রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে এক টুকরো আলো। ছোট্ট ফ্ল্যাটের বারান্দায় দাঁড়িয়ে রাইয়ান আর তানজিনা তাকিয়ে আছে নিচের রাস্তায়। তাদের চোখে সেই একই স্বপ্ন – নিজের চাবি, নিজের দরজা, নিজের ঠিকানা। গত ছয় মাস ধরে ঢাকার উত্তরে একটি ফ্ল্যাটের পেছনে ছুটছেন তারা। এজেন্টের পর এজেন্ট, দেখার পর দেখা, দরদামের পর দরদাম। কিন্তু গতকাল, যখন প্রায় দলিল সইয়ের মুহূর্তে একজন আইনজীবীর পরামর্শে তারা দলিলের একটি ক্ষুদ্র কিন্তু মারাত্মক ত্রুটি খুঁজে পেলেন, রাইয়ানের হাতের মুঠোয় থাকা চাবিগুলো যেন বালির মতোই ফসকে গেল। হৃদয় ভেঙে টুকরো। এত দিনের সঞ্চয়, এত রাতের ঘুম হারাম, এত স্বপ্নের পথে শুধু একটু বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির ঘাটতির জন্য? তাদের গল্পটি বিচ্ছিন্ন নয়; এটি লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশীর কণ্ঠস্বর, যারা নিজের ছাদ খুঁজতে গিয়ে পড়েন চোরাবালিতে। নিজের বাড়ি কেনা মানে শুধু চারটি দেয়াল কেনা নয়, এটি একটি প্রজন্মের সংগ্রামের ফসল, অসংখ্য কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত স্বপ্নের স্পর্শ। কিন্তু এই স্বপ্ন যেন মরীচিকা না হয়, যেন দলিলের পাতায় হারিয়ে না যায় আপনার সারা জীবনের শ্রম, তার জন্য দরকার অস্ত্র – প্রজ্ঞা, সচেতনতা, এবং অকাট্য বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি। চলুন, জেনে নিই, কিভাবে এই যুদ্ধে আপনি হতে পারেন বিজয়ী।
বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি: আর্থিক ভিত মজবুত করাই প্রথম ধাপ
বাড়ি কেনার কথা ভাবলেই প্রথমে যে ছবি মাথায় আসে, তা হল টাকার গাদা। কিন্তু শুধু টাকা থাকলেই তো হবে না, সেটা সঠিকভাবে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হল আপনার আর্থিক অবস্থাকে কঠোরভাবে মূল্যায়ন করা এবং সেভাবেই এগোনো।
- আয়-ব্যয়ের কঠোর হিসাব: নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, মাসিক আয়ে কতটুকু বাড়ি কেনার কিস্তি (ইএমআই) বহন করতে পারবেন? বিশেষজ্ঞরা সাধারণত পরামর্শ দেন, আপনার মাসিক আয়ের ৩০-৪০% এর বেশি ইএমআইতে বাঁধা উচিত নয়। ধরা যাক, আপনার মাসিক আয় ৫০,০০০ টাকা। তাহলে ইএমআই হওয়া উচিত সর্বোচ্চ ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মধ্যে। এর বেশি হলে আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, জরুরি খরচ, সঞ্চয় – সবই হুমকির মুখে পড়বে। একটি বিস্তারিত মাসিক বাজেট করুন। আয় (বেতন, ব্যবসার মুনাফা, ভাড়া ইত্যাদি), বাধ্যতামূলক ব্যয় (ভাড়া, ইউটিলিটি, খাবার, পরিবহন, শিক্ষা), ঋণের কিস্তি, বিনোদন, স্বাস্থ্য, জরুরি তহবিল এবং সঞ্চয় – প্রতিটি খাত আলাদাভাবে লিখুন। বাড়ি কেনার পরিকল্পনায় কোন খাত কতটুকু কাটছাঁট করা যায় বা কোন অপ্রয়োজনীয় ব্যয় বাদ দেয়া যায়, তা খুঁজে বের করুন।
