আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা নিয়েছে, যা বহু মানুষের মনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত ৬ ও ৭ মে রাতে সংঘটিত একাধিক ঘটনার পর, পাকিস্তান দাবি করেছে যে তারা অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি অত্যাধুনিক রাফাল যুদ্ধবিমান। এমন সময় যখন পুরো বিশ্ব এই উত্তেজনার দিকে নজর রাখছে, তখন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার নতুন তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে। নয়াদিল্লি এখন পর্যন্ত এই দাবি করেনি।
ভারতীয় যুদ্ধবিমানের ভূপাতিত হওয়া দাবি
পাকিস্তানী নিরাপত্তা সূত্রের মতে, গত ৬ ও ৭ মে রাতের অভিযানে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ভারতীয় যুদ্ধবিমান বাংলাদেশের আকাশসীমায় প্রবেশ না করে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে পাকিস্তানের ছয়টি ভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী জবাবে একাধিক ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে বলে জানা গেছে। ওয়াশিংটন পোষ্টের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর নিশ্চিত করেছে।
সূত্রগুলো দাবি করে, ভারতের একটি রাফাল যুদ্ধবিমান জম্মু ও কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার গাডুল কোকেরনাগ এলাকায় ভূপাতিত হয়। সেখানে বিমানটির ইজেকশন সিট উদ্ধার করা হয়েছে। অপরদিকে, পুলওয়ামার পাম্পোর এলাকায় আরও একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়, যেখানে দুই পাইলট গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেকটি বিমান রামবান জেলার পান্তিয়াল এলাকায় ভূপাতিত হয়েছে, যার পাইলট ফ্লাইং অফিসার ইকবাল সিং আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এছাড়াও, জম্মুর আখনূরের ভরদা কালান এলাকায় আরেকটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর এসেছে, যেখানে দুই পাইলট আহত অবস্থায় আখনূর মিলিটারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পাকিস্তানী সূত্রের মতে, এর মধ্যেই পাঞ্জাবের ভাঠিন্ডা শহরেও একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে। তাদের দাবি, পাকিস্তান দ্রুত প্রতিরোধ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে এবং কোনো যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
পাকিস্তানের দাবি ও ভারতের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তান এই অভিযানের সাফল্যকে ‘১০০-০’ বলে উল্লেখ করে বলেছে, এটি ভারতের সামরিক ব্যর্থতাকে স্পষ্ট করেছে। তবে, ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের যুদ্ধবিমান হারানোর বিষয়টি স্বীকার করেনি। এয়ার মার্শাল এ.কে. ভারতী একটি বিবৃতিতে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন, কিন্তু বলেন যে আসল প্রশ্ন হলো তারা কি তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা সন্ত্রাসী পরিকাঠামো ধ্বংস করেছি।”
এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মিরের পাহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়। ভারত পাকিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে শুরু করে, কিন্তু তারা কোন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি। ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে এবং এই ঘটনাগুলো দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে ভীষণ চিড় সৃষ্টি করে।
ভারত তিনটি প্রধান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে: ২৩ এপ্রিল ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল এবং সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের ঘোষণা। পাকিস্তান এ পদক্ষেপগুলোকে ‘যুদ্ধের উসকানি’ বলে নিন্দা জানায়।
সামরিক উত্তেজনা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ‘বুনিয়ান-উল-মারসুস’ নামে পাল্টা সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছে। পাকিস্তান দাবি করে, এর মাধ্যমে ভারতের অভ্যন্তরে ২৬টি সামরিক অবস্থানে আঘাত হানা হয়েছে। চলমান এই উত্তেজনা কেবল সামরিক দিকেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপরও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের জীবন কতটা প্রভাবিত হচ্ছে, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনাগুলোর কারণে উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে বৈরিতা আরও বেড়ে গেছে। সমসাময়িক সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনার অব্যাহত প্রতিবেদন এবং বিশ্লেষণ আগামী দিনে কীভাবে পরিস্থিতির উন্নতি বা অবনতির দিকে যেতে পারে, তা বিশেষ নজরে রাখতে বিশেষ গুরুত্ব প্রাপ্ত।
আপনার যদি আরও জানার আগ্রহ থাকে, তবে এই লিঙ্কে ক্লিক করে আরও তথ্য পেতে পারেন।
১. ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার বিষয়টি কতটুকু সঠিক?
বিভিন্ন সূত্রের দাবি অনুযায়ী, পাকিস্তান অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এ দাবি স্বীকার করেনি।
২. পাকিস্তান কেন এই দাবি করছে?
পাকিস্তান বলছে যে, এটি তাদের সামরিক সাফল্যের চিহ্ন, যার মাধ্যমে ভারতের সামরিক ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে।
৩. ভারত কেন হামলা চালাল?
ভারতের হামলার মূল কারণ হলো ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলা, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়।
৪. এই উত্তেজনার ফলে সাধারণ মানুষের জীবন কিভাবে প্রভাবিত হচ্ছে?
সামরিক উত্তেজনা সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ এবং বৈরিতা বৃদ্ধি করেছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করছে।
৫. পাকিস্তানের পাল্টা কর্মকাণ্ড কী ছিল?
পাকিস্তান তাদের পাল্টা সামরিক অভিযান ‘বুনিয়ান-উল-মারসুস’ পরিচালনা করে, যেখানে তারা ভারতের কয়েকটি স্থানে আঘাত হানার দাবি করেছে।
৬. এই উত্তেজনার ভবিষ্যৎ কি হতে পারে?
নতুন উত্তেজনার সম্ভাবনা চলছে, যা দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং সাধারণ মানুষের অবস্থা উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।