আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চাইনিজ স্লিপ রিসার্চ সোসাইটি’র একটি ঘুম গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মহামারির পর থেকে চীনে ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ।
অনিদ্রা রোগে আক্রান্ত এ মানুষগুলোরই একজন জুয়ান ই। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তিনি মনস্তাত্ত্বিক কাউন্সেলিং থেকে শুরু করে এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার সব উপায়েরই দ্বারস্ত হয়েছেন। কোনো চিকিৎসায়ই ফল না পেয়ে অবশেষে তিনি ঘুমের অসুখে বেছে নিয়েছেন সুরের ওষুধ।
চীনে সম্প্রতি বেশ চাঙা হয়ে উঠেছে নির্ঘুম মানুষদের ‘ভাতঘুম সেন্টার’। বেইজিংয়ে এমনই একটি সেন্টারে শান্তির ঘুমের উপায় হিসাবে দেওয়া হয় ‘সুর থেরাপি’। আর এতে ৫০ মিনিট ঘুমের জন্য ১৮০ ইউয়ান অর্থাৎ প্রায় ২৭০০ টাকা মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এএফপি।
চারপাশের অফিস ভবন বেষ্টিত বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলের এই ভাতঘুম সেন্টারটি পরিচালনা করেন লি ইয়ান। ঘুমের জন্য তিনি তরুণ কর্মীদের ব্যস্ত রুটিন অনুযায়ী সময় ও স্লট অফার করেন। কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকেই চীনে ঘুমের অর্থনীতিতে চাহিদা ক্রমবর্ধমাণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান লি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়ার তথ্যানুযায়ী, করোনা মহামারির শুধু প্রথম বছরেই বিশ্বব্যাপী হতাশা ও উদ্বেগ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
চীনের কর্মক্ষেত্রে উচ্চচাপের সংস্কৃতির ফলস্বরূপ দেশটির অনেক যুবককেই এই ভাতঘুম সেন্টারের দ্বারস্ত হতে হয়েছে। লি-এর এই সেন্টার নিয়ে জুয়ান বলেন, ‘আমার অনেক কাজের চাপ ছিল। আমি রাত ২টা থেকে ৩টার আগে ঘুমাতে পারতাম না। আবার প্রতিদিনের কাজ শুরু করার জন্য সকাল ৭টায় উঠতে হতো। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করতাম আমি। কিন্তু অনেকদিন ধরেই আমার ভালো ঘুম হচ্ছিল না। কিন্তু লি ইয়ানের স্টুডিওতে পর্দা বন্ধ করে যখন নিরাময়কারী গানের সুর বেজে উঠে তখনই আমি আমার সমস্যা থেকে মুক্তি পাই।’ লি ইয়ান ঘণ্টা, ইউক্রেনীয় পানির ড্রাম, রেইনস্টিক এবং হ্যান্ডপ্যানের শব্দে এই সুর তৈরি করেন।
এ সম্পর্কে লি বলেন, ‘মস্তিষ্ককে একটি সংক্ষিপ্ত বিরতি দিতে অস্থির মনের কয়েক ডজন মানুষ একসঙ্গে এই চিকিৎসা নেন। আর বিশ্রাম নেওয়ার এই পদ্ধতিটিকে তিনি সেল ফোনের ব্যাটারি তিন শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত চার্জ করার সঙ্গে তুলনা করেছেন। আলিবাবার মতো জায়ান্ট কোম্পনির কর্মীরাও লি-এর সেশনগুলোকে টিম-বিল্ডিং অনুশীলন হিসাবে ব্যবহার করেছেন বলে জানান লি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।