একজন মানুষের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে ভালো ও পর্যাপ্ত ঘুমের পরামর্শ দেয়া হয়। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে পরদিন নানা সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। শরীর খারাপ হওয়া, মাথাব্যথা, মুখে বয়সের ছাপ পড়া, ত্বক অনুজ্জ্বল হওয়া এবং ডিপ্রেশনও দেখা দিতে পারে। এসব কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর কথা বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
অনেকেই আবার অতিরিক্ত ঘুমিয়ে থাকেন। কম ঘুম যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, একইভাবে বেশি ঘুমও ক্ষতিকর। দিনে ৯-১০ ঘণ্টা বা এরও বেশি ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে শরীরে নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে পারে। ওজন বেড়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, পিঠে ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়া ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো ভয়াবহ অসুখও হতে পারে। কখনো কখনো ডিপ্রেশনের কবলেও পড়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত ঘুমের ক্ষতিকর বিষয়গুলো নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম ফেমিনা। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক-
কেন বেশি ঘুমানো হয়:
সাধারণত প্রতিদিন রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমকে স্বাভাবিক বলে ধরা হয়। কিন্তু অনেকেই এর থেকেও বেশি পরিমাণ ঘুমিয়ে থাকেন। ৯-১০ ঘণ্টা বা এরও বেশি সময় ঘুমানো হলে নিশ্চিতভাবেই অতিরিক্ত ঘুম হিসেবে শনাক্ত করা হয়। কম ঘুম বা অনিদ্রার পেছনে নির্দিষ্ট কয়েকটি কারণ থাকে, একইভাবে অতিরিক্ত ঘুমও শারীরিক কিছু জটিলতার কারণ হতে পারে।
থাইরয়েড, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, স্লিপ অ্যাপনিয়া, ডিপ্রেশনের জন্য ঘুম বেশি হতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষ নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের কারণেও অতিরিক্ত ঘুম হয়। দীর্ঘদিন ধরে টানা ক্লান্তিবোধ করলেও ঘুম বেশি হয়। আবার কখনো কোনো ধরনের শারীরিক কারণ ছাড়াই শুধু অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইলের জন্য ঘুম বেশি হয়ে থাকে।
অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা বা প্রবণতা থাকলে প্রথমেই এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তারপর কীভাবে তা দূর করা যায়, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। শারীরিক কোনো কারণ যদি দায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসা করতে হবে।
অতিরিক্ত ঘুম বন্ধের উপায়:
বেশি ঘুমের পেছনে কোনো শারীরিক অসুস্থতা না থাকলে সাধারণ কিছু উপায় অবলম্বন করলেই সমাধান সম্ভব। অভ্যাস ও ঘুমের ধরনে কিছুটা পরিবর্তনই হতে পারে প্রথম হাতিয়ার।
ঘুমের রুটিন মেনে চলা:
প্রতিদিনই একই সময় ঘুমানো এবং সকালে একই সময় ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস করুন। একই সময়সূচি মেনে চললে শরীর অভ্যস্ত হবে, ঘুমের ক্ষেত্রেও ছন্দ আসবে। আর এই ছন্দ কিছুতেই ভাঙবেন না। এমনকি সপ্তাহের ছুটির দিনেও না।
ঘুমের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা:
ঘুমের জায়গা সবসময় আরামদায়ক হওয়া প্রয়োজন। ঘর অন্ধকার ও ঠান্ডা রাখতে হবে। সব ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকতে হবে। বালিশ ও বিছানার গদিকে স্বস্তিকর করতে হবে।
দিনে ঘুমানোর অভ্যাস বাদ দেয়া:
দুপুরে খাবার খাওয়ার পর অনেকের ভাতঘুম দেয়ার অভ্যাস থাকে। কিন্তু দুপুরের এই ঘুম স্বাভাবিক ঘুমের ছন্দকে নষ্ট করতে পারে। শারীরিকভাবে সুস্থ হলে দুপুরের ঘুম বর্জন করতে হবে। এ জন্য এমন কিছু অ্যাকটিভিটি করার চেষ্টা করুন, যেন দিনে ওই ঘুমের সময় ঘুম না আসে।
স্লিপ ডায়েরি মেনে চলা:
প্রতিদিন কী পরিমাণ ঘুমাচ্ছেন, কোন কোন সমস্যা হচ্ছে―সবই একটি ডায়েরিতে নোট করে রাখুন। অভ্যাস, রুটিন সবই লিখুন। দিনে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে সেটিও অন্তর্ভুক্ত করুন। আর যেকোনো সমস্যায় ডায়েরিসহ একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে ভুল করবেন না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।