- ডাউন পেমেন্টের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ: বাংলাদেশে সাধারণত বাড়ির মোট মূল্যের ২০% থেকে ৩০% ডাউন পেমেন্ট দিতে হয়। ধরা যাক, আপনার পছন্দের ফ্ল্যাটের দাম ৫০ লক্ষ টাকা। তাহলে আপনাকে প্রস্তুত করতে হবে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা নগদ। এটি বিশাল অঙ্ক। এই অর্থ জোগাড় করতে হবে সঞ্চয়, বিনিয়োগ থেকে ফেরত, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বা পরিবারের সহায়তা থেকে। একটি রিয়েলিস্টিক সময়সীমা নির্ধারণ করুন এবং প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক সঞ্চয়ের অভ্যাস তৈরি করুন। মনে রাখবেন, ডাউন পেমেন্ট যত বেশি দেবেন, ঋণের পরিমাণ তত কমবে, সুদ কম দিতে হবে, ইএমআইও হালকা হবে।
- ক্রেডিট স্কোর: আপনার আর্থিক সততার পরিচয়পত্র: বাংলাদেশে ক্রেডিট স্কোরের ধারণা ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। সিআইবি (ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো) ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ঋণ গ্রহীতাদের তথ্য সংগ্রহ করে একটি স্কোর তৈরি করে। নিয়মিত ঋণ শোধ, কার্ড বিল পরিশোধে দেরি না করা ইত্যাদি আপনার স্কোর ভালো রাখে। একটি ভালো ক্রেডিট স্কোর (যেমন ৬৫০+) ঋণ পাওয়াকে সহজ করে, কম সুদের হার (Interest Rate) পেতে সাহায্য করে এবং ঋণের শর্তও ভালো পেতে পারেন। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি হিসেবে এখনই আপনার ক্রেডিট রিপোর্ট চেক করুন। ভুল তথ্য থাকলে সংশোধন করুন এবং ভবিষ্যতে সময়মতো সব বিল পরিশোধের মাধ্যমে স্কোর উন্নত করুন। সিআইবি বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে আপনি আপনার ক্রেডিট রিপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন।
- ঋণের প্রাক-অনুমোদন (Pre-Approval): শক্তিশালী অবস্থান থেকে দরদাম: বাড়ি খোঁজা শুরু করার আগেই এক বা একাধিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাউজিং লোনের জন্য প্রাক-অনুমোদন নিয়ে নিন। এর জন্য আপনাকে আপনার আয়ের প্রমাণ (স্যালারি স্লিপ, ইনকাম সার্টিফিকেট), ব্যাংক স্টেটমেন্ট, পরিচয়পত্র, সম্পদের বিবরণী ইত্যাদি জমা দিতে হবে। ব্যাংক আপনার আর্থিক অবস্থা যাচাই করে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত ঋণ দেয়ার শর্তসাপেক্ষ সম্মতি দেবে। এর সুবিধাগুলো বিশাল:
- আপনার ক্রয়ক্ষমতা স্পষ্ট: আপনি জানতে পারবেন আপনি কোন মূল্য সীমার মধ্যে বাড়ি খুঁজবেন (যেমন, প্রাক-অনুমোদন ৪০ লক্ষ টাকা হলে, ডাউন পেমেন্ট মিলিয়ে আপনি সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকার বাড়ি দেখতে পারেন)।
- বিক্রেতার কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা: প্রাক-অনুমোদন পত্র দেখালে বিক্রেতা বা এজেন্ট জানেন যে আপনি সিরিয়াস ক্রেতা এবং আপনার অর্থ জোগাড়ের সক্ষমতা আছে। দরদামে আপনার অবস্থান শক্তিশালী হয়।
- প্রক্রিয়া দ্রুততর: মূল ঋণের আবেদন প্রক্রিয়া অনেক দ্রুত শেষ হয়, যেহেতু প্রাথমিক যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে।
