আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এ এক আশ্চর্য সমাপতন। রবিবার নেপালে আরও এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৬৮ জনের। পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের ঠিক আগেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। আর এই দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে অঞ্জু খাতিওয়াড়াকে, কেড়ে নিয়েছে তার স্বপ্ন।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের অভিশপ্ত এটিআর-৭২ বিমানের কো-পাইলট ছিলেন তিনি। ক্যাপ্টেন হতে চেয়েছিলেন তিনি। স্বপ্ন পূরণে বাকি ছিল আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড, বিমানটি বন্দরে নামলেই হত। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। আশ্চর্যজনক ঘটনা হল, ১৬ বছর আগে এক বিমান দুর্ঘটনাই কেড়ে নিয়েছিল তার স্বামীকে। তিনিও ছিলেন কো-পাইলট, আর কাজ করতেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সেই।
এদিন ৭২ জনকে নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি পোখরায় ভেঙে পড়েছে, সেই বিমানের পাইলট ছিলেন সিনিয়র ক্যাপ্টেন কামাল কেসি। আর কো-পাইলটের আসনে ছিলেন অঞ্জু। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করলেই ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হতে পারতেন অঞ্জু। সেই লক্ষ্যেই তিনি এদিন সকালে সিনিয়র পাইলট তথা তার প্রশিক্ষক কামাল কেসির সঙ্গে বিমান উঠেছিলেন।
উল্লেখ্য, ক্যাপ্টেন পদে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য কোনও পাইলটের কমপক্ষে ১০০ ঘন্টা ওড়ার অভিজ্ঞতার প্রয়োজন। সূত্রের খবর, কো-পাইলট হিসেবে নেপালের প্রায় সব বিমানবন্দরে সফলভাবে অবতরণ করার অভিজ্ঞতা ছিল অঞ্জুর। বাকি ছিল শুধু এই নয়া বিমানবন্দরটি। সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে গেল। চিফ পাইলটের লাইসেন্স পাওয়া থেকে মাত্র ১০ সেকেন্ড দূরে, ভেঙে পড়ে তার স্বপ্ন। অথচ, ক্যাপ্টেন কামাল কেসির ৩৫ বছরের উড়ানের অভিজ্ঞতা ছিল। অনেক পাইলটকে তিনি অতীতে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। তারা প্রত্যেকেই আজ সফল পাইলট।
শুনতে আশ্চর্য লাগলেও, ২০০৬ সালের ২১ জুন এক বিমান দুর্ঘটনাতেই তাঁর স্বামীকে হারিয়েছিলেন অঞ্জু। তিনিও ছিলেন এক কো-পাইলট। কাকতালীয়ভাবে, তিনিও ছিলেন ইয়েতি এয়ারলাইন্সেই। একটি ৯এল এইকিউ বিমানে নেপালগঞ্জ থেকে সুরখেত হয়ে জুমলা যাওয়ার পথে ভেঙে পড়েছিল বিমানটি। প্রাণ গিয়েছিল ৬ যাত্রী এবং ৪ ক্রু সদস্যের। নিহতদের মধ্যে একজন ছিলেন অঞ্জুর স্বামী। ১৬ বছর পর সেই ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানই মিলিয়ে দিল তাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।