বিনোদন ডেস্ক : চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে বারবার আদালতের দারস্থ হওয়া শিল্পীদের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও প্রযোজক সোহেল রানা। সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার হাইকোর্টে রিট করার এক সপ্তাহের মাথায় তিনি এই মন্তব্য করলেন।
নিপুণের রিটের সমালোচনা করে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সোহেল রানা বলেন, ‘গত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কেউ শিল্পী সমিতির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আদালতে যায়নি। ছোট ছোট যে সমস্যাগুলো হয়েছে, তার সমাধান শিল্পীরাই করেছে। গতবার প্রথম নিপুণ আদালতে গেছে। এবারও তাই করল।’
নায়ক বলেন, ‘গতবার তার (নিপুণ) সঙ্গে প্যানেলের ১১ জন ছিল। এবার তার প্যানেল থেকে নির্বাচিত হওয়া তিনজন কিন্তু ইতোমধ্যে নতুন কমিটির সঙ্গে বসে মিটিং করেছে। আগের কমিটির মতো আলাদা থাকেনি। এবার আদালতে যাওয়ার বিষয়টি অকল্পনীয়, কল্পনাতীত। শিল্পী সমিতির আদালতের দ্বারস্থ হওয়া শিল্পীদের জন্য লজ্জার।’
নির্বাচনের পর নিপুণ মালা দিয়ে বিজয়ীদের বরণ করে নিয়েছেন উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, ‘ওই দৃশ্য দেখার পর আমিও তাকে বাহবা দিয়েছিলাম। এক মাস না পেরোতেই সে আদালতে গেল। পুরো বিষয়টি আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’
নিপুণ আলোচনায় থাকতেই হয়তো এবার হাইকোর্টে রিট করেছেন বলে দাবি করেন সোহেল রানা। তিনি বলেন, ‘আদালত যদি সত্যিকার অর্থে সব কিছু বিচার-বিবেচনা করে দেখেন, তাহলে তার অভিযোগ কোনোটাই গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা নয়। আদালতের ওপর আমাদের দৃঢ় আস্থা আছে।’
গত ১৯ এপ্রিল এফডিসিতে অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী সমিতির ২০২৪-২৬ মেয়াদের নির্বাচন। সেখানে সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ ভোটের ব্যবধানে অভিনেতা ও প্রযোজক মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কাছে হেরে যান নিপুণ। সে সময় তিনি ডিপজলসহ বিজয়ী সবাইকে ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে নেন।
কিন্তু নির্বাচনের প্রায় এক মাস পর গত ১৫ মে আদালতে রিট করেন নিপুণ। সেখানে তিনি ভোটে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তোলেন। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী ডিপজলের দায়িত্ব পালনে স্থগিতাদেশ চেয়ে নতুন নির্বাচনের দাবিও করেন।
নিপুণের করা সেই রিটের শুনানি শেষে গত সোমবার সাধারণ সম্পাদক পদের ওপর স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি নিপুণের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশও দেন। কারণ, এই মন্ত্রণালয়ের অধীনেই নিবন্ধিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
এর আগে ২০২২-২৪ মেয়াদের নির্বাচনেও সাধারণ সম্পাদক পদে হেরেছিলেন নিপুণ। সেবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জায়েদ খান। কিন্তু জিতেও চেয়ারে বসতে পারেননি এই নায়ক। নিপুণ তার বিরুদ্ধে নির্বাচনি আপিল বোর্ডে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করলে তারা জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন। পাশাপাশি নিপুণকে জয়ী ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পর হাইকোর্টে রিট করেন জায়েদ খান। হাইকোর্ট বাতিল করে নির্বাচনি আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত। তার প্রেক্ষিতে আবার নিপুণ আবেদন করেন উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে। সেখানে কয়েক মাস বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা শুনানির পর সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানের দায়িত্ব পালনের ওপর স্থগিতাদেশ বহালই থাকে।
ফলে নিপুণই গত দুই বছর ভোটে না জিতেও শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন। এবারও নায়িকা সেই পথেই হাঁটলেন। আদালতের মাধ্যমে তিনি বসতে চান সমিতির চেয়ারে। কিন্তু এবার কী তার চাওয়া পূরণ হবে? এখন সেটাই দেখার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।