বিনোদন ডেস্ক : কিছু কিছু সিনেমা বড়পর্দায় সাড়া ফেলতে না পারলেও ওটিটি প্ল্যাটফর্মে খেলা ঘুরিয়ে দেয়। ‘টুয়েলভথ ফেল’ এমনই একটি ছবি। বিধু বিনোদ চোপড়ার এই সিনেমা ওটিটিতে আসতেই শোরগোল ফেলে দিয়েছে। বলিউডের ধুন্ধুমার অ্যাকশনের যুগেও মানুষের মনে দাগ কেটেছে সিনেমাটি।
আইপিএস অফিসার মনোজ কুমার শর্মার জীবনকাহিনি দর্শকদের মন ছুঁয়ে গেছে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিক্রান্ত মাসে। তবে হিরো নয়, হিরোইনই হয়ে উঠেছেন এই ছবির মূল আকর্ষণ। মনোজ শর্মার স্ত্রী আইপিএস অফিসার শ্রদ্ধা যোশির ভূমিকায় অভিনয় করা নায়িকাকে নিয়ে বেশ চর্চা চলছে নেটপাড়ায়। শ্রদ্ধা ছিলেন মনোজের সাপোর্ট সিস্টেম। গুরুত্বপূর্ণ এইচরিত্রে অভিনয় করে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন মেধা। অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর সৌন্দর্য মুগ্ধ করেছে দর্শকদের।
উত্তরপ্রদেশের নয়ডাতে জন্ম নেওয়া মেধা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি থেকে ফ্যাশন ম্যানেজমেন্টের ওপর মাস্টার্স করেছেন। তাঁর শুরুটা হয়েছিল মডেল হিসেবে। মেধা শুধু একজন অভিনেত্রী নন, হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যাল সংগীতেও তাঁর বেশ দক্ষতা রয়েছে। ২০১৫ সালে ‘উইথ ইউ ফর ইউ অলওয়েজ’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পদায় যাত্রা শুরু করেন। ২০১৯ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম সিরিজ ‘বিচাম হাউস’। এই সিরিজে রোশেনারার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ২০২১ সালে ‘শাদিস্তান’ নামে একটি হিন্দি মিউজিক্যাল ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে দেশজুড়ে পরিচিতি বাড়তে থাকে মেধার। সেই ছবিতে কীর্তি কুলহারি এবং কে কে মেননের সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন মেধা। ২০২২ সালে মুক্তি পায় মেধার আরেকটি ছবি ‘ম্যাক্স মিন অ্যান্ড মেওজ্যাকি’। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় ‘টুয়েলভথ ফেল’। এই সিনেমা তাঁকে রাতারাতি বিখ্যাত করে তোলে।২০ কোটি রুপি বাজেটের ছবিটি বক্স অফিসে আয় করে ৬৬ কোটি রুপি। নির্মাণ ব্যয়ের তিন গুণেরও বেশি আয়, নির্দ্বিধায় সুপারহিট।
বিধু বিনোদ চোপড়ার এই সিনেমা নিঃসন্দেহে মেধার ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন হয়ে থাকবে। শুধু অভিনয় নয়, এই সিনেমাতে গানও গেয়েছেন মেধা।মেধা সম্পর্কে পরিচালক বিধু বিনোদ চোপড়া বলেছেন, ‘মেধাকেযখন কাস্ট করতে যাচ্ছিলাম,তখন এমন একটি মেয়েকে আমিকাস্ট করতে চেয়েছিলাম যে গান গাইতে পারে। সিনেমাটিতে এটা শ্রেয়া ঘোষালের কণ্ঠ নয়। মেধা শঙ্কর লোকেশনে দাঁড়িয়ে এই গান গেয়েছেন। এটা লোকেশন সাউন্ড।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঁকি দিলেই এখন শুধু ‘টুয়েলভথ ফেল’-এর প্রশংসা। সেই সঙ্গে শ্রদ্ধার মতো মেয়েকে জীবনসঙ্গী পাওয়ার আশায় দেখা যাচ্ছে পরপর পোস্ট। রাতারাতি নেটদুনিয়ার ‘ক্রাশ’ হয়ে উঠেছেন মেধা। বলা যায়, এই ছবিই মেধার জীবনের ব্রেক থ্রু। ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতে তৃপ্তি দিমরির পরে নেটদুনিয়ার নয়া ক্রাশ এখন মেধা শঙ্কর।
তাঁর এই সাফল্য একদিনে আসেনি। অভিনেত্রী হতে গিয়ে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। এরপর একদিন তিনি সুযোগ পান প্রযোজক বিধু বিনোদ চোপড়ার ছবিতে অডিশনের। একবার, দু’বার নয়; দফায় দফায় তাঁকে দিতে হয়েছে স্ক্রিন টেস্ট। মেধা যেন আশাহত না হন, তাঁকে সাহস জোগাতে বিধু বিনোদ চোপড়া বলেছিলেন, ‘পরিণীতা’র জন্য বিদ্যা বালান ২৬ বার স্ক্রিন টেস্ট দিয়েছিলেন। মেধা তখন বলেছিলেন, ‘স্যার, ২৬ হাজারবার আমার টেস্ট নিন।
আমার কোনো সমস্যা নেই।’ ধৈর্যের ফল হাতেনাতেই পেলেন। ‘টুয়েলভথ ফেল’ মুক্তির পর সাধারণ দর্শক তো বটেই, সমালোচকরাও সিনেমায় মেধার অভিনয়ে মুগ্ধ। এমনকি বিদ্যা বালানের ফোনও পেলেন মেধা। তাঁর পরের ছবি দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বিদ্যা, এটাও বলেছেন। পর্দার শ্রদ্ধার মতো মেধাও বাস্তবে শান্তশিষ্ট স্বভাবের। গুছিয়ে পথ চলতে পছন্দ করেন। ‘টুয়েলভথ ফেল’-এর পর এখন একের পর এক নতুন ছবি-সিরিজের প্রস্তাব পাচ্ছেন। মেধা পা ফেলতে চান দেখেশুনে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।