লাইফস্টাইল ডেস্ক : আমাদের জীবনে আমরা প্রায়শই উৎপাদনশীলতা এবং উদ্দেশ্য -কে সমার্থক মনে করি। আমরা ভাবি, যত বেশি কাজ করব, ততই আমরা জীবনের লক্ষ্য বা সার্থকতার কাছাকাছি পৌঁছাব। কিন্তু সত্যিই কি তা-ই? আধুনিক গবেষণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে, উৎপাদনশীলতা এবং উদ্দেশ্য আসলে একে অপরের বিপরীত। যখন আমরা কেবল কাজের সংখ্যা ও দক্ষতা বাড়ানোর দিকেই মনোযোগ দিই, তখন জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে সরে যেতে থাকি।
উৎপাদনশীলতার মূল লক্ষ্য হলো সময়ের মধ্যে যত বেশি সম্ভব কাজ সম্পন্ন করা। অন্যদিকে, উদ্দেশ্য হলো সেই গভীর অভিপ্রায় বা লক্ষ্য যা আমাদের জীবনকে অর্থবহ করে তোলে। দুটি বিষয় একসঙ্গে চলতে পারে, তবে যখন আমরা কেবল উৎপাদনশীলতার পেছনে ছোটার কারণে উদ্দেশ্যের গুরুত্ব ভুলে যাই, তখন সমস্যার সৃষ্টি হয়।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা সর্বদা ব্যস্ত থাকেন এবং কাজের তালিকা সম্পূর্ণ করতে ব্যস্ত থাকেন, তারা জীবনের বৃহত্তর লক্ষ্য বা মানসিক প্রশান্তি হারিয়ে ফেলেন। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকেন কিন্তু তিনি কেন কাজটি করছেন বা এটি তার জীবনে কী প্রভাব ফেলছে—সে বিষয়ে চিন্তা না করেন, তাহলে একসময় তার কাজ অর্থহীন মনে হতে পারে।
কেন উদ্দেশ্যকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন
১. অর্থপূর্ণ জীবন: উদ্দেশ্য আমাদের জীবনের গভীরতাকে বোঝাতে সাহায্য করে। শুধু ব্যস্ত থাকার জন্য ব্যস্ত থাকার কোনো মানে নেই, বরং আমাদের জানা উচিত, আমরা কেন একটি কাজ করছি।
২. মানসিক প্রশান্তি: শুধু উৎপাদনশীলতার জন্য কাজ করলে মানসিক চাপ বেড়ে যায়। উদ্দেশ্যনির্ভর জীবন মানসিক শান্তি এবং আত্মতৃপ্তি এনে দেয়।
৩. সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ: উদ্দেশ্য জানা থাকলে আমরা অপ্রয়োজনীয় কাজ এড়িয়ে চলতে পারি এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর দিকে মনোযোগ দিতে পারি।
৪. সৃষ্টিশীলতা বৃদ্ধি: উদ্দেশ্যপূর্ণ চিন্তা আমাদের নতুন নতুন ধারণা নিয়ে ভাবতে সাহায্য করে, যা কেবলমাত্র কাজের গতি বাড়ানোর চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান।
উৎপাদনশীলতা ও উদ্দেশ্যের মধ্যে ভারসাম্য
কাজের চাপের মধ্যেও কিভাবে আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য বজায় রাখতে পারি? এর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে:
“টু-ডু” তালিকার পাশাপাশি “টু-বি” তালিকা রাখা: প্রতিদিন কেবল কাজের তালিকা তৈরির বদলে, আমরা কীভাবে থাকতে চাই বা কী অর্জন করতে চাই—সেটার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
সময় বের করা: ব্যস্ততার মাঝেও প্রতিদিন কিছু সময় নিজেদের জন্য রাখা উচিত, যেখানে আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে পারি।
অপ্রয়োজনীয় ব্যস্ততা পরিহার: সব ব্যস্ততাই উৎপাদনশীলতা নয়। আমাদের শেখা উচিত কোন কাজগুলো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনগুলো শুধুই সময়ের অপচয়।
প্রকৃত সফলতা শুধু উৎপাদনশীলতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়াতেই নিহিত। আমাদের বুঝতে হবে যে, সব কাজের পেছনে মানে থাকা জরুরি।
https://inews.zoombangla.com/nowgate-romjan-upolokkhe-akdshgajksdghajksdg/
যদি আমরা শুধু কাজের জন্য কাজ করি, তাহলে সেটি একসময় অর্থহীন হয়ে যাবে। তাই মাঝে মাঝে আমাদের ধীর হওয়া, আত্মবিশ্লেষণ করা এবং জীবনের প্রকৃত অর্থ খুঁজে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ, উদ্দেশ্য ছাড়া উৎপাদনশীলতা শুধুই একটি অন্তহীন দৌড়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।