- জরুরি তহবিল: অপ্রত্যাশিতের বিরুদ্ধে ঢাল: বাড়ি কেনার পর হঠাৎ বড় ধরনের মেরামত, চাকরি চলে যাওয়া, বা পরিবারে অসুস্থতা আসতে পারে। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে, আপনার জরুরি তহবিলে কমপক্ষে ৬ মাসের মাসিক ব্যয় সমপরিমাণ টাকা রাখুন। এই টাকা সহজলভ্য কিন্তু ঝুঁকিহীন জায়গায় (যেমন সঞ্চয়ী বা ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট) রাখুন। এই তহবিলকে কখনোই বাড়ির ডাউন পেমেন্ট বা শো-রুমের সোফা কেনার জন্য ব্যয় করবেন না। এটি শুধু জরুরি পরিস্থিতির জন্য।
বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি: লোভ সংবরণ এবং সঠিক সম্পত্তি নির্বাচনের কূটকৌশল
অর্থের ব্যবস্থা হয়ে গেলেই তো কাজ শেষ নয়! বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট মার্কেট, বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম বা খুলনার মতো বড় শহরগুলোতে, জটিল এবং অনেক সময় বিভ্রান্তিকর। এখানে বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি মানে শুধু টাকা নয়, মানে চোখকে ফাঁকি না দেয়া, লোভকে দমন করা এবং গভীরভাবে খোঁজখবর নেয়া।
- স্পষ্ট প্রয়োজন ও অগ্রাধিকার নির্ধারণ: আপনি কী চান? পরিবারের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চাহিদা মাথায় রাখুন।
- অবস্থান (Location): এটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। অফিস/শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিকটবর্তী? পরিবহন সুবিধা (মেট্রোরেল, বিআরটি রুটের কাছাকাছি?)? বাজার, হাসপাতাল, পার্কের নাগাল? এলাকার নিরাপত্তা কেমন? জলাবদ্ধতা সমস্যা আছে কি? (শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার আশেপাশে বা উত্তরা হাউজিং-এর কিছু অংশে জলাবদ্ধতা বিখ্যাত!)। রাতের বেলা এলাকাটা কেমন লাগে, একবার দেখে আসুন। ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা (যেমন ঢাকার উত্তরায় প্রস্তাবিত নতুন বাণিজ্যিক জোন) সম্পর্কে ধারণা নিন।
- সম্পত্তির ধরন: ফ্ল্যাট (অ্যাপার্টমেন্ট)? স্ট্যান্ড অ্যালোন হাউজ (প্লটে বাড়ি)? কমার্শিয়াল স্পেস? কোন ফ্লোর চান? লিফট সুবিধা আছে কি? বাসার আকার (বেডরুম সংখ্যা, বাথরুম, বারান্দা, রান্নাঘর)? কোন নির্দিষ্ট ফ্ল্যাট সাইজ (যেমন ১২০০, ১৪০০ বর্গফুট)?
- বাজেটের মধ্যে বাস্তবসম্মত অপশন: আপনার প্রাক-অনুমোদিত ঋণ এবং ডাউন পেমেন্ট মিলিয়ে যে সর্বোচ্চ বাজেট, তার চেয়ে ১০-১৫% কম দামের বাড়িগুলো খুঁজুন। দরদামের জন্য জায়গা রাখুন। ‘ড্রিম হোম’ এর ফাঁদে পা দেবেন না যার দাম আপনার সাধ্যের বাইরে। বাস্তববাদী হোন।
- গভীর গবেষণা ও মার্কেট নলেজ: বাড়ি কেনা মানে শুধু চার দেয়াল কেনা নয়, একটি সম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম কেনা।
