জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্য সেবা শিল্পের কেন্দ্রবিন্দু ‘বেসিস’-এর প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের উপর নতুন একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ সিদ্ধান্তটি বাংলাদেশের সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের পাঠ্যবই হয়ে উঠতে পারে, যা এখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম এবং দেশের ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বেসিসে নতুন প্রশাসক নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হচ্ছে এবং এটি বেসিসের সদস্যদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, যারা বর্তমানে স্বচ্ছতার উপর জোর দিচ্ছেন।
Table of Contents
বেসিসে নতুন প্রশাসক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
আজ মঙ্গলবার, বিচারপতি রেজাউল হকের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত বেসিসে নতুন কোনো প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর বেসিসের প্রাক্তন সদস্য তৌফিকুল করিম সুহৃদ এই বিষয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন করেন, যাতে নতুন প্রশাসক নিয়োগসহ সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। সেই সময় হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী গঠিত বেঞ্চ এ আবেদনের সমর্থন করেন।
এই নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তৌফিকুল করিম বলেন, “আমরা চাই বেসিস পরিচালিত হোক নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে বেসিসের সদস্যদের মধ্যে একটি নির্বাচন পরিচালনার জন্য অতীতের প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা রয়েছে।
নতুন প্রশাসকের জন্য সরকারের প্রস্তাব
সরকার গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মুহম্মদ মেহেদী হাসানকে বেসিসের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। এরপর, বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন রাফেল কবির। তবে, গত এপ্রিল মাসে রাফেল কবির পদত্যাগ করেন এবং একমাস পর ১ মে সহায়ক কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের মহাপরিচালক মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন জানান, “নতুন প্রশাসক নিয়োগের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই তা কার্যকর করা হবে।” তবে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আপাতত সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।
অতীতের এই ঘটনাবলির প্রেক্ষাপট
২০২৩ সালের মার্চে হাইকোর্ট রিটটি ডিসচার্জ করেছিল। পুনরায় একই প্রশ্ন উত্থাপন করা হলে গত ১১ মে চেম্বার কোর্টে নতুন করে আবেদন দায়ের করা হয়। আদালত বর্তমানে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তার ফলে বেসিসের অব্যাহত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা বিশেষ করে ডিজিটাল নীতি ও প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
রাষ্ট্রের নীতি ও বেসিসের ভূমিকা
বেসিস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের একটি মূল ভিত্তি, যা দেশের ডিজিটাল রূপান্তর সক্ষম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের সঠিক নীতি গ্রহণ না করা হলে এটা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা প্রদান করবে। তাই এই নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রভাব আগামী দিনে কি হবে তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
বর্তমানে, এ নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কিভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে চলবে সেই বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। দেশের সফটওয়্যার ও তথ্য সেবা খাতের উপর সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সদস্যরা আশা করছেন।
FAQs
বেসিসে নতুন প্রশাসক নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা কেন দেওয়া হয়েছে?
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনায় বেসিসে নতুন প্রশাসক নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে, যা প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
বেসিস সদস্যরা কীভাবে এই সিদ্ধান্তের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন?
- সদস্যরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বেসিস পরিচালনার দাবি তুলে ধরেছেন এবং আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছেন।
সরকারি পদক্ষেপের জন্য কি অপেক্ষা করতে হবে?
- নতুন প্রশাসক নিয়োগের জন্য একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে, কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটি আপাতত কার্যকর হচ্ছে না।
বেসিসের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম কি প্রভাবিত হচ্ছে?
- আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বেসিসের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা তথ্য প্রযুক্তি খাতের বিকাশের জন্য উদ্বেগজনক।
- প্রশাসকের পদত্যাগের প্রেক্ষিতে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে?
- সরকারের পক্ষ থেকে নতুন প্রশাসকের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।