লাইফস্টাইল ডেস্ক : সন্তাকে সঠিক পথ দেখাতে হলে, সবার আগে হতে হবে তার বন্ধু। অবশ্য বন্ধু হওয়াও এতটাই সহজ নয় যে, বললেন আর হয়ে গেল। ঈদের এই লম্বা ছুটি পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য অনেক বড় একটি সুযোগ। সন্তানের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেই হবে। তা না হলে অচিরেই আপনারা একে অপরের থেকে দূরে চলে যাবেন। ফলে সে আপনাকে নিজের ভালো-মন্দের কোনও খবর না দিতেও পারে। তার বন্ধুত্ব ঝালিয়ে নেওয়ার এখনই বড় সুযোগ। তাই কাজে লেগে পড়ুন।
অনেক মা-বাবা আছেন যারা সন্তান শাসনের মধ্যে রেখে বড় করেন। তাই তারা কোন সমস্যায় পড়লে বাবা-মায়ের কাছে শেয়ার করার সুযোগ পায় না। এভাবেই ধীরে ধীরে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বাড়তেই থাকে। তাই নিজেদের মধ্যে নৈকট্য বজায় রাখতে ছোট থেকেই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠতে হবে। ঠিক কোন কোন কৌশল মেনে চললে ছোট্ট সোনামনির সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব পাতিয়ে নেওয়া সহজ হবে? জেনে নিন।
পর্যাপ্ত সময় দিন
আজকালকার বাবা-মায়েরা সকলেই চাকরি নিয়ে খুবই ব্যস্ত। আর সেই কারণেই তাঁরা নিজের সন্তানকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। যার ফলে বাড়তে থাকে দূরত্ব। বন্ধের এই সময়টাতে এই দূরত্ব কিছুটা হলেও কমাতে পারেন। কারণ সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করতে চাইলে, সবার প্রথমে সময় দিতে হবে। তবে এই সময় দেওয়ার অভ্যাস অফিস খুললে যেন বন্ধ না হয়ে যায়। অফিসের সময়টা বাদ দিয়ে যেটুকু বাঁচে, সেটুকু বাচ্চার পিছনে খরচ করুন। নিয়মিত করে দেখুন আপনাদের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়বে।
সন্তানের মনে কথা জানুন
কারও মনের কথা জানা খুব একটা সহজ কাজ নয়। সেটা যদি হয় ছোট্ট শিশু, তাহলে তো আরও নয়। তাই যেটুকু সময় পাবেন তার সঙ্গে গল্প করুন। গল্পে গল্পে তার কী ভাল লাগে, কী মন্দ লাগে জানুন। এমনকী তার কোন সমস্যা হয়েছে কিনা, পড়ে গিয়েছে কিনা, ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করেছে কিনা জেনে নিন। আপনি সারাদিন কিভাবে কাটান কী করেন, কীভাবে করেন সেগুলো গল্পের মাধ্যমে বলুন। এর মধ্যে থেকে সে শিখে নেবে। তার সঙ্গে নিজের সারাদিনের সব ভালো-মন্দ শেয়ার করুন। দেখবেন সেও আপনার সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করছে।
খেলার জন্য আলাদা সময় নয়
অনেকে মনে করেন, বিকেল হলেই শুধু খেলাধুলা করবে। আর বাকি সময় পড়া-লেখা বা নিজের কাজ সারবে। এটা একদমই ঠিক নয়। খেলার জন্য শিশুকে আলাদা সময় বেধে দিবেন না। পড়ার মাঝেও খেলায় মেতে উঠতে পারেন। যেমন ধরুন সে বল নিলে একটা ছড়া পড়ছে, সেটি শেষ হতেই আপনি তার সঙ্গে বল খেলা শুরু করলেন। শেষ করে আবারও পড়তে বসালেন। যদি তখন সে আর পড়তে না চাই, জোর করবেন না। তার মন ভরে গেলে ঠিকই সে পড়তে বসবে। আর ছুটির দিনগুলিতে তাকে নিয়ে মাঠে যেতে পারেন। সেখানে সন্তানের সঙ্গে ক্রিকেট, ফুটবলে মেতে উঠুন। দেখবেন ঠিকই সন্তানের মন পাবেন।
তার মতামতের গুরুত্ব দিন
অনেক সময় আপনার ছোট্ট শিশুটিও কোন বিষয়ে মতামত দিতে পারে। যদি সম্ভব হয়, সেটি করুন। আর যদি সম্ভব না হয়, তাহলে এমন ভাবে করুন যে তার মনেহয় আপনি তাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সন্তান কোনও পরামর্শ দিলে তার কথা মন দিয়ে শুনুন। তারপর যদি আপনার সেই যুক্তি পছন্দ হয়, তাহলে তা মেনে চলুন। আর তার কথায় যদি কোনও যুক্তি না থাকে, তাহলে সেই বিষয়টা সম্পর্কে তাকে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন। এই কাজটা করলেই সন্তান আপনাকে ধীরে ধীরে প্রিয় বন্ধুর মর্যাদা দেবে।
যেকোনো সমস্যায় পাশে দাঁড়ান
বন্ধু মানেই, মুশকিল আসান। তাই কোনও সমস্যায় পড়লে আমরা তাঁর কাছে ছুটে যাই। আর তাঁরাও সমস্যা থেকে বাঁচানোর জন্য সর্বস্ব ভুলে ঝাপিয়ে পড়ে। তাই সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে চাইলে তার খারাপ-ভালোয় বট গাছের মতো ছায়া দিন। তাহলেই দেখবেন সে আপনাকে নিজের বন্ধু হিসাবে মেনে নেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।