- এলাকাভিত্তিক দর নির্ধারণ: আপনার পছন্দের এলাকায় অনুরূপ সম্পত্তির বর্তমান মার্কেট রেট কত? বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম (বিক্রয়.কম, বাড়িঘর.কম, ইজল্যান্ড), পত্রিকার বিজ্ঞাপন এবং একাধিক রিয়েল এস্টেট এজেন্টের কাছ থেকে দামের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করুন। একই বিল্ডিং বা পাশাপাশি বিল্ডিংয়ে সম্প্রতি বিক্রি হওয়া ফ্ল্যাটের দাম জানার চেষ্টা করুন। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির এই ধাপটি দরদামে আপনাকে অসম্ভব শক্তিশালী করবে।
- বিল্ডার/ডেভেলপারের খোঁজখবর: বিল্ডার কে? তার পূর্ববর্তী প্রকল্পগুলো কোথায়? সেই প্রকল্পগুলোর মান কেমন? সময়মতো হস্তান্তর করেছে? কোন আইনি জটিলতা ছিল কি? বিল্ডিং কোড (Building Code) মেনেছে কি? অনলাইনে রিভিউ সার্চ করুন, পূর্ববর্তী ক্রেতাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করুন (যদি সম্ভব হয়)। রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (RJSC) থেকে কোম্পানির বৈধতা ও আর্থিক স্বাস্থ্য যাচাই করুন। খ্যাতনামা ও নির্ভরযোগ্য বিল্ডার বেছে নিন।
- প্রকল্পের অনুমোদন: প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (ঢাকার জন্য RAJUK, CDA, বা সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন; চট্টগ্রামের জন্য CDA, খুলনার জন্য KDA ইত্যাদি) থেকে অনুমোদিত কি? লেআউট প্ল্যান (Layout Plan) অনুমোদিত হয়েছে? বিল্ডিং অনুমোদন (Building Approval) আছে? এই তথ্য বিক্রেতা বা বিল্ডারের কাছ থেকে কালেকশন সাটিফিকেট বা অনুমোদনের কপি দেখে নিশ্চিত হোন। RAJUK এর ওয়েবসাইটে ঢাকা শহরের অনেক প্রকল্পের তথ্য পাওয়া যায়। অনুমোদনবিহীন প্রকল্পে বিনিয়োগ করবেন না। এটি ভবিষ্যতে বড় ধরনের আইনি ও আর্থিক সংকট তৈরি করতে পারে।
- শারীরিক পরিদর্শন: চোখ কান খোলা রেখে: শুধু ব্রোশার বা এজেন্টের কথায় ভুলবেন না। একাধিকবার, ভিন্ন সময়ে (দিনে, সন্ধ্যায়, এমনকি বৃষ্টির দিনে) গিয়ে সম্পত্তি দেখুন।
- নির্মাণ মান: দেয়ালে ফাটল, সিলিং বা ফ্লোরে পানি রিঙ্কল (Leakage) এর চিহ্ন আছে কি? বাথরুম ও রান্নাঘরের পানি নিষ্কাশন (Sanitary) সঠিকভাবে কাজ করে? প্লাম্বিং, ইলেকট্রিক ওয়্যারিং, টাইলসের কাজের মান কেমন? লিফট (যদি থাকে) কোন ব্র্যান্ডের? রক্ষণাবেক্ষণ কেমন?
- সূর্যালোক ও বায়ু চলাচল: সব কক্ষে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস আসে কি? বারান্দা বা জানালার দিকে তাকালে কি মনে হয়? পাশের বিল্ডিং এত কাছাকাছি নয় তো?
- আবাসিক পরিবেশ: বিল্ডিংয়ে বসবাসরত অন্যান্য মালিক বা ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলুন। ম্যানেজমেন্ট কমিটি কেমন? নিরাপত্তা ব্যবস্থা কি? বর্জ্য ব্যবস্থাপনা? পার্কিং স্পেস? পানির সরবরাহ (সাবমারসিবল পাম্পের চাপ)? জেনারেটর সাপোর্ট? এই সবকিছুই আপনার ভবিষ্যৎ জীবনযাত্রার মান নির্ধারণ করবে।
- পরিবেশ ও নোঙর: আশেপাশে কি কি আছে? উঁচু ভবন, ফাঁকা জায়গা, বস্তি, শিল্পকারখানা? রাস্তার শব্দদূষণ কেমন? মসজিদ/মন্দিরের আযান/ঘণ্টাধ্বনি সরাসরি শোনা যায় কি? সন্ধ্যায় বা রাতে এলাকার পরিবেশ কেমন লাগে?
