে পারেনি।
আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার বেশ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে পানি কানায় কানায় পূর্ণ। ধানের চারা দেখা যাচ্ছে না। বিলগুলো দেখতে অনেকটা বড় নদীর মত মনে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার উপজেলায় ১৭ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা বপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ জমিতে চারাগুলো রোপণ করা হয়েছে।
পলিখিঁয়ারমামুদপুর এলাকার কৃষক পলাশ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আমার ১০ বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে ডুবে আছে। চারাগুলো আর দুএক দিন থাকলে পচে নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের এই এলাকার বেশির ভাগ কৃষকের জমিই পানির নিচে ডুবে গেছে। সামনে কী হবে তা নিয়ে খুব চিন্তাই আছি।’
দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের কৃৃষক অফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমারা ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি ভারতের সিরামপুর এলাকার মাঠে একটি স্লুইস গেট আছে। ওখানে মোট আটটি গেট আছে। সারা বছর ধরে খুলে রাখে। শয়তানি করে বাংলাদেশের কৃষকের জমির ধান নষ্ট করতে তারা বর্ষার সময় সব গেট বন্ধ করে দেয়। আবার তাদের তোষামোদ করলে খুলে দেয়।’
কৃষক ইউনুস আলী বলেন, ‘এই মাঠে আমার ৮ বিঘা জমির নতুন ধানের চারা ডুবে গেছে। আমার চাচার ১৩ বিঘা। পানিগুলো যদি আগামী তিন দিনের মধ্যে নেমে যায় তাহলে কিছুটা রক্ষা হতে পারে। আমরা স্থানীয় ভাইগড় বিজিবিকে বিষয়টি নিয়ে জানিয়েছি। শুনতেছি তারা নাকি বৈঠক করবে।’
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম ইলিয়াস বলেন, ‘গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এই এলাকার চারটি মাঠের বেশকিছু কৃষকের জমির ধানের চারা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বরাবরই পানিগুলো ভারতে চলে যায়। এবার তারা কেন গেটগুলো বন্ধ রেখেছে আমরা জানিনা। তবে আমরা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিজিবি’র ভাইগড় কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার অমরেষ কুমার বালা বলেন, ‘দুই-একদিন দেখি, যদি না খোলে সে ক্ষেত্রে আমরা তাদের (বিএসএফ) সঙ্গে বৈঠক করব।’
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, ‘কৃষি অফিসের তদন্তের পরপরই আমরা বিজিবিকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি। তারাও ভারতীয় সীমান্তরক্ষীবাহিনীকে চিঠি দিয়ে অবগত করেছে। আশা করছি আগামী দুই-একদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।