জুমবাংলা ডেস্ক : কাঠ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সাইকেল। চাকা থেকে শুরু করে পুরো কাঠমোই কাঠের তৈরি। বাগেরহাটে এই সাইকেল তৈরি হলেও বাংলাদেশের কোনো বাজারে বিক্রি হয় না। সাইকেলগুলো তৈরি হয় শুধুই ইউরোপের জন্য।
কাঠ দিয়ে নিপুণ হাতে বেবি ব্যালেন্স সাইকেলটি তৈরি করেন স্থানীয় ৩০ জন নারী-পুরুষ। এদের কেউ চাকা তৈরিতে অভিজ্ঞ, কেউ তৈরি করেন সাইকেলের হ্যান্ডেল বা ফ্রেম। রঙ দিয়ে পলিশ করে দেখতে আকর্ষণীয় করা হয়। এভাবে ৩০ জন কর্মী মিলে প্রতিদিন তৈরি করেন অন্তত ৩০টি সাইকেল।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানায় কাঠের সাইকেল তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা। কেউ তৈরি করছেন চাকা, কেউ তৈরি করছেন হ্যান্ডেল, আবার কেউ সাইকেলের ফ্রেম। সবশেষে শ্রমিকদের নিপুণ হাতে কাঠের বাইকে নানান রং দিয়ে পলিশ করা হচ্ছে।
বিসিক শিল্প নগরীর ন্যাচারাল ফাইবার কারখানায় সুপার ভাইজার আব্বাস বলেন, আকাশমণি, মেহগনি ও গামারিসহ বিভিন্ন ভালোমানের কাঠ দিয়ে বিদেশি শিশুদের জন্য বেবি ব্যালেন্স সাইকেল তৈরি করি। এই সাইকেল তৈরি করতে দেড় থেকে দুই দিন লেগে যায়। সাইকেলটি তৈরি করতে ১১টি পার্টের প্রয়োজন হয়। কারখানার বিভিন্ন স্থানে পার্টগুলো তৈরি করা হয়। নির্দিষ্ট একটি স্থানে সকল পার্ট একত্র করে একটি সাইকেলে রূপান্তরিত করা হয়।
কারখানার নারী শ্রমিক পূজারানী জানান, এখানে কাজ করে যে বেতন পাই তাতে আমার সংসার এবং ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চলে। এখানে বাচ্চাদের সাইকেল তৈরি করতে পেরে আমরা খুশি।
রং মিস্ত্রি মামুন শেখ বলেন, প্রতিদিন কারখানায় প্রায় ৩০টি সাইকেল তৈরি করা হচ্ছে। ভাবতেই অবাক লাগে আমার হাতের সাইকেলে রঙের ছোঁয়া ইউরোপে রপ্তানি হচ্ছে। সত্যিই খুব ভালো লাগে। আমাদের দেশে যদি এসব কাজের সুযোগ আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে দেশে থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
বাগেরহাট বিসিক শিল্প নগরীর ন্যাচারাল ফাইবার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা মোস্তাফিজ আহমেদ জানান, আমরা সাধারণতো নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে পণ্য তৈরি করতাম। সম্প্রতি ইউরোপের কাস্টমার পেয়েছি, যারা পরিবেশবান্ধব পণ্য বাজারজাত করতে আগ্রহী। যারা কাঠের কিছু প্রোডাক্ট নিতে চায়, তাদের কাছ থেকে কাঠের বেবি ব্যালেন্স সাইকেল অর্ডার পাই। তারা ৪০ হাজার পিস অর্ডার দিলে আমরা ২০ হাজার পিস এক্সপোর্ট করেছি। আর ২০ হাজার পিস খুব তাড়াতাড়ি যাবে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের বাগেরহাটের প্রমোশন অফিসার শরিফ সরদার জানান, বিসিক শিল্প নগরীতে মুস্তাফিজুর রহমান সব সময়ই ইউনিক আইডিয়ায় কাজ করেন। বর্তমানে কাঠের সাইকেল তৈরি করে ইউরোপে রপ্তানি করছেন। এটি শতভাগ রপ্তানিযোগ্য একটি পণ্য। এর মাধ্যমে যে শুধু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে সেটা নয়। স্থানীয়ভাবে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সব সময় উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে যাচ্ছি। এ ধরনের পণ্য বিদেশে গেলে আমাদের দেশের সুনাম বাড়ে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।