- দরদামের কৌশল: গবেষণা শেষে আপনার একটি সঠিক মূল্য ধারণা তৈরি হবে। বিক্রেতার চেয়ে কম দাম প্রস্তাব করুন (সাধারণত ১০-২০% কমে শুরু করা যায়), কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখান (যেমন, মার্কেটে অনুরূপ ফ্ল্যাটের দাম, বিল্ডিংয়ের অবস্থা, অতিরিক্ত মেরামতের খরচ ইত্যাদি)। প্রস্তাবের সময় আপনার প্রাক-অনুমোদন পত্র দেখিয়ে আপনার সিরিয়াসনেস বোঝান। নমনীয় হোন, কিন্তু আপনার সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করবেন না। মনে রাখবেন, ভালো ডিল পেতে ধৈর্য ধরতে হয়। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির এই ধাপে আবেগকে দূরে সরিয়ে রেখে যুক্তি দিয়ে দরদাম করুন।
বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতি: আইনী জটিলতার জঙ্গলে পথ খোঁজা
বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট লেনদেনে আইনী জটিলতা সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। দলিল জালিয়াতি, মালিকানা বিবাদ, অনুমোদনহীন স্থাপনা – প্রতিটি পদক্ষেপে বিপদ লুকিয়ে আছে। এখানেই বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ: আইনী যাচাই-বাছাই (Legal Due Diligence)।
- মালিকানা শুদ্ধতা (Title Search): এই ধাপ ছাড়া কোনো ক্রয় চুক্তি করবেন না। একজন অভিজ্ঞ এবং সৎ ল্যান্ড ল’য়ার (ভূমি আইনজীবী) নিযুক্ত করুন। তার কাজ:
- মিউটেশন রেকর্ড: সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা ভূমি অফিসে গিয়ে জমি/ফ্ল্যাটের খতিয়ান (ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে রেকর্ড) পরীক্ষা করা। দেখতে হবে বিক্রেতা বা তার পূর্বপুরুষের নামে রেকর্ড আছে কি? ক্রমিক মালিকানা হস্তান্তর (মিউটেশন) ঠিক আছে কি? কোন লিটিগেশন বা বিরোধ চিহ্নিত আছে কি? খতিয়ানে সম্পত্তির বর্ণনা (সীমানা, পরিমাণ) আপনার দেখার সম্পত্তির সাথে মেলে কি?
- দলিল যাচাই: বিক্রেতা কীভাবে মালিক হলেন (ক্রয় দলিল, দানপত্র, উত্তরাধিকার সনদ)? পূর্ববর্তী সকল দলিল পর্যালোচনা করে মালিকানা শৃঙ্খল (Chain of Ownership) নির্ভুল ও বাধাহীন কি? প্রতিটি দলিল নিবন্ধিত (রেজিস্ট্রার্ড) কি? নিবন্ধন নম্বর ও তারিখ মিলিয়ে দেখুন।
- অর্পিত সম্পত্তি, খাস জমি, আদালতের নিষেধাজ্ঞা: সম্পত্তি সরকারি অর্পিত সম্পত্তি, খাস জমি বা আদালতের কোন নিষেধাজ্ঞা/জব্দ আদেশের আওতাভুক্ত কি না, তা পরীক্ষা করা। ল’য়ার সার্চ সার্টিফিকেট বা রিপোর্ট দেবেন।
- প্রকল্প ও বিল্ডিং অনুমোদন পুনঃনিশ্চিতকরণ: আপনার ল’য়ারকে দিয়ে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন (ঢাকা সাউথ/নর্থ, চট্টগ্রাম, খুলনা ইত্যাদি) বা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (RAJUK, CDA, KDA) থেকে প্রকল্পের লেআউট প্ল্যান অনুমোদন এবং বিল্ডিং নির্মাণের জন্য অনুমোদনের কপি যাচাই করান। অনুমোদনে উল্লিখিত ফ্লোর সংখ্যা, ফ্ল্যাট নম্বর, বিল্ডিংয়ের উচ্চতা ইত্যাদি বাস্তবের সাথে মেলে কি? কোন পার্থক্য থাকলে তা কেন এবং তার আইনি পরিণতি কী?
