Close Menu
Bangla news
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • শিক্ষা
  • আরও
    • লাইফস্টাইল
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • বিভাগীয় সংবাদ
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যরকম খবর
    • অপরাধ-দুর্নীতি
    • পজিটিভ বাংলাদেশ
    • আইন-আদালত
    • ট্র্যাভেল
    • প্রশ্ন ও উত্তর
    • প্রবাসী খবর
    • আজকের রাশিফল
    • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
    • ইতিহাস
    • ক্যাম্পাস
    • ক্যারিয়ার ভাবনা
    • Jobs
    • লাইফ হ্যাকস
    • জমিজমা সংক্রান্ত
Facebook X (Twitter) Instagram
Bangla news
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • শিক্ষা
  • আরও
    • লাইফস্টাইল
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • বিভাগীয় সংবাদ
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যরকম খবর
    • অপরাধ-দুর্নীতি
    • পজিটিভ বাংলাদেশ
    • আইন-আদালত
    • ট্র্যাভেল
    • প্রশ্ন ও উত্তর
    • প্রবাসী খবর
    • আজকের রাশিফল
    • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
    • ইতিহাস
    • ক্যাম্পাস
    • ক্যারিয়ার ভাবনা
    • Jobs
    • লাইফ হ্যাকস
    • জমিজমা সংক্রান্ত
Bangla news
Home বাংলাদেশের বুকে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা
মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশের বুকে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা

Shamim RezaJune 1, 20248 Mins Read
Advertisement

মো. জাকির হোসেন : সাম্রাজ্যবাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে কোনো ভান-ভণিতা, ঘোর-প্যাঁচের আশ্রয় না নিয়ে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকন্যা স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিস্টান দেশ বানানোর চক্রান্ত চলছে। তিনি এটাও বলেছেন, বাংলাদেশে এয়ার বেইস বানানোর জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

মতামত

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন, পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের কৌশল হিসেবে প্রধানমন্ত্রী খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্তের কথা বলছেন, না সত্যিই এর কোনো ভিত্তি রয়েছে? ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বাংলাদেশকে ঘিরে বিদেশি রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র, হস্তক্ষেপ নতুন নয়। স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঠেকাতে পাকিস্তানকে অস্ত্র-অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্ররা।

বাঙালিদের গণহত্যাকে সমর্থন করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সমর্থনকারী রাষ্ট্রের ওপর সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিয়েছে। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় অর্জনকে ঠেকিয়ে দিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান দখলদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা শুরুর দুই দিন আগে পাকিস্তানে দায়িত্বরত তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় তহবিলে মোটা অঙ্কের ডলার প্রদানের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন ফারল্যান্ড। বঙ্গবন্ধু ফারল্যান্ডকে বলেছিলেন, ‘মিস্টার ফারল্যান্ড, আমি শিয়ালের কাছ থেকে নিয়ে দেশটা বাঘের হাতে তুলে দিতে পারব না।’ মোরশেদ শফিউল হাসান লিখেছেন, ‘মনে আছে, ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারির শেষ কি মার্চ মাসের গোড়ার দিকে একটা কথা খুব চাউর হয়েছিল, পাকিস্তানে আমেরিকার তৎকালীন রাষ্ট্রদূত জোসেফ ফারল্যান্ড (এর আগে ইন্দোনেশিয়ায় কমিউনিস্টবিরোধী অভিযানকালে যিনি সেখানে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন) ইসলামাবাদ থেকে উড়ে এসে মুজিবের সঙ্গে দীর্ঘ গোপন বৈঠক করেছেন। তাতে ফারল্যান্ড হাতিয়া বা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে দেওয়ার শর্তে মুজিবের কাছে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে বাংলাদেশের বুকে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনাপাকিস্তানি সামরিক জান্তাকে রাজি করানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।

