মোটরসাইকেল শুধু যাতায়াতের উপায় নয়, অনেকের কাছে এটি একটি আবেগ, দৈনন্দিন সঙ্গী। তবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ—ইঞ্জিন—দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। নিচে এমন
১০টি কার্যকর টিপস দেওয়া হলো, যেগুলো মেনে চললে আপনার বাইকের ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ভালো থাকবে এবং পারফরম্যান্সও থাকবে ঝকঝকে ।১. নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করুন
ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের “রক্ত”। সময়মতো এটি পরিবর্তন না করলে ইঞ্জিনে ঘর্ষণ বেড়ে যায় এবং ক্ষতি হয়।
প্রতি ১,০০০–২,০০০ কিমি পরপর (বা ম্যানুয়াল অনুযায়ী) অয়েল বদলানো উচিত।
সঠিক গ্রেডের অয়েল ব্যবহার করুন, যেমন 10W30 বা 20W40 (বাইক অনুযায়ী)
২. প্রথম ১,০০০ কিমিতে বেশি স্পিডে বাইক চালাবেন না
নতুন বাইকের “রানিং পিরিয়ড” খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুরুতেই বেশি রেভ দিলে ইঞ্জিনে অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে।
৩. সঠিকভাবে গিয়ার পরিবর্তন করুন
কম গতিতে উচ্চ গিয়ার বা উচ্চ গতিতে কম গিয়ার ব্যবহার করলে ইঞ্জিনে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
স্মুথ গিয়ার শিফট করলে ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
৪. ইঞ্জিন ওভারহিট হওয়া থেকে বিরত থাকুন
গরমের দিনে বারবার লং ড্রাইভ দিলে বা ট্রাফিকে বেশি সময় থেমে থাকলে ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হতে পারে।
বাইকে কুলিং সিস্টেম (এয়ার কুলড/অয়েল কুলড) ঠিকমতো কাজ করছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৫. বাইক চালানোর আগে ৩০ সেকেন্ড ‘ওয়ার্ম আপ’ করুন
স্টার্ট দেয়ার পর ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট পর্যন্ত বাইক স্থির রেখে অয়েল সার্কুলেশন সম্পন্ন হতে দিন।
৬. নিয়মিত এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার বা পরিবর্তন করুন
এয়ার ফিল্টার ব্লক হলে ইঞ্জিন পর্যাপ্ত বাতাস পায় না, ফলে কম্প্রেশন ও ফুয়েল বার্নিং ঠিক হয় না।
প্রতি ২,০০০ কিমি পর পর পরিষ্কার/প্রয়োজনে বদলান।
৭. সঠিক অকটেন বা পেট্রোল ব্যবহার করুন
কম মানের বা ভেজাল জ্বালানি ইঞ্জিনে কার্বন জমিয়ে দেয়, যা ইঞ্জিনের ক্ষতি করে।
ব্র্যান্ডেড ফুয়েল পাম্প থেকে তেল নিন।
৮. বাইক নিয়মিত সার্ভিসিং করুন
প্রতি ২–৩ মাস পর একজন অভিজ্ঞ মেকানিকের মাধ্যমে সাধারণ চেকআপ করান।
এতে ইঞ্জিন সংক্রান্ত ছোট সমস্যা আগেই ধরা পড়ে এবং বড় ক্ষতি এড়ানো যায়।
৯. লং টাইম বাইক বন্ধ রাখলে কিছু প্রস্তুতি নিন
বাইক ১৫ দিনের বেশি বন্ধ রাখলে:
-ব্যাটারি খুলে রাখুন
-ট্যাংকে তেল পুরে দিন (জং ধরবে না)
-ইঞ্জিন অয়েল পরীক্ষা করুন
১০. খারাপ শব্দ বা ভাইব্রেশন অবহেলা করবেন না
ইঞ্জিনে অস্বাভাবিক শব্দ বা কাঁপুনি দেখা দিলে অবহেলা না করে তৎক্ষণাৎ সার্ভিসিং করান।
একটা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ঠিকঠাক থাকলে আপনি শুধু খরচই বাঁচাবেন না, বরং নিরাপদ রাইডও পাবেন। নিয়মিত যত্ন, সচেতন চালনা আর কিছু অভ্যাস বদলেই ইঞ্জিনের আয়ু কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।