জুমবাংলা ডেস্ক : রমজান মাস ও ঈদ ঘিরে পাঁচ বছর ধরে ধাপে ধাপে বাড়ানো হয়েছে গরুর মাংসের দাম। এক কেজি গরুর মাংস কিনতে ক্রেতাকে ৮০০ টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। তবে দুই থেকে তিন দিন ধরে রাজধানীর খুচরা বাজারে মাইকিং করে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকার কমে বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকায় একটি শক্তিশালী চক্র অতিমুনাফা করতে মাংসের দাম বাড়িয়েছিল। এখন বিক্রি কমায় নিজেরাই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। ফলে দাম কমিয়ে বিক্রি করছে। যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতেও তারা বাড়তি মুনাফা করছে।
এদিকে সরকারি গুদামে চালের মজুত পর্যাপ্ত। পাশাপাশি মিল থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে কোনো সংকট নেই। এরপরও বাজারে হু-হু করে বাড়ছে দাম। মিলারদের কারসাজিতে এক মাসের ব্যবধানে মিল পর্যায়ে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে রাজধানীর পাইকারি বাজারে বেড়েছে দাম। আর খুচরা পর্যায়ে প্রভাব পড়ায় ক্রেতার পকেট কাটা যাচ্ছে।
পাশাপাশি কেজিপ্রতি আটা ও ময়দা ৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে খুচরা বাজারে আলুর কেজি এখনো ৫০ টাকা। আর চিনি কিনতে ক্রেতার নাভিশ্বাস উঠছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর রামপুরা বাজারে মাইকিং করে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। একই চিত্র নয়াবাজার, মালিবাগ কাঁচাবাজারসহ একাধিক খুচরা বাজারে। তবে রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রতিকেজি ৬৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যা দুই দিন আগেও ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, প্রতিবছর রোজা ও ঈদ ঘিরে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফা করতে গরুর মাংসের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেছে। যা আর কমানো হয়নি। কিন্তু এখন মানুষের আয় নেই। বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। এমন পরিস্থিতি হয়েছে মধ্যবিত্ত পরিবারও প্রতিকেজি ৮০০ টাকায় গরুর মাংস কিনতে পারছে না। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীদের মাংস বিক্রি কমেছে। ফলে তাদের অস্তিত্ব রক্ষায় মূল্য কমিয়ে বিক্রি করছে।
মালিবাগের খোরশেদ গোস্ত দোকানের মালিক খোরশেদ আলম বলেন, গ্রামে গরুর দাম কমেছে। তাই দাম কমিয়ে মাংস বিক্রি হচ্ছে। গরুর বাজার আরও কিছুদিন নিম্নমুখী থাকলে মাংসের দাম আরও কমবে।
নয়াবাজারে মাংস বিক্রেতা রিয়াদুল বলেন, কদিন আগেও গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। তখন দিনে ৫০ কেজি মাংস বিক্রি করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। ৬০০ টাকায় বিক্রি করায় বেচাবিক্রি আগের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেড়েছে।
ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, গরুর মাংস বাড়তি দামে বিক্রির জন্য একটি সিন্ডিকেট এতদিন কারসাজি করেছে। কিছুদিন আগে আমরা ঢাকার বড় মাংস বিক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারাও ভোক্তাসহনীয় মূল্যে মাংস বিক্রি করতে চেয়েছিল। আমি মূল্য নির্ধারণের দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে গিয়েছি। কিন্তু কেউ গরুর মাংসের মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে উদ্যোগ নেননি।
তিনি জানান, খামারিদের সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বৈঠকের পর থেকেই খামারিরা কম দামে মাংস বিক্রি করছে। মূল্য নির্ধারণ করে দিলে ক্রেতারা আরও কম দামে গরুর মাংস খেতে পারবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।