সে সময় বামপন্থী মহলে (চীনপন্থী ও রুশপন্থী উভয় ঘরানায়ই কমবেশি) একটা ধারণা মোটামুটি প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল যে মুজিব ফারল্যান্ডের শর্তে রাজি হয়েছেন, আর ক্ষমতা হস্তান্তর এরপর সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমি তখন ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্র ইউনিয়নের (মতিয়া) সক্রিয় কর্মী। কয়েকটি বাংলা-ইংরেজি দৈনিক ছাড়াও নিয়মিত সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস ও ফোরাম পত্রিকা দুটি পড়ি। মাঝে মাঝে ডাকযোগে এক্সপ্রেস পত্রিকার প্রশ্নোত্তর বিভাগে প্রশ্ন পাঠাই। এ সময় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুজিব-ফারল্যান্ডের সেই গোপন বৈঠক ও কথিত সমঝোতা নিয়েও একটা প্রশ্ন পাঠিয়েছিলাম।

’
স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরও ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। বিদেশি ওই রাষ্ট্রগুলো স্বাধীনতা নস্যাৎ করতে বঙ্গবন্ধুর সরকারকে উত্খাতের ষড়যন্ত্র করে। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে বঙ্গবন্ধুবিরোধীদের অস্ত্র-অর্থ সহায়তা দেয়। বঙ্গবন্ধু সরকারকে উত্খাত করতে খাদ্যাস্ত্র ব্যবহার করে পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করে। কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনস, নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ফরেন অ্যাফেয়ার্স পত্রিকায় (১৯৭৬ সালের জানুয়ারি সংখ্যা) এমা রথচাইল্ড ‘ফুড পলিটিকস’ শিরোনামের এক প্রবন্ধ লেখেন। ওই প্রবন্ধে তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষের জন্য সরাসরি মার্কিন সরকারকেই দায়ী করেন। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জড়িয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।

মার্কিন সাংবাদিক ক্রিস্টোফার এরিক হিচিন্স তাঁর ‘ট্রায়াল অব হেনরি কিসিঞ্জার’ গ্রন্থে মুজিব হত্যায় কিসিঞ্জারকে দায়ী করেন। পুলিত্জার বিজয়ী মার্কিন সাংবাদিক সেইম্যুর হার্শ তাঁর ‘প্রাইস অব পাওয়ার’ গ্রন্থেও মার্কিন প্রশাসনকে অভিযুক্ত করেন। জান্নিকি অ্যারেন্স ভারতের ইকোনমিক অ্যান্ড পলিটিক্যাল উইকলিতে লেখেন, ‘সপরিবারে মুজিব হত্যা প্রায় নিশ্চিতভাবেই সিআইএর সহায়তায় ঘটেছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ড. পামেলা কে গিলবার্ট তাঁর ‘ইমাজিনড লন্ডনস’ বইয়ে লিখেছেন, ‘সিআইএ মুজিব হত্যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রতিক্রিয়াশীল বাঙালিদের ব্যবহার করেছিল।’

বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে একটি স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নতুন নয়, বহু পুরনো। সত্তরের দশকের শেষ থেকে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত পাহাড়ে শান্তি বাহিনীর যে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র আন্দোলন হয়েছিল, সেখানে মদদ দিয়েছিল অনেক বিদেশি রাষ্ট্র। তথাকথিত মানবাধিকার এবং আদিবাসীদের অধিকার সুরক্ষার কথা বলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকে দিয়েছিল ওই সব রাষ্ট্র। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এর ফলে পাহাড়ে সশস্ত্র সংঘাত বন্ধ হয়। ধীরে ধীরে সেখানে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়। শান্তি বাহিনীর নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার পর নতুন করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) যে সহিংসতা শুরু করেছে তার পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র আছে বলেই প্রতীয়মান হয়। শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর শান্তির যে আবহ সৃষ্টি হয়েছে তাকে বিঘ্নিত করতে নানা অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে একটি মহল।

পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলা হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে উঠেছে। সশস্ত্র তৎপরতা ও সহিংসতার জন্য কেএনএফ দৃশ্যমান শক্তি হলেও এর পেছনে রয়েছে সুগভীর বিদেশি ষড়যন্ত্র। কেএনএফ একক শক্তিতে এই ধরনের সহিংস ঘটনা কিংবা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন সংগঠিত করতে পারে না। একাধিক আন্তর্জাতিক খ্রিস্টান সংস্থা কয়েক দশক ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি আলাদা রাষ্ট্র করার চক্রান্ত চালাচ্ছে। এই মহলের ইন্ধনেই ইন্দোনেশিয়ার বুকে খ্রিস্টান রাষ্ট্র পূর্ব তিমুর বা তিমুর লেস্টে নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সুদান ভেঙে দক্ষিণ সুদান নামের খ্রিস্টান অধ্যুষিত রাষ্ট্র তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের হৃৎপিণ্ডতুল্য খনিজ সম্পদের অপার সম্ভাবনাময় এক-দশমাংশ অঞ্চল তথা পার্বত্য এলাকাকে নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে পশ্চিমারা।

কোনো কোনো বিশ্লেষকের মতে, শুধু বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল নয়, ভারতের নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও মিজোরামকে একত্র করে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। কেউ কেউ মনে করে, বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও মিয়ানমারের কিছু অঞ্চল নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের সংশোধিত পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই অঞ্চলে একটি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যই বিদেশি রাষ্ট্রের মদদে কেএনএফ নতুন করে সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে। খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পাহাড়ে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশি মদদদাতারা কেএনএফকে ফ্রন্টলাইনে এনে নতুন করে সহিংসতা শুরুর চেষ্টা করছে।

এ কথা অনস্বীকার্য যে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাকে ঘিরে এনজিও ও আন্তর্জাতিক খ্রিস্টান লবি সুদীর্ঘকালব্যাপী নানামুখী চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, সমাজ ও মানবতার সেবার ছদ্মাবরণে তারা মূলত পার্বত্য এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে ইউরোপীয় জীবনাচার ও দর্শনের দিকে আকৃষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছে। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির শাসনামলে মিশনারিরা ভিনদেশি সংস্কৃতির বিকাশ ও ধর্মান্তরের যে প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন, পর্যায়ক্রমে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলে তার ক্রমবিকাশ অব্যাহত থাকে। স্কুল প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, হাসপাতাল স্থাপন, ঋণ প্রদান, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, দারিদ্র্য বিমোচন, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট, নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি জনপ্রিয় কর্মসূচির আড়ালে রয়েছে এ দেশে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার ও পশ্চিমা সংস্কৃতি প্রসারের নীল নকশার বাস্তবায়ন।

পাহাড়ি যেসব জনগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম, তাদের প্রায় শতভাগ খ্রিস্টান হয়ে গেছে অনেক আগেই। পাহাড়িদের পৃথক সত্তা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা নিশ্চিত করতে দেশে-বিদেশে ইনিয়েবিনিয়ে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের কথা প্রচার করা হচ্ছে। পাহাড়িদের নিজস্ব সংস্কৃতি অটুট রাখার জন্য কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনকারী পশ্চিমা গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ মদদে চলা ধর্মান্তরিতকরণ সেখানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে উপজাতীয়দের নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ আজ আক্ষরিক অর্থেই বিপন্ন। তাদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।

