বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : এবার বড়সড় উদ্যোগ নিল রেল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, সেন্ট্রাল রেলওয়ের মুম্বাই ডিভিশনের ছয়টি রেলস্টেশনে এখন থেকে উন্নত প্রযুক্তির সাথে পাওয়া যাবে পানীয় জল (Drinking Water)। মূলত, ওই স্টেশনগুলিতে জাতিসংঘ-স্বীকৃত প্রযুক্তিতে জল পাওয়া যাবে। সবচেয়ে অবাক করার মত বিষয় হল, ওই প্রযুক্তির সাহায্যে বাতাস থেকেই জল উৎপাদন করা যায়। উল্লেখ্য যে, অ্যাটমোস্ফিয়ারিক ওয়াটার জেনারেশন (AWG) “মেঘদূত” হল এমন একটি যন্ত্র যা ঘনীভবনের বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে পরিবেশের বায়ু থেকে জল বের করে নেয়। আর এই জলই এখন রেল স্টেশনগুলিতে উপলব্ধ করা হবে। চলতি বছরের জুন মাসে, উদ্যোগটি জাতিসংঘের গ্লোবাল কমপ্যাক্ট-এর পক্ষ থেকে ভারতে জল ব্যবস্থাপনার জন্য গ্লোবাল সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস (SDGs)-এর লিডার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে একজন অধিকারিক জানিয়েছেন যে, মৈত্রী অ্যাকুয়াটেক প্রাইভেট লিমিটেডকে সেন্ট্রাল রেলওয়ের মুম্বাই ডিভিশনে মোট ১৭ টি “মেঘদূত” AWG কিয়স্ক বসানোর করার জন্য “Innovative Non Fare Revenue Ideas Scheme, NINFRIS”-এর অধীনে একটি পাঁচ বছরের কন্ট্র্যাক্ট দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই ছয়টি স্টেশন চত্বরে কিয়স্কের জন্য রেলওয়েকে বছরে ২৫.৫ লক্ষ টাকা (প্রতি কিয়স্কে ১.৫ লক্ষ টাকা) লাইসেন্স শুল্ক দেওয়া হবে।
এইসব স্টেশনে স্থাপন করা হবে: জানা গিয়েছে, ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাস (CSMT) এবং দাদরে পাঁচটি করে কিয়স্ক স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, থানেতে চারটি ও কুরলা, ঘাটকোপার এবং ভিক্রোলিতে একটি করে কিয়স্ক বসানো হবে।
এগুলি কিভাবে কাজ করে: “মেঘদূত” AWG বাতাসের জলীয় বাষ্পকে ভালো এবং পরিষ্কার পানীয় জলে রূপান্তর করতে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে। ওই প্রযুক্তি পরিবেশের বিভিন্ন তাপমাত্রা (১৮ডিগ্রি সেলসিয়াস-৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং আপেক্ষিক আর্দ্রতার অবস্থার (২৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ) মধ্যে কাজ করে। এই ডিভাইসটি চালু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জল সরবরাহ করা শুরু হয়ে যায়। পাশাপাশি, এগুলি দিনে ১ হাজার লিটার জল উৎপন্ন করতে পারে বলেও জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই, এই ব্যবস্থা পানীয় জলের জন্য তাৎক্ষণিক সমাধান হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
সুবিধা পাবেন যাত্রীরা: মূলত, রেলযাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই এই ব্যবস্থার চালু করা হচ্ছে। এর ফলে স্বল্প খরচেই পানীয় জল পাবেন যাত্রীরা। এখানে ৩০০ মিলিলিটার জলের জন্য দিতে হবে মাত্র ৫ টাকা। পাশাপাশি, ৫০০ মিলিলিটার জলের জন্য দিতে হবে ৮ টাকা এবং এক লিটার জলের জন্য খরচ হবে ১২ টাকা। এছাড়াও প্রয়োজন হলে যাত্রীরা জলের বোতলও কিনতে পারেন। সেক্ষত্রে ৩০০ মিলিলিটারের জন্য খরচ হবে ৭ টাকা, ৫০০ মিলিলিটারের জন্য ১২ টাকা এবং এক লিটারের বোতলের জন্য ১৫ টাকা দিতে হবে।
“স্টেশনেই রয়েছে জলের কারখানা”: এই প্রসঙ্গে মৈত্রী অ্যাকুয়াটেক প্রাইভেট লিমিটেডের সিইও নবীন মাথুর জানান, “এই প্রযুক্তি জলের পরিচিত উৎসের উপর নির্ভর করে না। আমরা জলের মূল উৎসটিকে কাজে লাগাচ্ছি। তাই এটি একটি প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধান। জলেরও কোনো অপচয় নেই। সর্বোপরি, এটি একটি টেকসই প্রযুক্তি। এটা অনেকটা স্টেশনে জলের কারখানা থাকার মতো।” তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সেন্ট্রাল রেলওয়ে ব্যতীত অন্যান্য রেলওয়ের জোনগুলিও এই জাতীয় জলের কিয়স্ক স্থাপনের বিষয়ে বিবেচনা করছে। তবে এই প্রসঙ্গে এখনই বিস্তারিত কিছু জানান নি তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।