বিনোদন ডেস্ক :সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতায় কাজ নিয়ে বাংলাদেশের কয়েকজন তারকাকে ঘিরে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে। একসময় সেখানে কাজ করলেও, এখন স্থায়ীভাবে কলকাতায় বসবাসের চিন্তা করছেন তারা।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর থেকেই এই তারকারা সমালোচনার মুখে পড়েছেন। আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে দেশের বিনোদন জগতে তাদের কাজের সুযোগ কমে গেছে। বলা যায়, রাজনৈতিক পক্ষপাত তাদের কর্মজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনের পর অনেকেই অন্তরালে চলে যান। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় কাজের সন্ধানে কলকাতাকেই নিরাপদ মনে করছেন তারা। এরই মধ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের চিন্তাও করছেন। তাদের মধ্যে আছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ, নায়িকা নুসরাত ফারিয়া এবং অভিনেত্রী ও মডেল সোহানা সাবা।
৫ আগস্টের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকেই আড়ালে চলে যান আরিফিন শুভ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নির্মিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় নামমাত্র এক টাকায় অভিনয় করে আলোচনায় আসেন তিনি। এ জন্য শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কারস্বরূপ পূর্বাচলে প্লটও পেয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নীরব ছিলেন। বরং সেই সময়ে নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের খবর সামনে এনে আন্দোলনের দিক ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেন।
আন্দোলনের পর গোপনে কলকাতায় গিয়ে ‘জ্যাজ সিটি’ নামে একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং করেন শুভ। পরিচালক সৌমিক সেনের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েই কলকাতায় স্থায়ী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। সেখানকার একটি গণমাধ্যমে তিনি নিজেই স্থায়ী হওয়ার ইচ্ছার কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি সচেতনভাবেই অরাজনৈতিক। অভিনয় ছাড়া কিছুই করি না। ব্যবসাও নেই। যদি সত্যি বিপদে পড়তাম, কলকাতায় বসে সাক্ষাৎকার দিতে পারতাম না।”
তার অভিনীত ‘নীলচক্র’, ‘নূর’, ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’ ও ‘লহু’ নামের চারটি সিনেমা এখনও দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
সরকার পরিবর্তনের পর চাপের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ অন্য শিল্পীরাও। অভিনেত্রী সোহানা সাবা আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তিনি আলোচিত ‘আলো আসবেই’ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যও ছিলেন, যা ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ব্যবহার করা হতো। এমনকি সেই গ্রুপে ছাত্রদের ওপর সহিংস পরিকল্পনার কথাও উঠে এসেছিল। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।
সাবা বর্তমানে দেশে থাকলেও, কলকাতায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করছেন। সেখানকার নির্মাতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি কলকাতার সিনেমার অন্ধ ভক্ত এবং সেখানে কাজ পেলে স্থায়ী হতে চান।
অন্যদিকে নুসরাত ফারিয়া এখন ঢাকার চেয়ে কলকাতায় বেশি ব্যস্ত। ‘মুজিব’ সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্রে অভিনয় করে তিনি ছাত্র আন্দোলনের সময় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। তখন দেশ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করছিলেন এবং সেখান থেকে সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা ছড়ানোর মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের পর গোপনে দেশে ফিরে মিডিয়া থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।
গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া তার একটি সিনেমা বক্স অফিসে ভালো না করায়, তার ক্যারিয়ারে নতুন করে চাপ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে নতুন কোনো প্রজেক্টেও যুক্ত হতে পারছেন না তিনি। তাই তাকেও কলকাতার দিকেই ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে। এক সাক্ষাৎকারে দেশের নির্মাতাদের উদ্দেশে অভিযোগ করে বলেন, তারা তাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেননি, আর কলকাতার নির্মাতারা তাকে বেশি মূল্যায়ন করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।