রেজাউল হক হেলাল খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাজেক ইউনিয়নে ১০ হাজার উপজাতির সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ও ধর্মান্তরের এক চাঞ্চল্যকর সংবাদ দিয়েছেন। উপজাতীয়দের ভাষা, সংস্কৃতি সবই ছিল, আজ কিছুই নেই। শুধু ইংরেজিতে কথা বলাই নয়; সেখানকার অধিবাসীরা গিটার বাজিয়ে ইংরেজি গান গায়; মেয়েরা পরে প্যান্ট-শার্ট-স্কার্ট; এদের দেখে মনে হয় যেন বাংলার বুকে এক খণ্ড ইউরোপ। এরই মধ্যে পাংখু উপজাতি পুরোপুরি খ্রিস্টান হয়ে গেছে; বদলে গেছে তাদের ভাষা; এমনকি তাদের ভাষার হরফও ইংরেজি বর্ণমালায় রূপান্তর করা হয়েছে। এনজিও নাম ধারণ করে কয়েকটি খ্রিস্টান মিশনারি এই দুর্গম এলাকায় হাসপাতাল, বিনোদনকেন্দ্র, চার্চ ইত্যাদি গড়ে তুলেছে। নিজস্ব উপজাতীয় আদি ভাষা ও সংস্কৃতি এরা হারিয়ে ফেলেছে।

প্রশ্ন হলো, পশ্চিমারা এই অঞ্চলে কেন একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানাতে চায়? শুধু খ্রিস্ট ধর্ম ও পশ্চিমা সংস্কৃতিতে দীক্ষিত করার উদ্দেশ্যেই কি তাদের এই প্রয়াস? উত্তর, অবশ্যই না। যেসব কারণে পশ্চিমারা খ্রিস্টান মিশনারি ও এনজিওগুলোকে ব্যবহার করে একটি আশ্রিত খ্রিস্টান রাষ্ট্র তৈরি করতে চায় তার মধ্যে অন্যতম হলো :

এক. ভূ-রাজনীতি, ভূ-অর্থনীতি ও ভূ-কৌশলগত কারণে এই অঞ্চল পশ্চিমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খ্রিস্টান রাষ্ট্র সৃষ্টির মাধ্যমে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো প্রতিরক্ষাবলয় সৃষ্টি করতে চায়।

দুই. ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মিলনস্থলের কাছাকাছি বঙ্গোপসাগরের এমন এক স্থানে বাংলাদেশের অবস্থান যার পাশ দিয়েই রয়েছে আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের চ্যানেল। অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক বিবেচনায় দারুণ সম্ভাবনাময় ভূ-কৌশলগত অবস্থান বাংলাদেশের। এই অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য সেন্ট মার্টিন কিংবা হাতিয়া কিংবা বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের কিছু অঞ্চল কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনকে কোণঠাসা করতে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী গোষ্ঠীকে সহায়তার লক্ষ্যে সম্প্রতি ‘বার্মা অ্যাক্ট’ প্রণয়ন করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলে সেন্ট মার্টিন কিংবা হাতিয়া পশ্চিমাদের হস্তগত হওয়া সুদূরপরাহত।

তিন. যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্র দেশগুলো ভারত মহাসাগরে চীনের আধিপত্য কমাতে তৎপর। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়াকে সাদা মনে গ্রহণ করেনি পশ্চিমারা। তাই ইন্দো-প্যাসিফিক জোট করে বাংলাদেশকে সেই জোটে যুক্ত করতে চাইছে পশ্চিমারা। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’—এই পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশ কোনো সামরিক জোটে যোগ দিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছে। বড় শক্তিগুলোর আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে ঘুঁটি হিসেবে পার্বত্য অঞ্চলে একটি অনুগত খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পশ্চিমাদের জন্য তাই অতি গুরুত্ববাহী। ভূ-রাজনীতির এমন এক সমীকরণে নতুন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।

চার. ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত, পশ্চিমাদের একচ্ছত্র আধিপত্য কমাতে চীন-রাশিয়া-ইরানের নেতৃত্বে বহুকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার উঁকিঝুঁকি ও চীন-তাইওয়ান উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চোখ-রাঙানি লক্ষণীয়। এ অবস্থায় এই অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মরিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর হাতিয়ার।

খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পশ্চিমাদের পরিকল্পনা হলো পার্বত্য অঞ্চলে ধর্মান্তরিত উপজাতীয়দের সংখ্যা পর্যাপ্ত পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে তাদের দিয়ে গণভোটের দাবি তোলা হবে। পশ্চিমারা তখন জাতিসংঘে গণভোটের পক্ষে জোরালো চাপ সৃষ্টি করবে। এভাবে প্রতিষ্ঠা করবে তাদের স্বপ্নের স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র। মিশনারি ও এনজিওগুলোর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলো মূলত মানুষ ধরার ফাঁদ ও ষড়যন্ত্রের নীল কুঠি। পার্বত্য চট্টগ্রামে খ্রিস্টান হয়ে যাওয়া পাহাড়িদের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি যারা ঘটাচ্ছে তারা যদি পাহাড়িদের রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের শিকড় কেটে দিতে সক্ষম হয় তবে তা বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠবে। খ্রিস্টান মিশনারি, পশ্চিমা দাতাগোষ্ঠী ও এনজিওচক্র পার্বত্য চট্টগ্রামকে টার্গেট করে সামনে এগোচ্ছে। পরিস্থিতি এভাবে অব্যাহত থাকলে গোটা পার্বত্য অঞ্চল রাজনৈতিকভাবে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।

এক ইলিশ মাছের দাম ৬ হাজার ৭০০ টাকা

সাম্প্রতিক আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ এ কথারই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চলে দক্ষিণ সুদান ও ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুরের মতো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোর তৎপরতা এগিয়ে চলেছে। সাধু সাবধান!

লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]
সূত্র : কালেরকণ্ঠ।

জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
নতুন পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠার বাংলাদেশের বুকে মতামত মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার রাষ্ট্র
Related Posts
বুলু

সমন্বয়ের রাজনীতির ধারক খালেদা জিয়া : বরকত উল্লাহ বুলু

November 30, 2025
ক্ষমতা

‘জামায়াতের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব ছিল আওয়ামী লীগের’

November 27, 2025
The Digital Revolution

ডিজিটাল বিপ্লব: অনলাইন সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্রের লড়াই

November 26, 2025
Latest News
বুলু

সমন্বয়ের রাজনীতির ধারক খালেদা জিয়া : বরকত উল্লাহ বুলু

ক্ষমতা

‘জামায়াতের সমর্থন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব ছিল আওয়ামী লীগের’

The Digital Revolution

ডিজিটাল বিপ্লব: অনলাইন সাংবাদিকতা ও গণতন্ত্রের লড়াই

ফিনল্যান্ড : সুখকর ছিল না সবচেয়ে সুখী দেশটির স্বাধীনতার ইতিহাস

এ্যানী

‘আমরা সবাই বাংলাদেশি—এটাই বিএনপির রাজনীতি’: এ্যানী

Hasina Upodastha bow

সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব নিলেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টার স্ত্রী, আমিরাতে বিপুল সম্পদ!

রাজনীতি

‘খুনি হাসিনার পক্ষ যারা অবলম্বন করবে তাদের নির্মূল করাই আমাদের রাজনীতি’

ভোট

‘কেউ ভোট হাইজ্যাক করতে চাইলে, আমরা যুবক হয়ে বিস্ফোরিত হব’

Hasina

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর মীর কাসেম আলীর মেয়ের আবেগঘন পোস্ট

আতঙ্ক

‘বর্তমানে যেই অগ্নিসন্ত্রাস, ককটেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, তার জনক একজনই’

  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • অর্থনীতি
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • শিক্ষা
  • আরও
    • লাইফস্টাইল
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • বিভাগীয় সংবাদ
    • স্বাস্থ্য
    • অন্যরকম খবর
    • অপরাধ-দুর্নীতি
    • পজিটিভ বাংলাদেশ
    • আইন-আদালত
    • ট্র্যাভেল
    • প্রশ্ন ও উত্তর
    • প্রবাসী খবর
    • আজকের রাশিফল
    • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
    • ইতিহাস
    • ক্যাম্পাস
    • ক্যারিয়ার ভাবনা
    • Jobs
    • লাইফ হ্যাকস
    • জমিজমা সংক্রান্ত
© 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.