জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সুস্থ বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, সাবেক বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর তথ্য সত্য নয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া মৃত্যুর খবরটি গুজব।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে ফেসবুকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী সাবেক বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি খোলাসা করেন ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বলেন, সাবেক বিচারপতি মানিক সুস্থ আছেন। তিনি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ‘ডিভিশন’ পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এদিকে, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
রিউমর স্ক্যানার জানায়, কারাগারে বিচারপতি মানিকের মৃত্যুর খবরটি সত্য নয় বরং, কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। অনুসন্ধানের শুরুতে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বিশ্বস্ত কোনো গণমাধ্যম বা নির্ভরযোগ্য সূত্রে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তাদের দাবি, সাধারণত সাবেক বিচারপতি মানিকের মতো আলোচিত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। তবে নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসে এমন তথ্য পাওয়া না যাওয়ায় প্রচারিত দাবিটি ভিত্তিহীন বলে প্রতীয়মান হয়।
সাবেক বিচারপতি মানিক একের পর এক আলোচনার জন্ম দিয়ে বেশ ভাইরাল নেট দুনিয়ায়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যু নিয়ে টকশোতে উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীর সঙ্গে অশালীন আচরণের ঘটনায় যদিও ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে জনগণের কাছেও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজের কাছে লিখিতভাবে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি।
ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে সাবেক বিচারপতি মানিক লিখেছেন, তিনি একজন হাইপারটেনশন ও ডায়াবেটিসের রোগী। টক শোর দিন তাকে অনেক লম্বা পথ হেঁটে প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হয়েছিল। ফলে তার ব্লাড সুগার নেমে যায় ও ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায় এবং একই সঙ্গে তিনি প্রচুর ক্লান্ত বোধ করছিলেন। যার কারণে তিনি তার নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি তার এরূপ আচরণের জন্যে উপস্থাপিকার কাছে গভীরভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, সাবেক বিচারপতি মানিক সিনিয়র অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজকে তার পাঠানো আইনি নোটিশের জবাব দিয়েছেন। সেখানে তিনি উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরী এবং জনগণের কাছে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
টকশোতে আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে সাবেক বিচারপতি মানিক একপর্যায়ে সঞ্চালক দীপ্তি চৌধুরীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। পুরো অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকবার উপস্থাপিকার ওপর নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন এবং উচ্চবাচ্য করেন। শুধু তা-ই নয়, অনুষ্ঠান শেষে স্টুডিও ছাড়ার আগে উপস্থাপিকাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেও মন্তব্য করেন।
এর কয়েকদিন পরই ২৩ আগস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট দনা সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে আটক হন তিনি। পরে তাকে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় কিশোর আব্দুল মোতালিব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডি থানাধীন এলাকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন আব্দুল মোতালিব (১৪)। পরে তিনি বুকে ও গলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৬ আগস্ট নিহতের পিতা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৭৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাত ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলার ২২ নম্বর আসামি মানিক।
তিনি আরও ছয়টি পৃথক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হন। এর মধ্যে আদাবর থানার গার্মেন্টস কর্মী রুবেল হত্যা, লালবাগ থানার আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা ও বাড্ডা থানার পৃথক চারটি হত্যা মামলা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।