জুমবাংলা ডেস্ক : বর্ষা মৌসুম আসলেই (মৌসুমি সবজি) শাপলার চাহিদা বেড়ে যায় মানুষের মাঝে। বর্ষায় বিলাঞ্চলের ফসলি জমি আর গ্রামীণ জনপদ তলিয়ে থাকার কারনে অনেক দরিদ্র পরিবারদের হাতে কাজ থাকেনা। তাই জীবন-জীবিকা আর পরিবারের অর্থনৈতিক চাঁকা সচল রাখতে বিলাঞ্চলের প্রাকৃতিক শাপলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন অনেক দরিদ্র পরিবার।
ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায় প্রাকৃতিক ভাবে খাল- বিলের মাঝে ফুটে থাকে শাপলা। আর এ শাপলা কে ঘিরেই অনেক দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা ছোট নৌকা, ডিঙ্গি নৌকা বা সাঁতার কেটে পানিতে নেমে খাল,বিলের মাঝ থেকে শাপলা তুলে বাজারে এনে বিক্রি করছেন।
এতে একদিকে যেমন শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অন্য দিকে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে। বোয়ালমারী উপজেলার ঠাকুরপুর বাজারে শাপলা বিক্রেতারা আবু মোল্লা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে প্রায় দুই থেকে তিন মাস খাল- বিলের মধ্যে পানি থাকে। তখন এলাকায় কৃষি কাজ কমে যায়। আর্থিক সংকটের কারনে তাদের শাপলা বিক্রি করে সংসার চলতে হয়। শাপলা বিক্রিতে বড় ধরনের কোন মূলধনের প্রয়োজন না হওয়ায় দরিদ্র পরিবারের অনেকেই বর্ষার মৌসুমে শাপলা বিক্রি করছেন।
বোয়ালমারী উপজেলার চৌরাস্তা শাপলা বিক্রির পাশাপাশি আলাপচারিতায় মামুন সেখ (ছদ্মনাম) বলেন, আমার বাড়ি পার্শবর্ত্তী উপজেলায় কাশিয়ানীতে, আমি আগে অন্য ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলাম।বিগত করোনা আমার সব কিছু শেষ হয়েছে তাই বাধ্য হয়ে আমি এক কাজ করছি। কারণ জীবিকা অর্জন আর পুঁজি ছাড়া এ ব্যবসা করা যায় বলেই আজ আমি এ ব্যবসা শুরু করেছি। তিনি জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে ভোর রাতে পর্ষন্ত শাপলা তুলতে চলে এলাকায় বিভিন্ন বিলে। আমার বাড়ির কাছে বিলে হওয়ার বেশ সুবিধা হয়। প্রতিদিন আমি কমপক্ষে ৫০০ থেকে ১০০০ মুঠো শাপলা সংগ্রহ করতে পাড়ি। এগুলো আবার বিভিন্ন লোকের কাছে পাইকারি দামে বিক্রি করি।
মামুন সেখ আরো বলেন, ১০ থেকে ১২টি শাপলায় একেকটি আটি বাঁধা হয়েছে। প্রতি আটি শাপলা বিক্রি করা হচ্ছে১০ টাকায়। পথচারী ও এলাকাবাসী পছন্দের শাপলা কিনে নিচ্ছেন। এতে প্রতিদিন ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ শত টাকা পর্যন্ত নিজে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি।
কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম হোড় জানান, শাপলা প্রাকৃতিকভাবে জন্মে। এর চাষ পদ্ধতি এখনো প্রচলিত হয়নি। শাপলা ফুল সাধারণ সবজি থেকে অনেক বেশি পুষ্টিগুণে ভরপুর। শাপলা জাতীয় ফুল হলেও সবজি হিসেবে শাপলার কদর রয়েছে অনেক বেশী।
তিনি আরো বলেন, এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম আছে। এছাড়া এ্যালার্জি, চর্মরোগ, আমাশয়, অ্যাসিডিটিতেও এটা বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। মানসিক রোগেও এর ব্যবহার করা হয়। ফলে সবজী হিসেবে এর গুণ অপরিসীম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।