- কর ও বকেয়া পরিশোধের সনদ: সম্পত্তি ক্রয়ের আগে নিশ্চিত হোন যে বিক্রেতা সম্পত্তি সংক্রান্ত সব ধরনের সরকারি কর (হোল্ডিং ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ডিউটি, মূল্য সংযোজন কর – ভ্যাট, যদি প্রযোজ্য হয়) এবং বিল্ডিং ম্যানেজমেন্ট কমিটির বকেয়া সার্ভিস চার্জ পরিশোধ করে ফেলেছেন। বিক্রেতার কাছ থেকে এর স্পষ্ট প্রমাণ (রশিদ, সনদ) চাইতে হবে এবং আপনার ল’য়ারকে দিয়ে পৌর কর্পোরেশন/উপজেলা অফিস থেকে বকেয়া নেই মর্মে সার্টিফিকেট নিশ্চিত করাতে হবে।
- দলিল প্রস্তুতকরণ ও নিবন্ধন: ক্রয় চুক্তি (Agreement for Sale) এবং মূল বিক্রয় দলিল (Sale Deed) অবশ্যই একজন যোগ্য আইনজীবী দ্বারা প্রস্তুত করতে হবে। দলিলে অবশ্যই উল্লেখ থাকতে হবে:
- বিক্রেতা ও ক্রেতার পূর্ণ বিবরণ (নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর)
- সম্পত্তির পূর্ণ ও সঠিক বর্ণনা (ঠিকানা, খতিয়ান/দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, ফ্ল্যাট নম্বর, বিল্ডিং নাম, আয়তন)
- বিক্রয় মূল্য (সংখ্যা ও কথায় উভয়ভাবে)
- প্রদেয় অর্থের সময়সূচি (ডাউন পেমেন্ট, চূড়ান্ত পরিশোধ)
- সম্পত্তি হস্তান্তরের তারিখ ও শর্তাবলী
- উভয় পক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য
- আইনি প্রতিকার শর্তাবলী
- বিক্রেতার স্বত্ব দাবির নিশ্চয়তা (Covenant for Title)
দলিল রেজিস্ট্রি অফিসে (সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা) নিবন্ধিত করতে হবে। নিবন্ধন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি আইন অনুযায়ী পরিশোধ করতে হবে। নিবন্ধিত দলিলই আইনগতভাবে বলবৎ। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির এই ধাপে কখনোই এজেন্ট বা দালালের উপর পুরোপুরি নির্ভর করবেন না। নিজের আইনজীবী নিয়োগ করুন।
চূড়ান্ত ধাপ: হস্তান্তর, মালিকানা, এবং নতুন যাত্রার শুরু
আইনী যাচাই শেষ, দরদাম ঠিক, দলিল সইয়ের জন্য প্রস্তুত। এবার চূড়ান্ত পদক্ষেপ:
- চূড়ান্ত পরিদর্শন: দলিল সইয়ের ঠিক আগে আরেকবার সম্পত্তি দেখে যান। আগের বার যেসব শর্ত বা মেরামতের কথা বলা হয়েছিল (যেমন, একটি ভাঙা টাইলস বদলানো, পেইন্ট টাচ আপ), সেগুলো ঠিক করা হয়েছে কি? সম্পত্তি বিক্রেতা ঠিক আগের মতো অবস্থায় ছেড়ে যাচ্ছেন তো?
- চূড়ান্ত অর্থ পরিশোধ: আপনার ল’য়ারের উপস্থিতিতে বা তার নির্দেশনা অনুযায়ী, বিক্রয় দলিলে উল্লিখিত চূড়ান্ত অর্থের পরিমাণ বিক্রেতাকে পরিশোধ করুন। চেক বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে পরিশোধ করাই নিরাপদ। রশিদ নিন।
- দলিল সই ও নিবন্ধন: নির্ধারিত তারিখে রেজিস্ট্রি অফিসে বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়কে উপস্থিত থাকতে হবে (কোন ক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষমতাপত্র বা Power of Attorney (POA) এর মাধ্যমে প্রতিনিধি যেতে পারেন, তবে সতর্ক থাকুন)। আইনজীবীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। দলিল সই হবে এবং রেজিস্ট্রার নিবন্ধন করবেন। নিবন্ধিত দলিলের কপি (রেজিস্ট্রার কতৃক স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষরিত) আপনার কাছে থাকবে। এটি আপনার মালিকানার প্রাথমিক প্রমাণ।
- মিউটেশন/নামজারি: দলিল নিবন্ধনের পর, জমি/ফ্ল্যাটের মালিকানা সরকারি রেকর্ডে আপনার নামে আনতে হবে। আপনার ল’য়ার বা একজন দালালের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে (সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস বা উপজেলা ভূমি অফিস) মিউটেশন/নামজারির জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদনের সাথে নিবন্ধিত দলিলের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, বিক্রেতার খতিয়ান কপি ইত্যাদি জমা দিতে হবে। ভূমি কর্মকর্তা সাইট ভেরিফিকেশন করে মিউটেশন মঞ্জুর করবেন। নতুন খতিয়ান কপি পাবেন। এটিই সম্পত্তির উপর আপনার পূর্ণ মালিকানার চূড়ান্ত সরকারি স্বীকৃতি।
- ইউটিলিটি স্থানান্তর: বাড়ির মালিকানা পেলেন, এবার ইউটিলিটি সার্ভিসের বিল আপনার নামে আনুন। স্থানীয় পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনে গিয়ে হোল্ডিং ট্যাক্স রেকর্ড আপনার নামে নিন (নতুন হোল্ডিং নম্বর পেতে হবে বা পুরোনোটা আপনার নামে আনতে হবে)। ডেসা/ডিপিডিসি/ওয়াসা (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস) অফিসে গিয়ে মিটার রিডিং নিয়ে আপনার নামে সংযোগ স্থানান্তর করুন। বকেয়া আছে কিনা নিশ্চিত হোন।
জেনে রাখুন (FAQs)
বাড়ি কেনার আগে আর্থিক প্রস্তুতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী?
