আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যালকোহলযুক্ত সব পানীয়র একটি হলো বিয়ার। বিয়ারে সাধারণত প্রচুর পরিমাণ পানির দরকার হয় এবং এই পানীয়র ৯০ শতাংশই পানি। সিঙ্গাপুরের পানি সংস্থা নিউব্রিউ নামে নতুন এক ধরনের বিয়ার আনছে। যা প্রাথমিকভাবে নর্দমার মূত্র এবং নোংরা পানি পরিশোধনের মাধ্যমে তৈরি হয়।
নোংরা পানি বিশুদ্ধ করার পর সেই পানি থেকে এই বিয়ার তৈরি হয়। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে যে পানির সমস্যা তৈরি হয়েছে সেসম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা।
সিঙ্গাপুর বর্তমানে তীব্র পানি সংকটের মুখোমুখি হয়েছে; যা আগামীতে আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। আর এই সমস্যার সমাধানে মানুষকে সচেতন করে তুলতে অভিনব এই পন্থা বেছে নিয়েছে দেশটির সরকার। কিন্তু মূত্র থেকে তৈরি করা বিয়ার কি আদৌ মানুষ পান করবে? সেই প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করেছেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির মোনিকা মিলার।
নিউব্রিউ নামের এই নতুন বিয়ারকে সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে গ্রিন বিয়ার বলে দাবি করা হচ্ছে। এর একটি উপাদান হল সবচেয়ে আধুনিক প্রুযক্তি ব্যবহার করে বিশুদ্ধ করা পানি। যাকে দেশটিতে ‘নিওয়াটার’ বলা হয়। ফিল্টার করা তরল হল নিওয়াটার। যা নর্দমার পানি থেকে উৎপন্ন হয়।
নর্দমার পানি থেকে তৈরিকৃত নতুন বিয়ার দেশটির বিভিন্ন দোকান এবং বারে পাওয়া যাচ্ছে। এই বিয়ার পানের জন্য সিঙ্গাপুরের একটি বারে আসা এক তরুণ বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার যা দরকার এটি ঠিক তাই।
দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, নিউব্রিউ বিয়ারে জার্মানি থেকে আনা বার্লি এবং নরওয়ের ইস্ট ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এর প্রধান উপাদান নিওয়াটার। এতে ৯৫ শতাংশ নিওয়াটার ব্যবহার করা হয়েছে। বিবিসিকে সিঙ্গাপুরের কর্মকর্তারা বলেছেন, কঠোর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে এই বিয়ার তৈরি এবং বাজারজাত করা হচ্ছে।
বিয়ারটির স্বাদ কেমন, জানতে চাইলে বারে আসা এক ব্যক্তি পান করতে করতে বলেন, ‘এটি বেশ সুস্বাদু। সম্ভবত আমি এই বিয়ার বেশি পরিমাণে পান করতে চাই।’
গত ২০ বছর ধরে সিঙ্গাপুর বিশুদ্ধ করার মাধ্যমে নর্দমার পানি ব্যবহার করে আসছে। নতুন বিয়ারের লেবেলে এর প্রধান উপাদান হিসেবে পানির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অনেকের কাছে এটি অস্বাস্থ্যকর মনে হতে পারে। তবে নিওয়াটারকে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পাওয়ার আগে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। স্বাস্থ্যগত সব মান উতড়ে যাওয়ার পর কেবল এই পানি সরবরাহ করা হয়।
নিওয়াটার মূলত মাইক্রোচিপ তৈরির কারখানায় ব্যবহৃত হয়; যা এই নগররাষ্ট্রের সর্বত্রই আছে। মাইক্রোচিপ তৈরিতে উচ্চমানের বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন হয়। শহরের ভবনের কুলিং সিস্টেমের জন্যও এই পানির দরকার।
দেশটির পানি সংস্থা বলছে, নর্দমার পানি বিশুদ্ধ করার মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের পানির চাহিদার ৪০ শতাংশ পূরণ করা যেতে পারে। তবে ২০৬০ সালের মধ্যে তা বেড়ে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। পানীয় জলের সরবরাহ বাড়াতেও সাহায্য করে এই পানি। শুকনো মৌসুমে কয়েকটি জলাধারে পানি সংরক্ষণ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে সেগুলো পরিশোধনের মাধ্যমে ট্যাপে সরবরাহ করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।