জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনায় পুরো রমজান মাসজুড়ে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য মিলছে ১০০ টাকায় মুরগির মাংস এবং ২০০ টাকায় হাড় চর্বি ছাড়া গরুর মাংস।
স্বল্প আয়ের মানুষের খাবার সুযোগ করে দিতে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা পাবলিক কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন এক্স কেপিসিয়ান অ্যাসোসিয়েশন। এ প্রক্রিয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের চাহিদা অনুযায়ী সীমিত আকারে মাংস বিক্রি করতে বিক্রেতাদের আগ্রহী করার চেষ্টা করছেন তারা।
রোববার (২ এপ্রিল) নগরীর বয়রায় খুলনা পাবলিক কলেজের সামনে দেখা যায়, প্যাকেট করা ৩০০ গ্রাম হাড় চর্বি ছাড়া গরুর মাংস ২০০ টাকা এবং প্রসেসিং করা ৫০০ গ্রাম মুরগির মাংস ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি প্যাকেটে সারপ্রাইজ হিসেবে ২০-৩০ গ্রাম মাংস বেশি ছিল।
এ ধরনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নিম্নআয়ের মানুষদের মধ্যেও দোকানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। ভর্তুকি দিয়ে আয়োজকরা এ ধরণের খাবার বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে। ভিন্ন এ উদ্যোগের ক্রেতা ছিলেন রিকশাচালক, ইজিবাইক চালক, দিনমজুরসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। মাত্র ২০০ টাকায় প্রয়োজনীয় গরুর মাংস কিংবা ১০০ টাকায় মুরগির মাংস কিনতে পেরে দারুণ খুশি ক্রেতারাও। বিভিন্ন বাজারেও এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি তাদের।
ইজিবাইক থামিয়ে ২০০ গ্রাম গরুর মাংস কেনেন খালিশপুরের বাসিন্দা আব্দুল বাতেন। তিনি বলেন, ‘বাজারে গেলে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মাংস কিনতে হয়। অনেক দিন হলো মাংস কেনা হয় না। এখন অল্প পরিসরে মাংস কিনতে পারলাম। আমার পরিবারের সদস্য অনুযায়ী এতটুকুই আমার জন্য যথেষ্ট। যারা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তাদের জন্য দোয়া করি।’
আয়োজকরা বলছেন, বাজারে ছোট আকারের প্যাকেট করা মাংস বিক্রিতে দোকানিদের আগ্রহী করার জন্যই এ উদ্যোগ। বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান শামীম বলেন, আমরা মূলত মানুষকে বোঝাতে চাই, স্বল্প পরিসরেও মাংস বিক্রি করা যায়। যাতে যে কেউ এটা কিনতে পারেন তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী। আরেকটা বার্তা দিতে চাই, সেটা হলো সব বাজারেই অল্প পরিমাণে মাংস বিক্রি করা সম্ভব।
শেখ আবু নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক ও পাবলিক কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ডা. নাহিদ কামাল বলেন, ‘আমাদের এই কনসেপ্টটা চালুর মূল উদ্দেশ্য হলো, স্বল্প পরিসরে যতটুকু আমার প্রয়োজন আমি ঠিক ততটুকুই কিনতে পারি। আমরা দেখেছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশে এখনও এ সুবিধা আমাদের চোখে পড়েনি। আমরা একইসঙ্গে সব মানুষকে নিয়ে একসঙ্গে ভালো থাকতে চাই। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করতে চাই, তারাও যেন এমন উদ্যোগ নেন।’
সাবেক শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে খুশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও। খুলনা পাবলিক কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. খান আলাল উদ্দিন বলেন, ‘সাবেক শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগে আমি এবং আমার শিক্ষকরা গর্ববোধ করি। বিভিন্ন সময়ে তারা ভালো উদ্যোগে মাঠে থাকেন। তাদের এ ধরনের ভালো উদ্যোগে আমরা সব সময়ই পাশে থাকবো।’
গত ২৬ মার্চ থেকে স্বল্প পরিসরে মাংস বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সপ্তাহে পাঁচ দিন খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে মাংস বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন ২০ কেজি মাংস বিক্রি করে খুলনা পাবলিক কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন এক্স কেপিসিয়ান অ্যাসোসিয়েশন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।