- উত্তর: আর্থিক প্রস্তুতির মূল ভিত্তি হল বাজেট তৈরি ও অনুশাসন। মাসিক আয়-ব্যয়ের কঠোর হিসাব করে ইএমআই-এর সীমা নির্ধারণ (আয়ের ৩০-৪০%), ডাউন পেমেন্টের জন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্য স্থির করা এবং ক্রেডিট স্কোর উন্নত করাই সবচেয়ে জরুরি। প্রাক-অনুমোদিত ঋণ (Pre-Approved Loan) নিলে বাজেট স্পষ্ট হয় এবং দরদামে সুবিধা পাওয়া যায়। জরুরি তহবিল কখনোই ডাউন পেমেন্টে ব্যবহার করা উচিত নয়।
কোনো ফ্ল্যাট দেখে পছন্দ হলে, দ্রুত অ্যাডভান্স দিয়ে রাখতে কী করব?
- উত্তর: পছন্দের ফ্ল্যাটে “অ্যাডভান্স” বা “টোকেন মানি” দেয়ার আগে কখনোই তাড়াহুড়ো করবেন না। প্রথমে একটি প্রাথমিক চুক্তিপত্র (Booking Agreement) করুন। এতে ফ্ল্যাটের বিবরণ, বিক্রয় মূল্য, ডাউন পেমেন্ট ও চূড়ান্ত পরিশোধের পরিমাণ ও সময়সীমা, দলিল সইয়ের তারিখ, অ্যাডভান্সের পরিমাণ এবং চুক্তি ভঙ্গের শর্ত (যেমন, ক্রেতা ফেরত পাবেন না, বিক্রেতা দ্বিগুণ ফেরত দেবেন) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করুন। এই চুক্তিপত্র অবশ্যই আইনজীবী দিয়ে চেক করিয়ে নিন এবং বিক্রেতার স্বাক্ষর নিশ্চিত করুন। অ্যাডভান্সের জন্য রশিদ নিন।
পুরোনো বা রেনোভেট করা বাড়ি কিনতে গেলে বিশেষ কী কী খেয়াল রাখতে হবে?
- উত্তর: পুরোনো বাড়ির ক্ষেত্রে নির্মাণের অবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন বিল্ডিং ইন্সপেক্টর বা অভিজ্ঞ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে গঠনগত শক্তি (Structural Stability) পরীক্ষা করান। দেখুন ফাউন্ডেশন, কলাম, বিম, সিঁড়ি, ছাদে বড় ফাটল বা ক্ষয় আছে কি? বৈদ্যুতিক ও প্লাম্বিং সিস্টেম আধুনিক ও নিরাপদ কি? ছাদ বা বাথরুমে পানি রিঙ্কল আছে কি? মেরামতের আনুমানিক খরচ হিসাব করুন। এছাড়া, অনুমোদন ও মালিকানা শুদ্ধতার যাচাই নতুন বাড়ির মতোই জরুরি। প্রায়ই পুরোনো বাড়ির দলিল জটিল হয়।
এজেন্ট বা দালাল নির্বাচনের সময় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করব?
