লাইফস্টাইল ডেস্ক : বাঁধা কপি রবি মৌসুমের একটি প্রধান সবজি ফসল,। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই বাঁধাকপি চাষ হয়ে থাকে। এদেশে বাঁধাকপির যে সকল জাত গুলো রয়েছে প্রায় সব হাইব্রিড ও বিদেশী জাত। যে সকল জাতের বাঁধাকপি চাষ করা হয়ে থাকে তার সব জাতের বীজ এদেশে উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। সে সব জাতের বীজ উৎপাদন করা যায় সে জাত গুলে হলে বারি উদ্ভাবিত জাতগুলো। নিচে বাঁধাকপি চাষ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো-ধাকপি পুষ্টিকর পাতা জাতীয় সবজি।
বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ‘ এবং বিটামিন বি, ও ভিটামিন সি রয়েছে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য বাঁধাকপি বেশ উপকারী। এবং যাদের দেহে চর্বি বেশি তাহারা বাঁধাকপি খেয়ে উপকার পেতে পারেন।বাঁধা কপির জাত ভেদে প্রতি শতকে ২-৩ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়, এবং হেক্টর প্রতি ৫০০-৭০০ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বাঁধাকপির চারা প্রথমে বীজতলায় উৎপাদন করতে হয় এবংপরবর্তী সময়ে জমিতে লাগানো হয়। বীজতলায় জন্য বালি, মাটি ও জৈবসার ভালাভাবে মিশিয়ে ঝুরঝুরা করে নিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হয়। বীজতলার আকার ১ মিটার পাশে ও লম্বায় ৩ মিটার হওজমি তৈরির জন্য গভীর ভাবে ৪-৫টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে তৈরি করতে হবে।শেষ চাষের সাথে জমিতে প্রয়োজনীয় সার সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।জমি তৈরি হয়ে গেলে মাটি থেকে ১৫-২০ সে.মি. উঁচু ও এক মিটার চওড়া করে বেড তৈরি করে নিতে হবে।
বেড থেকে বেডের মাঝখানের দুরত্ব কমপক্ষে ৩০ সে. মি. রাখতে হবে এবং বেডের মাঝে নালারাখতে হবে।বীজ বপনের পর চারার বয়স ৩০-৩৫ দিন হলে বা ৫/৬টি পাতা বিশিষ্ট ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা সুস্থ ও সবল চারা মুল জমিতে রোপন করতে হবে। রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দুরত্ব ৬০ সেন্টিমিটার এবং প্রতি সারিতে চারা থেকে চারার দূরত্ব ৪৫ সেন্টিমিটার দিলে ভাল হয়।প্রতি শতকে ১৫০টির মত বাঁধাকপির চারার প্রয়োজন হয়।
চারা বিকেল বেলাতে জমিতে রোপণ করতে হয়।আমরা জানি ভালাফলন পেতে হলে জমিতে পরিমাণ মতো সার প্রয়োগের বিকল্প নেই। জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুনাগুন যেমন বজায় থাকে তেমনি পরিবেশ ভালো থাকে। জমিতে ভালো ফলন পেতে হলে রাসায়ানিক সার নয় জৈব সার ব্যবহার করুণ।
বাঁধাকপির জন্য প্রতি শতক প্রতি ১২৫ কেজি গোবর সার,ইউরিয়া ১ কেজি, টিএসপি ৮০০ গ্রাম, এমওপি ৬৫০ গ্রাম সার দিতে হবে। জমি তৈরির সময় সম্পূর্ন গোবর ও টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সার ২ কিস্তিতে চারা রোপণের ২০-২৫ দিন পর একবার এবং ৩০-৪০ দিন পর আর একবার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
সার দেয়ার পর পরই জমিতে সেচ দিতে হবে। এ ছাড়া ২-৩ দিন পর পরই সেচ দিতে হবে। জমিতে পানির অভাব দেখা দিলে সহজে ও দ্রুত সেচ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সেচ দেওয়ার সুবিধার জন্য গাছ বড় হবার সাথে সাথে দুই সারির মাঝখান নালা তৈরি করে দিতে হবে। বাঁধাকপির রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের মধ্যে সবথেকে ক্ষতিকর পোকা হল মাথা খেকো লেদা পোকা। নাবী জাতের সরুই পোকা বা ডায়মন্ড ব্যাক মথ বেশি ক্ষতি করে।
বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করলে পুষ্পমঞ্জরীকে জাব পোকার হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। অন্যান্য পোকার মধ্যে ক্রসোডলমিয়া লেবাঁধাকপির রোগের মধ্যে পাতায় দাগ ও কালো পচা রোগ প্রধান সমস্যা। এছাড়া চারা ঢলে পড়া বা ড্যাম্পিং অফ, মাথা পচা বা গ্রে মোল্ড, ক্লাব রুট বা গদাই মূল, মোজেইক, পাতার আগা পোড়া ইত্যাদি রোগও হয়ে থাকে।
মুল জমিতে চারা রোপণের ৬০-৯০ দিনের মধ্যে বাঁধাকপি সংগ্রহ করা যায়। প্রতিটি বাঁধাকপি গড়ে ২.৫ কেজি ওজন হয়ে থাকে। প্রতি শতকে ১৫০-১৮০ কেজি, হেক্টরে ৭৫-৮০ টন ফলন হয়ে থাকে। প্রভাতী জাতের বাঁধাকপির ১১০-১১০ টন/হেক্টর ফলন হয়ে থাকে।একজন চাষী যদি বাঁধাকপি চাষ পদ্ধতি জেনে বুঝে করেন তাহলে চাষী লাভবান হবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।