সিপন আহমেদ : সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য নিয়ে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের মন্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর রেজা। তার ভাষায়, “যে প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধান তাঁর অধীনস্ত অফিসারদের উদ্দেশে বক্তব্য রেখেছেন, সেটিকে ‘মিলিটারি ক্যু’র চেষ্টা’ বলা একটি চরম অজ্ঞতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রয়াস।”
রোববার রাতে মেজর রেজার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
মেজর রেজা বলেন, সেনাপ্রধান কোনো জনসমক্ষে ভাষণ দেননি। তিনি একটি ‘রুটিন অফিসার্স অ্যাড্রেস’-এ অংশগ্রহণ করেছিলেন, যা সশস্ত্র বাহিনীর নিয়মিত চর্চার অংশ। এতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, মনোবল, রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ বিষয়ে মতবিনিময় হয়ে থাকে।
“সেনাবাহিনীর নেতৃত্বের অন্যতম মূলনীতি হলো ‘Keep your men informed’। দেশের বর্তমান অস্থিরতা ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রেক্ষাপটে সেনাপ্রধানের বক্তব্য বাহিনীর মনোবল দৃঢ় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে,” বলেন মেজর রেজা।
তিনি আরো জানান, সেনাপ্রধান মাত্র পাঁচ মিনিট বক্তব্য দেন এবং পরে অফিসারদের প্রশ্নের উত্তর দেন, যা বাহিনীর মধ্যে তথ্যঘাটতি দূর করার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি Task & Purpose ভিত্তিক কমিউনিকেশনের একটি অংশ।
ফুয়াদের বক্তব্য প্রসঙ্গে মেজর রেজা বলেন, “ব্যারিস্টার ফুয়াদ সেনাবাহিনীর কাঠামো ও আচরণগত নীতিমালা সম্পর্কে অজ্ঞ। চিকিৎসা বা প্রকৌশল বিষয়ে যেমন বাইরের কেউ বিশেষজ্ঞ মতামত দেন না, তেমনি সামরিক বিষয়ে যিনি সরাসরি সংশ্লিষ্ট নন, তার দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য গণমানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে।”
ফুয়াদ সেনাপ্রধানের বক্তব্য সম্পর্কে কয়েকবার “যদি কথাগুলো সত্যি হয়” বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কিন্তু সেই “যদি”র ভিত্তিতে তিনি বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ তোলেন, যেগুলো মেজর রেজার মতে, সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
মেজর রেজা বলেন, “সেনাপ্রধানের বক্তব্য ছিল স্পষ্টতই বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে। এতে কোনো রাজনৈতিক ম্যান্ডেট বা সরকারের মুখোমুখি দাঁড়ানোর ইঙ্গিত নেই। বরং, তিনি বাহিনীর মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে চেয়েছেন।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদের আরেকটি মন্তব্যে তিনি বলেন, পুলিশের হাতে নাকি লেথাল অস্ত্র নেই। মেজর রেজা এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “যেখানে ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যে পুলিশ ৭.৬২ মিমি অস্ত্র ব্যবহার করেছে, সেখানে এ ধরনের মন্তব্য বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি আরো বলেন, “যদি পুলিশের হাতে লেথাল অস্ত্র না-ই থাকে, তাহলে পুলিশ সংস্কার প্রতিবেদনে সেগুলো প্রত্যাহারের সুপারিশ কেন এসেছে?”
সবশেষে মেজর রেজা বলেন, “সবকিছুই কি গণমাধ্যমে আলোচনার উপযোগী? সেনাবাহিনী এখনো অফিসিয়ালি কোনো বিবৃতি দেয়নি। অনুমান নির্ভর মন্তব্য দিয়ে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যারিস্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।