- উত্তর: খ্যাতি ও অভিজ্ঞতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে সুপারিশকৃত এজেন্ট খুঁজুন। তার লাইসেন্স আছে কি (যদি স্থানীয়ভাবে লাইসেন্সের প্রথা থাকে)? তার সাথে পূর্ববর্তী ক্রেতাদের কথা বলার চেষ্টা করুন। কমিশন ও ফি আগেই পরিষ্কারভাবে লিখিত চুক্তিতে উল্লেখ করুন। মনে রাখবেন, এজেন্ট বিক্রেতার পক্ষে কাজ করেন। আপনার নিজের আইনজীবী ও প্রয়োজনে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করে যাচাই-বাছাই করুন। কখনোই শুধু এজেন্টের কথায় বা চাপে দলিল সই করবেন না। ভালো এজেন্ট দরকারী তথ্য ও অপশন দিতে পারেন, কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ও আইনী যাচাই আপনার নিজের দায়িত্ব।
অনুমোদনহীন (Unauthorized) বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাট কিনলে কী সমস্যা হতে পারে?
- উত্তর: অনুমোদনহীন বিল্ডিংয়ে বিনিয়োগ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কর্তৃপক্ষ (RAJUK, সিটি কর্পোরেশন) ভবনটি ভেঙে দিতে পারে। আপনার দলিল আইনগতভাবে দুর্বল বা বাতিল হয়ে যেতে পারে। ব্যাংক ঋণ পাওয়া প্রায় অসম্ভব। পরবর্তীতে বিক্রি করা কঠিন হবে। পানির, গ্যাসের, ড্রেনেজের সংযোগ পেতে সমস্যা হবে। রেজিস্ট্রেশন বা মিউটেশনেও বাধা আসতে পারে। বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির মূল নীতিই হওয়া উচিত অনুমোদিত প্রকল্প বেছে নেয়া।
- বাড়ি কেনার পর কী কী অতিরিক্ত খরচের মুখোমুখি হতে পারি?
- উত্তর: শুধু ক্রয় মূল্যই নয়, সাথে আসে বেশ কিছু আনুষঙ্গিক খরচ: দলিল রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি (ক্রয়মূল্যের শতকরা হারে), আইনজীবীর ফি, এজেন্ট কমিশন (যদি থাকে), মিউটেশন ফি, নতুন হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও বকেয়া (যদি থাকে), ইউটিলিটি স্থানান্তর ফি, বিল্ডিং এন্ট্রি ফি বা পার্কিং চার্জ (প্রয়োজনে), মেরামত ও রেনোভেশন খরচ, ফার্নিচার ও জিনিসপত্র কেনা, এবং স্থানান্তরিত খরচ (শিফটিং)। ক্রয়মূল্যের ৫% থেকে ১০% পর্যন্ত এই আনুষঙ্গিক খরচ ধরে রাখা ভালো।
এই দীর্ঘ পথচলার শেষে, যখন আপনার হাতে উঠবে সেই কাঙ্খিত চাবি, মনে রাখবেন, সেটা শুধু একটি ধাতব বস্তু নয়; তা আপনার অধ্যবসায়, প্রজ্ঞা এবং অক্লান্ত বাড়ি কেনার আগের প্রস্তুতির স্বীকৃতি। রাইয়ান আর তানজিনার মতো হাজারো স্বপ্ন যেন দলিলের ফাঁকে হারিয়ে না যায়, তার জন্য এই প্রস্তুতি অপরিহার্য অস্ত্র। টাকা জমানোই শেষ কথা নয়, সেটা সঠিক জায়গায়, সঠিক পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করাই সাফল্যের চাবিকাঠি। ঝুঁকি এখানে বিলাসিতা নয়, এড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই, আইনজীবী, ইঞ্জিনিয়ার, আর্থিক পরামর্শক – এই পেশাদারদের সাহায্য নিতে কুণ্ঠাবোধ করবেন না। আপনার গবেষণা যত গভীর হবে, ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তত কমবে। ভুলে যাবেন না, এই বাড়ি শুধু আজকের বাসস্থান নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপদ আশ্রয়, আপনার জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান বিনিয়োগ। এখনই সময়, আপনার স্বপ্নের ঠিকানার জন্য প্রস্তুত হওয়ার। একজন নির্ভরযোগ্য রিয়েল এস্টেট পরামর্শকের সাথে কথা বলুন, আপনার ব্যাংকারের সাথে বসুন, এবং একজন ভালো ভূমি আইনজীবী খুঁজে বের করুন – আপনার স্বপ্নের চার দেয়ালের ভিত মজবুত করার এই যাত্রা শুরু হোক আজই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।