ফাঁদ পাতলেন ভারতীয় প্রেমিকা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বাংলাদেশি প্রেমিক!

জুমবাংলা ডেস্ক : ফাঁদ পাতলেন ভারতীয় প্রেমিকা, অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বাংলাদেশি প্রেমিক! প্রেমের টানে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা থেকে মোংলা ছুটে আসেন এক ব্যবসায়ী। দেখা করতে এসেই অপহরণের ফাঁদে পড়েন প্রেমিক।

তবে অল্পের জন্য অপহরণের হাত থেকে রক্ষা পেলেও খোয়া গেছে নগদ টাকা, মোবাইলসহ সঙ্গে থাকা মূল্যবান মালামাল। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১০ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মোংলা বন্দর এলাকা বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার (১১ জুন) দুপুরে আটক দুই জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম আ. রহমান অঙ্কন (২৬)। তিনি ঢাকার মোহাম্মদপুর কাটাসুর এলাকার আ. মান্নান মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন স্টেশনারী ব্যবসায়ী।

শুক্রবার রাতে বন্দরের ৫ নিরাপত্তা প্রহরী, বোট চালক ও ভারতীয় প্রেমিকা পিয়াংকা বাইনকে আসামি করে মোংলা থানায় মামলা একটি দায়ের করেন।

মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আ. রহমান অঙ্কনের সঙ্গে দেড় বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও এলাকায় দিপু বাইনের মেয়ে পিয়াংকা বাইনের (২৮)।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ দিনের আলাপচারিতায় ভারতীয় ওই নারীর সঙ্গে প্রমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল ভালোবাসা দিবসে দুজনের প্রথম দেখা হয় খুলনার সোনাডাঙ্গায়।

সোনাডাঙ্গার ৬নং রোডের যাত্রা ফ্রাকশিপ নামের আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দুজনে প্রায় ৫ দিন থাকেন বলে জানায় প্রেমিক অঙ্কন। সেখান থেকে ভারতীয় ওই নারী নিজ দেশে চলে গেলেও তাদের সম্পর্ক অটুট থাকে। দুজনার কথা হয় প্রতিনিয়ত। দ্বিতীয়বার ওই একই আবাসিক হোটেলে দেখা করার জন্য ঢাকা ও ভারত থেকে এসে পূর্ব পরিচয়ে অবস্থান করে।

একইসঙ্গে মোংলা বন্দরের নিরাপত্তা প্রহরী জাফরের সঙ্গে সু-সম্পর্ক রয়েছে ওই ভারতীয় নারী পিয়াংকা বাইনের। দুজনে মিলে ঢাকার ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে তারা।

সবশেষ শুক্রবার ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেখা করার জন্য ভারত থেকে পিয়াংকা বাইন মোংলায় আসে এবং তাকেও এখানে আসতে বলে। শুক্রবার দুপুরে প্রেমিক অঙ্কন মোংলায় এসে প্রেমিকা পিয়াংকার সঙ্গে দেখা করে।

তবে সেখানে আগে থেকেই বন্দরের ৫ নিরাপত্তা কর্মচারীসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী যুবককে অপহরণের জন্য প্রস্তুত করে রাখে প্রেমিকা পিয়াংকা ও জাফর।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সুন্দরবন দেখানোর কথা বলে সু-কৌশলে একটি জালিবোট (নৌযান) ভাড়া করে জাফর। এসময় অন্যদের সঙ্গে নৌযানে বন্দরের পশুর নদীর মাঝ পথে নিয়ে তাকে হাত-পা বেঁধে মারধর শুরু করে এবং ব্যবসায়ীকে বিব’স্ত্র করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে অপহরণকারীরা। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীর নগদ টাকা, মোবাইল ও মানিব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল ছিনিয়ে নেয় মোংলা বন্দরের নিরাপত্তা কর্মচারীরা।

বিষয়টি নদীতে অন্যান্য নৌযান কর্মীরা দেখে ফেলায় সেখান থেকে দ্রুত তাকে বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে ওঠানোর চেষ্টা করে অপহরণকারীরা।

এসময় ব্যবসায়ী অঙ্কনের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাকে রক্ষা করে এবং পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। এসময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বন্দরের নিরাপত্তা প্রহরী জামাল হোসেন ও বোট চালক ওবায়দুর হোসেনকে আটক করে পুলিশ।

কিন্তু কৌশলে ভারতীয় প্রেমিকা পিয়াংকা বাইন ও অন্যরা দ্রুত সেখান থেকে সটকে পড়ে। শুক্রবার রাতে বন্দরের ৫ নিরাপত্তা প্রহরী, বোট চালক ও ভারতীয় প্রেমিকা পিয়াংকা বাইনকে আসামি করে মোংলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রেমের ঘটনায় ঢাকার ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় বন্দরের কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী জড়িত রয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দুজনকে আটক করেছে।

এছাড়া ভারতীয় প্রেমিকা ও বন্দরের ৫ নিরাপত্তা প্রহরীসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা নেয়া হয়েছে। মামলা দায়ের শেষে শনিবার দুপুরে আটক ২ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় মোংলা থানার এ কর্মকর্তা।

অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেল ৬টি পাতিসরালির ছানা