জুমবাংলা ডেস্ক : কারওয়ান বাজারে ৪০ টাকা করে বেগুন কিনে একজন বিক্রি করছেন ৫০ টাকা, আবার আরেকজন বিক্রি করছেন ৭০ টাকা। এছাড়া পণ্য কিনে আনার ক্রয় রশিদ না থাকায় ও দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা না ঝুলানোয় বাজারের চার বিক্রেতাকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকালে কাওয়ান বাজারের মাছ ও সবজির বাজারে তদারকিমূলক কার্যক্রম পরিচালনার সময় চার বিক্রেতাকে আইন অনুযায়ী এসব জরিমানা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এ সময় অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডলসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা প্রথমেই কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে তদারকি করেন। এ সময় তারা নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ ও দাম সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। পরে চালের বাজার হয়ে মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অনেক বিক্রেতার কাছে মাছ কিনে আনার ক্রয় রশিদ নেই৷ তখন ক্রয় রশিদ না থাকায় সালাম নামের এক মাছ বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অন্যান্যদের সচেতন করা হয়।
এরপর সবজির বাজারে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে সরকারি এই সংস্থাটি। তদারকিতে দেখা যায় ৪০ টাকায় প্রতি কেজি বেগুন কিনে এনে একেক বিক্রেতা একেক দামে বিক্রি করছে। তখন ক্রয় রশিদ ও পণ্যের মূল্য তালিকা না থাকায় মো. নয়ন নামের এক সবজি বিক্রেতাকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া হাসান নামের এক খুচরা লেবু বিক্রেতাকে ১০০ টাকা ও আলমগীর নামের এক পাইকারি লেবু বিক্রেতাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
এরপর মুরগির বাজার তদারকি করে অভিযান সমাপ্তি করা হয়।
অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি টিম আজকে কারওয়ান বাজার পর্যবেক্ষণে এসেছি। আমাদের আরও চারটি টিম রাজধানীর কাপ্তান বাজার, মিরপুরের শাহ আলী মার্কেট, মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজারে দিনব্যাপী অবস্থান করে পর্যবেক্ষণ করবে। বাজারে যদি কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটিকে আমরা দায়বদ্ধতার মধ্যে আনবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে কারওয়ান বাজারে দেখেছি ৪০ টাকা করে বেগুন কিনে একজন বিক্রি করছেন ৫০ টাকা, আবার আরেকজন বিক্রি করছেন ৭০ টাকা। বাজারে দেখা গেছে পাইকারি বাজারে ছয় টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। সেই লেবু বাইরে ১০-১২ টাকা দরে বিক্রির চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা তো হতে পারে না, এটা ভোক্তার সঙ্গে প্রতারণা। তাই এক বিক্রেতাকে আমরা আইন অনুযায়ী জরিমানা করেছি।
তিনি আরও বলেন, মাছ বাজারে তদারকিকালে আমরা দেখেছি, তারা ক্রয় রশিদ রাখেন না। আমরা তাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছি। বাজারের সাধারণ সম্পাদককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিষয়টি যেন তারা আজকের মধ্যে বসে ঠিক করে নেন। আগামীকাল আমাদের টিম আবার পর্যবেক্ষণে আসবে। লেবু তিনি আরও বলেন, গতকাল চারটি বড় প্রতিষ্ঠান ফার্ম পর্যায়ে মুরগির দাম ঠিক করেছে। সেটি এখনো বাজারে আসেনি। কিন্তু আজকে মুরগির বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইতোমধ্যে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমেছে।
মুরগির নতুন চালান না আসার আগেই কীভাবে দাম কমলো সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছে।
এ সময় ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, ২০২৩ সাল হবে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা ভোক্তা, ব্যবসায়ী, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করবো। আমরা পারস্পরিক পরিপূরক হবো। আর যারা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করবেন, যারা মজুদ করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান হবে কঠোর। আমাদের ব্যবসায়ীরা অবশ্যই লাভ করবেন। দেশের সবচেয়ে বেশি রাজস্ব তারা দেন। রাজস্ব প্রদানের পাশাপাশি ভোক্তাদের প্রতি তাদের যে নৈতিক দায়িত্ব, ভোক্তার অধিকারের জায়গায় ব্যবসায়ীদের আরও সচেতন হবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।